মাধ্যমিক লাস্ট মিনিট সাজেশন বাংলা পথের দাবী SAQ / LAQ

MADHYAMIK-LAST-MINUTE-SUGGESTION2022 -20220-PATHER -DABI- SAQ -LAQ
প্রিয় ছাত্র ছাত্রীরা তোমরা যারা ২০২২ সালে মাধ্যমিক দেবে , PRIKSHAPASTUTI .ORG এক্সপার্ট টিমের পক্ষ থেকে প্রথমেই তোমাদের অভিননন্দন  জানাই। এই করোনা পরিস্থিতিতে যাতে তোমরা বাড়িতে বসে সুন্দর ভাবে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারো তার জন্যই আমাদের এই প্রচেষ্টা। আশা করছি তোমরা আমাদের দেওয়া সাজেশন গুলি ভালো করে পড়লে অবশ্যই মাধ্যমিকে চুড়ান্ত সফলতা লাভ করতে পারবে। আজকে তোমাদের সামনে মাধ্যমিক  বাংলা উপন্যাস ‘পথের দাবী  ‘ থেকে মাধ্যমিক ২০২২ পরীক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্ব পূর্ন SAQ এবং LAQ প্রশ্ন-উত্তর গুলি তুলে ধরা হল –

 

 

দশম শ্রেণী বাংলা – পথের দাবী :  [SAQ অতি সংক্ষিপ্ত ] : [প্রতিটি প্রশ্নের মান-3]

 

 

কমবেশি ৬০ টি শব্দের মধ্যে উত্তর লেখাে   (প্রশ্নমান – ৩)

.১।  “জগদীশবাবু ইতিমধ্যেই তাদের টিনের তােরঙ্গা, ছােটো বাক্স, পুটুলি তুলিয়া তদারক শুরু করে দিয়েছেন।”—তাহাদের বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে। তাদের জিনিসপত্র তদারকের কারণ কী?
 
উত্তর : তেলের খনির মিস্ত্রি : কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পথের দাবি উপন্যাসের আলােচ্য অংশে তাদের বলতে জন ছয়েক বাঙালির কথা বলা হয়েছে। এরা সবাই উত্তর ব্রষ্মে বর্মা অয়েল কোম্পানির তেলের খনির কারখানায় মিস্ত্রির কাজ করছিল। কিন্তু সেখানকার জল হাওয়া সহ্য না হওয়ায় সেখানে না থেকে চাকরির উদ্দেশ্যে রেঙ্গনে চলে এসেছিল।
তদারকের কারণ : এই বাঙালি শ্রমিকদের জিনিসপত্র খানা তল্লাসি করার কারণ ছিল, পুলিশের কাছে খবর ছিল যে বাঙালি রাজ বিদ্রোহী সব্যসাচী মল্লিক বর্মা এসেছেন। সেই সন্দেহ থেকে পুলিশের এই অভিমান।
 
 

২। “বুনাে হাস ধরাই এদের কাজ,” — বক্তা কে? একথা বলার কারণ কী?

উত্তর – শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ রচনাংশে উক্তিটির বক্তা হলেন রামদাস তলয়ারকর।

জগদীশবাবু, নিমাইবাবুর মতাে ব্রিটিশ সরকারের বেতনভুক্ত পুলিশদের সম্বন্ধে একথা বলা হয়েছে। কারণ তারা দেশের খেয়ে-পরে দেশের মানুষকেই ধরার জন্য তৎপর।

অপূর্বর বাড়িতে চুরি হলেও এরা পরাধীন নাগরিকের নিরাপত্তার ধার ধারে না, তার বদলে স্বাধীনতা সংগ্রামী বিপ্লবী বা পলিটিক্যাল সাসপেক্টদের ধরতেই ব্যস্ত বলে বক্তা এদের সম্পর্কে কথাগুলি বলেছেন।

৩।“এমন তাে নিত্য-নিয়তই ঘটছে,” – বক্তা কে? কোন ধরণের ঘটনার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর – শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ রচনাংশে অপূর্ব রামদাস তলয়ারকরকে এ কথা বলেছে।

দেশাত্মবােধে উদ্বুদ্ধ অপূর্ব দেখেছে যে অন্য দেশের মতাে ভারতেও যারা জন্মভূমিকে স্বাধীন করার চেষ্টা করে চলেছে – তাদের কি নিদারুন জীবন যন্ত্রণার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ফিরিঙ্গিরা দেশীয়দের নানাভাবে অপমানিত ও লাতি করছে, স্টেশন মাস্টার যেভাবে অপূর্বকে কুকুরের মতাে তাড়িয়ে দিয়েছে – সে অপমান অপূর্বর ভেতরে অগ্নি সংযােগ করে দিয়েছে। এটা শুধু একটিমাত্র ঘটনাই নয় – এমন তাে নিত্য-নিয়তই ঘটছে বলে অপূর্ব এখানে ব্যক্ত করেছে।

৪। “এতবড় সব্যসাচী ধরা পড়িল না, কোনাে দুর্ঘটনা ঘটিল না।”- কারএ কথা মনে হয়েছে? কেন?

উত্তর – শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ শীর্ষক রচনায় দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ অপূর্বর এ কথা মনে হয়েছে।

যারা পরাধীন দেশকে স্বাধীন করা ব্রতে জীবনকে উৎসর্গ করেছে – সব্যসাচী মল্লিক তাদের মধ্যে একজন। তাকে ব্রিটিশ পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে। তার বার্মামূলকে আগমনের গােপন খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সবকিছু তল্লাসি শুরু করে। সন্দেহজনকভাবে গিরীশ মহাপাত্রকে পাকড়াও করলেও প্রমাণাভাবে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অপূর্ব মনে মনে চাইছিল সব্যসাচী ধরা না পড়ুক। সব্যসাচীর ধরা পড়া তার কাছে দুর্ঘটনার মতাে। সব্যসাচীর ধরা না পড়ার ঘটনাই তার মনে হয়েছে কোনাে দুর্ঘটনা ঘটিল না।

৫। বুড়াে মানুষের কথাটা শুনাে।’— বুড়াে মানুষ কে ? তাঁর কোন্ কথাশুনতে বলা হয়েছে ? অথবা, “আজ্ঞে না মাইরি খাইনে।’— কার উক্তি ? কী কারণে এমন উক্তি? অথবা, তবে এ বস্তুটি পকেটে কেন ? – কোন বস্তুর কথা বলা হয়েছে ? এই বক্তব্যের যথার্থতা বিচার করাে। অথবা, দয়ার সাগর! পরকে সেজে দি, নিজে খাইনে। মিথ্যেবাদী । কোথাকার’ – কার উদ্দেশ্যে এই উক্তি ? এমন উক্তির কারণ কী ? অথবা, এই মাত্র! নইলে নিজে খাইনে। – কী খাওয়ার কথা বলা হয়েছে ? বক্তার এমন উক্তির কারণ কী ? 

উত্তর – প্রখ্যাত কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বিরােচিত ‘পথের দাবী’ রচনাংশে।

বুড়াে মানুষটি হল নিমাই বাবু। এখানে গাজার কলকের কথা বলা হয়েছে। পলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিকের ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্রকে পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে তল্লাশি করার সময় পকেট থেকে গাঁজা খাওয়ার কলকে পায় দারেআন নিমাই বাবু গিরীশ মহাপাত্রকে গাঁজা খাওয়ার কথা বললে গিরীশ মহাপাত্র অস্বীকার করেন। বরং সে জানায় কারাে উপকারের জন্য গিরীশ মহাপাত্র এ সব পকেটে রেখেছে। একথা শুনে জগদীশ বাবু চটে উঠে বলেন— ‘দয়ার সাগর! পরকে সঙ্গে দি, নিজে খাইনে। মিথ্যেবাদী কোথাকার!’

 
৬। ‘বুনাে হাঁস ধরা এদের কাজ’–এ কথা কে বলেছিলেন? এ কথা বলার কারণ কী?
 
উত্তর : বক্তা : শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পথের দাবি নামাঙ্কিত রচনায় বুনাে হাঁসের কথা বলেছিল রামদাস।
উক্তির কারণ : কথা প্রসঙ্গে অপূর্ব জানিয়েছিল গিরীশ মহাপাত্রকে হাতে পেয়েও সামান্যতম বুদ্ধিমত্তার পরিচয় না থাকায়, তাকে ছেড়ে দেয়। এই পুলিশ কাজকর্ম সম্পর্কে এতটাই অমনােযােগী যে অপূর্বর চুরি হওয়া কোনাে জিনিসের কুল কিনারা করতে পারেনি। সেই কথা পুলিশ শুনে রামদাস রীতিমতাে কৌতুকের সাথে আলােচ্য এই উক্তি করেছিল।

৭। তুমি তাে ইউরােপিয়ান নও।’—বক্তা কে? বক্তার এমন উক্তির কারণকী ? অথবা, ও নিয়ম রেলওয়ে কর্মচারীর জন্য বক্তার এমন উক্তির কারণ বিশ্লেষণ করাে। অথবা, সেই রাত্রের মধ্যে বার তিনেক তাহার ঘুম ভাঙাইয়া পুলিশের লােক তাহার নাম ও ধাম ও ঠিকানা লিখিয়া লইয়াছে।’— কার। সম্পর্কে বলা হয়েছে এবং সেই ঘটনার বিবরণ দাও। 

উত্তর –  কথা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্রের লেখা ‘পথের দাবী’ রচনাংশে।

অপূর্ব ভামাে যাওয়ার সময় প্রথম শ্রেণির টিকিট থাকা সত্ত্বেও অপূর্বকে যে বিরক্তিকর তল্লাসীর চাপে পড়তে হয়েছিল তার কথা বলা হয়েছে।

অপূর্ব ভামাে যাওয়ার সময় তাঁর কাছে প্রথম শ্রেণির টিকিট থাকা সত্ত্বেও রেলওয়ে কর্মচারী ও পুলিশ রাতে তিনবার ঘুম থেকে ডেকে তুলে তল্লাসী করেছিল। এর প্রতিবাদ করতে গেলে বর্মা সাব ইনস্পেক্টর কটু কণ্ঠে জবাব দেয় – “তুমি তাে ইউরেপিয়ান নও। …… আমি পুলিশ, ইচ্ছা করলে আমি তােমাকে টানিয়া নীচে নামাইতে পারি।

৮।“পলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিককে নিমাইবাবুর সম্মুখে হাজির করা হইল।” – এরপর পুলিশস্টেশনে কী পরিস্থিতি তৈরী হল, তা পাঠ্যাংশ অনুসরণে আলােচনা করাে। অথবা, “তুমি এখন যেতে পারাে মহাপাত্র” – কোন ঘটনার পর তাকে যেতে বলা হল নিজের ভাষায় লিখ।

উত্তর – কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ উপন্যাসের অংশবিশেষ ‘পথের দাবী” শীর্ষক পাঠ্যাংশে দেখা যায় পলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিককে অনুসন্ধান করতে গিয়ে সন্দেহজনকভাবে গিরীশ মহাপাত্রকে থানায় নিয়ে আসা হয়।

নাম ধাম জিজ্ঞাসা করে তার তল্লাসি নেওয়া হয়। পকেট থেকে একটি গাজার কলকে উদ্ধার হওয়ায় সে জানায় নিজে খায় না – সে বলেছে, আজ্ঞে মাইরি খাইনে। তবে ইয়ার বন্ধু কেউ তৈরী করে দিতে বললে দিই। এরপর নিমাইবাবু তাকে আর গাঁজা না খাবার অনুরােধ করে বলেন, “আরে খেয়াে না।। বুড়াে মানুষের কথাটা শুনাে।”

৯।  গিরীশ মহাপাত্রের পােশাক পরিচ্ছদের বর্ণনা দাও।

অথবা “তাহার পােশাক-পরিচ্ছদের বাহার মনে পড়িয়া হঠাৎ হাসির ছটায় দম আটকাইবার উপক্রম হইল।” – উদ্দিষ্ট ব্যক্তির পােশাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা দাও।

উত্তর – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘পথের দাবী’ রচনাংশে পুলিশ স্টেশনে সন্দেহজনকভাবে গিরীশ মহাপাত্রকে আটক করা হয়।

গিরীশ মহাপাত্রের মাথার সামনের দিকের চুল বড় কিন্তু ঘাড়ের ও পিছনের দিকে ছােট করে ছাঁটা। মাথার মাঝখানে চেরা সিঁথি, লেবুর গন্ধযুক্ত তেলে চুল ভেজানাে। কঠিন রুগ্ন চেহারা, গায়ে জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের পাঞ্জাবী। পরনে বিলাতি মিলের মকমল পাড়ের সূক্ষ্ম শাড়ি, বুক পকেটে বাথ আঁকা রুমাল। পায়ে মােজা এবং পাম্প সু পরা। হাতে লােহার নাল পরানো। হরিণের সিংহের হাতল দেওয়া বেতের ছড়ি। জাহাজের ধকলে সবকিছুতেই নােংরার পরিচয় রয়েছে।

 
 

দশম শ্রেণী বাংলা – পথের দাবী : রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর : [প্রতিটি প্রশ্নের মান-5]

(১) ‘পথের দাবি’ রচনায় অপূর্ব চরিত্রটি সংক্ষেপে আলােচনা কর।

 
উত্তর : ভূমিকা : কথা শিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত কালজয়ী উপন্যাস পথের দাবি। সেই উপন্যাসের অন্যতম প্রধান চরিত্র অপূর্ব। তৎকালীন ভারতবর্ষের আর পাঁচজন যুবকের মতাে স্পষ্টভাষী ও দেশপ্রেমিক তরুণ। তার চরিত্রের কতগুলি বৈশিষ্ট্য সহজেই চোখে পড়ে।
 
বিপ্লবী সম্বন্ধে শ্রদধাশীল : অপূর্ব জানত গিরীশ মহাপাত্র আসলে ছদ্মবেশী সব্যসাচী মল্লিক। তিনি সত্যিকারের সাহসী, বিপ্লবী মানুষ, দেশের প্রতি, জন্মভূমির প্রতি অগাধ ভালােবাসা তাই তার প্রতি অপূর্বর হৃদয়ের ভালােবাসা ছিল।
 
আবেগ প্রবণ : অপূর্ব একজন ব্রাত্মণ মানুষ, সে রেঙ্গনে চাকরি করত। সে মনে মনে চেয়েছিল সব্যসাচী যেন নির্বিঘ্নে পুলিশ স্টেশন থেকে ফিরে যেতে পারে। পরবর্তীকালে তার সম্পর্কে অপূর্বের বিপুল শ্রদ্ধা ও আবেগ প্রকাশ পেয়েছে।
 
দেশপ্রেমিক : অপূর্ব দেশপ্রেমিক ছিলেন তাই গিরীশ মহাপাত্র রুপী সব্যসাচীকে মনে প্রাণে শ্রদ্ধা করেছিল। অপূর্ব অবাক হয়েছিল। এই কারণে যে তিনি দেশের মঙ্গলের জন্য নিজের শখ, আহ্লাদ ত্যাগ করেছেন।
 
লাঞ্ছনার স্বীকার : অপূর্বকে অনেক অপমান সহ্য করতে হয়েছিল। ইংরেজ যুবকরা তাকে স্টেশন থেকে লাথি মেরে তাড়িয়ে দিয়েছিল। সে অপমান অপূর্ব কোনওদিন ভুলতে পারেনি।
 
অমায়িক ব্যবহার : অপূর্বর ব্যবহার সবাইকে মুগ্ধ করে। রামদাসের বাড়িতে সে আশ্রয় গ্রহণ করে এবং তার পত্নীর অনুরােধে খাবার গ্রহণ করে। অপূর্বর ব্যবহারের মধ্যে একনিষ্ট ভাব দেখতে পাওয়া যায়।
 
মূল্যায়ন : সবদিক দিয়ে বিচার করে বলা যায় অপূর্ব আলােচ্য কাহিনি অংশে মুখ্য চরিত্র। তার doing and suffering উপন্যাসের স্বার্থকতাকে ইঙ্গিতবাহী করে তুলেছে।
 

(২)পথের দাবি রচনায় গিরীশ মহাপাত্রের চরিত্রটি সংক্ষেপে লেখ।

উত্তর : ভূমিকা : পথের দাবি মূলত রাজনৈতিক উপন্যাস। এই উপন্যাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিভিন্ন চরিত্র। পথের দাবির মূল চরিত্র সব্যসাচী মল্লিক। আমাদের পাঠ্য বইতে তিনি হলেন ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্র।
 
সর্বত্যাগী বিপ্লবী : গিরীশ মহাপাত্র ছদ্মবেশে সব্যসাচী মল্লিক। পুলিশ স্টেশন থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি দেশের মানুষের মঙ্গল চেয়েছিলেন তাই বৃহৎ কর্তব্যের অঙ্গীকারে তাকে ছদ্মবেশ ধারণ করতে হয়েছিল।
 
পলিটিক্যাল আসামি : সব্যসাচী যথার্থই ছিলেন দেশপ্রেমিক। তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে পলিটিক্যাল সাসপেক্ট রূপে। নিমাইবাবুর চোখে তিনি রাজ বিদ্রোহী। সব্যসাচীর চোখে অবশ্য তিনি মুক্তিপথের অগ্রদূত। আমাদের চোখে তিনি দেশের কাণ্ডারি।
 
বহু গুণান্বিত চরিত্র : সব্যসাচীর গুণের অন্ত ছিল না। তিনি একজন ব্রাত্মণ ঘরের সন্তান। লেখাপড়া জানেন। একাধিক ভাষায় কথা বলতে পারেন। স্বাস্থ্য সম্পর্কে তার জ্ঞান আছে।
 
ধর্মভীরু মানুষ : অপূর্বকে কথা প্রসঙ্গে সব্যসাচী জানিয়েছিলেন সে ধর্মভীরু মানুষ। সে কানাে নেশা করে না আসলে ছদ্মবেশ ধারণের জন্য তাকে এমন আচরণ করতে হয়েছিল।
 
বুদিধদীপ্ত চরিত্র : গিরীশ মহাপাত্র অর্থাৎ সব্যসাচী মল্লিক নিঃসন্দেহেই বুদ্ধিদীপ্ত চরিত্র। তিনি এমনভাবে নিজকে উপস্থাপন করেছিলেন যাতে তার সম্পর্কে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ না থাকে।
 
মূল্যায়ন : এভাবে গিরীশ মহাপাত্রের অন্তরালে থাকা সব্যসাচী মল্লিক চরিত্রটি হয়ে উঠেছে জীবন্ত চরিত্র।

 

(৩)“বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে, কিন্তু শখ ষোলো আনাই বজায় আছে”- বাবুটি কে? তার সাজসজ্জার বর্ণনা দাও। কে কার উদ্দেশ্যে মন্তব্যটি করেছেন। এমন মন্ত্যব্যের কারণ কি?

উত্তর : কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট‍্যোপাধ্যায় রচিত পথের দাবী পাঠ্যাংশে বাবুটি হল গিরীশ মহাপাত্র।

বাবুটির মাথার সামনের দিকে বড়ো বড়ো চুল থাকলেও ঘাড় ও কানের দিকে ছোটো করে ছাঁটা চুল।মাথায় চেরা সিঁথি, তেলনিষিক্ত চুল লেবুর গন্ধে ম ম করছে। গায়ে উত্তরীয় ব্যতীত একটি জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি,যার বুক পকেটে বাঘ আঁকা রুমাল উঁকি দিচ্ছে। বাবুটির পরনে বিলেতি মিলের কালো মখমল পাড়ের সূক্ষ্ম শাড়ি, হাঁটুর উপরে লাল ফিতে দিয়ে বাঁধা সবুজ রঙের ফুল মোজা। শুকতলায় লোহার নাল বাঁধানো বার্নিশ করা পাম্প শু এবং হাতে হরিণের শিঙের হাতল দেওয়া বেতের ছড়ি।

বর্মা পুলিশ স্টেশনের বড়বাবু নিমাই কথাটি বলেছেন জনৈক বাবু গিরীশ মহাপত্রের উদ্দেশ্যে।

 

গিরীশ মহাপাত্রের অদ্ভুত রঙচঙে বেশভূষার কারণে নিমাইবাবু এমন মন্ত্যব্য করেছেন।

(৪)রোগা মুখের অদ্ভুত চোখের দৃষ্টির বর্ণনা দাও। এখানে কার চোখের কথা বলা হয়েছে? গিরীশ মহাপত্রের পকেট থেকে কি পাওয়া যায় ?

উত্তর  : রোগ মুখের অদ্ভুত দুটি চোখের দৃষ্টির মধ্যে দিয়ে জনৈক বাবুর রহস্যময় চরিত্র ফুটে উঠেছে। দৈহিক দিক থেকে বাবুকে দুর্বল ক্ষীণ প্রাণশক্তির মনে হলেও ওই অদ্ভুত তেজোময় চোখের দীপ্তি দেখে বোঝা যাচ্ছিল যে বাবুটির অন্তরে লুক্কায়িত আছে এমন এক গভীরতা যেখানে খেলা করা চলে না, যেখানে দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হয়। তার প্রানের অন্তঃস্থলে লুকিয়ে রয়েছে তার জিয়নকাঠি, মৃত্যুও যেখানে প্রবেশ করতে সাহস পায় না।

পাঠ্যাংশটিতে বর্মা পুলিশ স্টেশনে নিয়ে আসা সন্দেহজনক ব্যক্তি জনৈক গিরীশ মহাপাত্রের চোখের কথা বলা হয়েছে।

গিরীশ মহাপাত্রের পকেট থেকে একটা লোহার কম্পাস, মাপ করার কাঠের একটা ফুটরুল, কয়েকটা বিড়ি, একটা দেশলাই ও একটা গাঁজার কল্কে পাওয়া যায়।

 

(৫)“পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিককে নিমাইবাবুর সম্মুখে হাজির করা হইল”- পাঠ্যাংশ অনুসারে সব্যসাচী মল্লিক সম্পর্কে কি জানা যায়?তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েচিল?

উত্তর : পথের দাবী পাঠ্যাংশ অনুসারে জানা যায় যে বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক বর্মায় এসেছেন। সব্যসাচী বিজ্ঞান ও চিকিৎসাশাস্ত্রে অসাধারণ পারদর্শী ও একই সঙ্গে বিলাতের ডাক্তার উপাধিধারী। সে বৃটিশ রাজবিদ্রোহী।

পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিককে জিজ্ঞাসাবাদের সময় থানায় একটা তামাশার সৃষ্টি হয়েছিল। তাকে থানার বড়বাবুর সামনে নিয়ে আসা হলে জানা যায় যে সে বর্মার অয়েল কোম্পানীর তেলের খনিতে কাজ করত। লোকটির শরীর স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়লেও পোশাক পরিচ্ছদের বাহার লক্ষ্যণীয়। তাকে তদারক করলে দেখা যায় যে তার কাছে লোহার কম্পাস,কাঠের ফুটরুল,বিড়ি,দেশলাই ও গাঁজার কল্কে রয়েছে। গিরীশ মহাপাত্রের কথাবার্তা শুনে , তার সাজপোশাক দেখে সকলেই নিশ্চিত হয় যে গিরীশ মহাপাত্র কখনোই সব্যসাচী মল্লিক হতে পারে না। তাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে, খানিকক্ষণ পুলিশ স্টেশনে তার সঙ্গে তামাশা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।

(৬) “যাঁকে খুঁজছেন তাঁর কালচরের কথাটা একবার ভেবে দেখুন”-উক্তিটি কে কার সম্পর্কে করেছে? এখানে কাকে খোঁজার কথা বলা হয়েছে?কোন প্রসঙ্গে এই উক্তিটি করেছেন? কালচর বলতে কি বোঝায়?

উত্তর : পথের দাবী গদ্যাংশে এই উক্তিটি অপূর্ব করেছে গিরীশ মহাপাত্র কে লক্ষ্য করে।

 

এখানে বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিককে খোঁজার কথা বলা হয়েছে।

রেঙ্গুনের পুলিশেরা যাকে হন্যে হয়ে খুঁজছিলেন তিনি একজন বিপ্লবী। সব্যসাচী মল্লিক হলেন সেই বিপ্লবী যিনি কীনা বৃটিশকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাচ্ছিলেন। তার চেহারা কখনোই গিরীশ মহাপাত্রের মত ক্ষীণদেহী ও রোগগ্রস্থ হতে পারে না। উপরন্তু গিরীশ যে ধরণের রঙচঙে পোশাক পরিধান করেছিল তা যেকোনো বিলাতফেরত ডাক্তারের পোশাক পরিধানের পরিপন্থী। সর্বোপরি গিরীশ মহাপাত্রের চালচলন, আচার ব্যবহার সবকিছুই অতি সাধারণ নিম্নবিত্ত মানুষকে তুলে ধরছিল পদে পদে তাই এই প্রসঙ্গে অপূর্ব উক্ত উক্তিটি করেছিল।

কালচর বলতে এখানে রুচিবোধের কথা বলা হয়েছে। পলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে গিরীশ মহাপাত্রকে ধরে আনা হলেও বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক ও গিরীশ মহাপাত্রের চালচলন,আচার ব্যবহার,রুচিবোধের বিস্তর ফারাক। এখানে কালচর বলতে তাই বোঝানো হয়েছে।

 

 

2 thoughts on “মাধ্যমিক লাস্ট মিনিট সাজেশন বাংলা পথের দাবী SAQ / LAQ”

  1. Pingback: MADHYAMIK HISTORY LAST MINUTE SUGGESTION 4TH CHAPTER 2 MARKS SAQ PART 1 | Pariksha Prastuti

  2. Pingback: MADHUYAMIK LAST MINUTE SUGGESTION 2022 ENGLISH NOTICE WRITING | Pariksha Prastuti

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *