বাঙালির বিজ্ঞান চর্চা MCQ এবং বড় প্রশ্ন উত্তর 2023

বাঙালির বিজ্ঞান চর্চা বড় প্রশ্ন উত্তর: প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা উচ্চ-মাধ্যমিক 2023পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য parikshaprastuti.org উন্নত প্লাটফর্ম ! এখানে প্রতিদিন বিভিন্ন বিষয়ে অনলাইন মকটেস্ট এর অয়োজন করা হয়। বাঙালির বিজ্ঞানচচার ইতিহাস বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি গুরুত্ব পূর্ণ অধ্যায়। এই অধ্যায় থেকে 2023 সালের উছামাধ্যমিক পরীক্ষায় যে সমস্ত ৫ নাম্বারের বড় প্রশ্ন LAQ হিসেবে আস্তে পারে তার সাজেশন সহ প্রশ্ন উত্তর এবং যে সমস্ত MCQ আস্তে পারে তার একটি MOCKTEST নীচে দেওয়া হল —

HS Bangla Mock Test বাঙালির বিজ্ঞানচর্চা

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস(বাঙালির খেলাধুলার ইতিহাস)

নিচের দেওয়া “START” বোতামে ক্লিক করো।

Leaderboard: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস(বাঙালির খেলাধুলার ইতিহাস)

maximum of 20 points
Pos. Name Entered on Points Result
Table is loading
No data available

বাঙালির বিজ্ঞান চর্চা বড় প্রশ্ন উত্তর

Table of Contents

1. বাঙালির বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে মেঘনাদ সাহার অবদান লেখো । 

উত্তরঃ : সূচনা :-বাঙালি তথা ভারতবর্ষের বিজ্ঞানের জগতে অন্যতম স্মরণীয় নাম মেঘনাদ সাহা । জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী এই মানুষটি পদার্থবিজ্ঞানে থার্মাল আয়নাইজেশন তত্ত্বের প্রতিষ্ঠা করেন । নক্ষত্রের রাসায়নিক ও ভৌত ধর্ম বোঝার জন্য সাহার তত্ত্বের সাহায্য নেওয়া হয় । তিনি রিলেটিভিটি , প্রেশার অফ লাইট , অ্যাসট্রোফিজিক্স নিয়ে গবেষণা করেছেন । 

মেঘনাদ সাহা সৌরকিরণের ওজন ও চাপ মাপার যন্ত্র আবিষ্কার করেন । তিনি এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা বিভাগ চালু করার পাশাপাশি কলকাতায় ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্স চালু করেন । সায়েন্স অ্যান্ড কালচার নামে তিনি একটি জার্নালও চালু করেছিলেন । এসবের পাশাপাশি তিনি ইন্ডিয়ান ফিজিক্যাল সোসাইটি , ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স , ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অব সায়েন্স চালু করার উদ্যোগ নেন । হ্যালির ধূমকেতু নিয়ে মেঘনাদ সাহার কাজ বিশেষভাবে স্বীকৃত । 

মেঘনাদ সাহার দিগন্তকারী আবিষ্কার তাপ আয়নকরণতত্ত্ব যেটি ম্যাগাজিনে ‘ On lonization in the Solar Chromosphere ‘ নামে প্রকাশিত হয় । এই তত্ত্ব দিয়েই প্রথম তারকার বর্ণালি ব্যাখ্যা সম্ভব হয় । ভারতীয় হিসেবে তিনিই একমাত্র বিজ্ঞানী যিনি সেইসময় বর্ষপঞ্জি সংস্কার কমিটির সদস্য ছিলেন । তাঁর আজীবনের গবেষণা মূল্যায়ন করে লন্ডনের রয়েল সোসাইটি তাঁকে ফেলোশিপ প্রদান করে । তাঁর হাতে গড়ে ওঠে ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্স ‘ এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স ’ ৷ বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে তাঁর রচিত বইগুলি হলো ‘ The Principle of Relativity ’ , ‘ Treatiseon Heat ‘ ‘ Treatiseon Modern Physics ‘ , ‘ Junior Textbook of Heat with Meteorology ‘ .

উপসংহার: অসামান্য প্রতিভাধর এই বিজ্ঞানী চারবার নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হলেও এই পুরস্কার পাননি । বাঙালির কাছে এটি দুঃখের বিষয় ঠিকই কিন্তু বিজ্ঞানের ইতিহাসে তাঁর নাম আজও শ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারণ করা হয় । বিশ্ববিজ্ঞানী আইনস্টাইন বলেছেন— “ সারা বিশ্বের বিজ্ঞানী মহলে মেঘনাদ সাহা নিঃসন্দেহে জয় করে নিয়েছেন একটা সম্মানজনক স্থান । ”

2. বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান আলোচনা করো । 
অথবা ,
বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু বিজ্ঞানের চর্চা ও গবেষণার জন্য কলকাতায় যে সংস্থা তৈরি করেছিলেন তা কী নামে পরিচিত ? জগদীশচন্দ্রের বৈজ্ঞানিক গবেষণার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও । 

উত্তর:- সূচনা :-বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসুর নাম কেবল স্বদেশে নয় , আন্তর্জাতিক গুণীসমাজেও বিশেষভাবে সম্মানিত । পদার্থবিজ্ঞানের একনিষ্ঠ গবেষক জগদীশচন্দ্র তাঁর গবেষণার প্রথম পর্যায়ে কোনোরকম তারের যোগসূত্র ছাড়াই শব্দসংকেত প্রেরণের উপায় অনুসন্ধানে রত ছিলেন এবং বহু পরিশ্রমে ও সাধনায় শেষাবধি তিনি সেই কৌশল আয়ত্ত করেন । বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলা হয় বিদ্যুৎ – চুম্বকীয় তরঙ্গ , যার সাহায্যে জগদীশচন্দ্র বিনা তারেই শব্দসংকেত পাঠিয়েছিলেন । লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে এজন্য ‘ ডক্টর অব সায়েন্স ‘ উপাধি দিয়ে সম্মানিত করে । 

জগদীশচন্দ্র বসুর গবেষণায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল অন্য সমস্ত জীবের মতো উদ্ভিদেরও প্রাণ আছে , সমস্ত রকম অনুভূতি আছে তা বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে প্রমাণ করা । গাছকে কষ্ট দিলে গাছও যে কষ্ট পায় , তা জগদীশচন্দ্র হাতেকলমে প্রমাণ ক’রে দেখিয়েছেন । উদ্ভিদ গবেষণার ক্ষেত্রে এই অত্যাশ্চর্য সত্যকে প্রমাণ ও প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তিনি বিরাট স্থান অর্জন করেছেন ।

উপসংহার: ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানচর্চা ও গবেষণার সহায়ক ও উপযোগী কেন্দ্র হিসেবে তিনি ‘ বসু বিজ্ঞান মন্দির ‘ নামে একটি সংস্থা গড়ে তোলেন । বাংলার বিজ্ঞানচর্চার সাফল্য সাধনে জগদীশচন্দ্র বসুর অবদানের পরিমাপ করা একপ্রকার দুঃসাধ্য ব্যাপার ।

3. বাংলা চিকিৎসাবিজ্ঞানে ড: বিধানচন্দ্র রায়ের অবদান অলোচনা করো । 

উত্তর;- সূচনাঃ বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ধারায় একজন কিংবদন্তি হিসেবে চিহ্নিত ড . বিধানচন্দ্র রায় । শুধুমাত্র চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব বা কীর্তি চিকিৎসকরূপেই নয় , তিনি বাংলার বুকে বিজ্ঞানচর্চার গৌরবময় সম্ভবনাকে গড়ে তোলার জন্য যে উদ্যোগী ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন তার মূল্য অপরিসীম। 

 ১৯৩৫ সালে বিধানচন্দ্র রয়্যাল সোসাইটি অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড হাইজেন ‘ এবং ১৯৪০ সালে আমেরিকান সোসাইটি অফ চেস্ট ফিজিসিয়ানের ফেলো ‘ নির্বাচিত হন । এর মধ্যেই স্যার আশুতোষ ও দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের স্নেহধন্য বিধানচন্দ্র কালক্রমে পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত হন । কিন্তু এই গুরুভার পালন করার পাশাপাশি চিকিৎসক হিসেবে নিজের ভূমিকাকে কখনোই উপেক্ষা করেননি ।

উপসংহার:  বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের স্থান যাতে দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করে সেজন্য তারই প্রস্তাব অনুসারে IIT খড়গপুর গড়ে উঠে । দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও তার উদ্যোগ বিশেষ উল্লেখযোগ্য । কিংবদন্তী এই চিকিৎসক , শিক্ষক ও দেশসেবক ১৯৬১ সালে ‘ ভারতরত্ন ‘ উপাধিতে ভূষিত হন । ১৯৬২ সালে ১ লা জুলাই নিজের জন্মদিনেই প্রয়াত হন বিধানচন্দ্র । এই দিনটিকে এখনও তাই যথোচিত মর্যাদার সঙ্গে ‘ চিকিৎসক দিবস ‘ হিসেবে পালন করা হয়ে থাকেতেই হয় । 

বাঙালির বিজ্ঞান চর্চা বড় প্রশ্ন উত্তর LAQ

4. ঠাকুর পরিবারের বিজ্ঞানচর্চার ইতিবৃত্ত বর্ণনা করো । 
অথবা ,
বাঙালির বিজ্ঞানভাবনা ও বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে জোড়াসাকো ঠাকুর বাড়ির অবদান আলোচনা করো । 

উত্তর:-সূচনাঃ ঊনবিংশ শতাব্দীতে জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবার এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা । এই পরিবারের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব রবীন্দ্রনাথ ছাড়াও আরো অনেকে বিজ্ঞানচর্চায় মনোনিবেশ করেন । ঠাকুর পরিবার থেকে প্রকাশিত একাধিক পত্রিকা ভারতী , সাধনা , বালক ইতাদিতে বিজ্ঞানবিষয়ক বহু রচনা প্রকাশিত হতো ।

শবব্যবচ্ছেদের মাধ্যমে চিকিৎসাবিদ্যা প্রবর্তনের ক্ষেত্রে দ্বারকানাথ ঠাকুরের ভূমিকা স্মরণীয় । কলকাতায় ফিবার হাসপাতাল স্থাপনের নেপথ্যেও তাঁর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা আছে । দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের চর্চার অন্যতম প্রিয় বিষয় ছিল জ্যোতির্বিদ্যা । রবীন্দ্রনাথের জ্যেষ্ঠ দ্বিজেন্দ্রনাথ গণিতশাস্ত্রে তাঁর পাণ্ডিত্যের পরিচয় রাখেন । ইউক্লিডের জ্যামিতি নিয়ে তিনি মৌলিক চিন্তাভাবনা করেন । রবীন্দ্রনাথের আরেক জ্যেষ্ঠ জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ফ্রেনোলজি নিয়ে গবেষণা করেন । স্বর্ণকুমারীদেবী বিজ্ঞানবিষয়ক বহু নিবন্ধ রচনা করেন যেগুলি তাঁর ‘ পৃথিবী ‘ নামক গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে । স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ বিজ্ঞানের নানা বিষয়ে তাঁর মৌলিক ভাবনার পরিচয় দেন । তাঁর বিশ্বপরিচয় ‘ গ্রন্থটি তাঁর বিজ্ঞানচেতনার অনবদ্য নিদর্শন ।

উপসংহার: কলকাতার ঠাকুর পরিবারের প্রতেকটি সদস্য বাংলার বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে যে অসামান্য কৃতিত্ব রেখে গেছেন তা যুগে যুগে বাঙালি মনে রাখবে। তাদের অসামান্য অবদান তাদের বিভিন্ন কর্মকান্ডের দ্বারা সকলের প্রানস লাভ করে চলেছে।

5. বাংলার চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে ডঃ কাদম্বিনী ( বসু ) গঙ্গোপাধ্যায়ের পরিচয় দাও । 

উত্তর:-সূচনাঃ  বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসের প্রথম পর্যায়েই অসামান্য অবদানের জন্য যাঁদের নাম স্মরণীয় হয়ে আছে , তার মধ্যে কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম অন্যতম । ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে তিনি এবং চন্দ্রমুখী বসু নামে আর একজন কৃতি মহিলা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা স্নাতক হিসেবে সম্মানিত হন । স্নাতক হওয়ার পর কাদম্বিনি উদারমনস্ক স্ত্রী শিক্ষাব্রতী দ্বারকানাথের প্রেরণায় চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যয়নে মনোনিবেশ করেন ।

সে যুগের নারীশিক্ষার ক্ষেত্রে প্রবল প্রতিকূলতার মধ্যে কাদম্বিনীর এই সাধনা নিঃসন্দেহে বৈপ্লবিক । ডাক্তারি পরীক্ষায় শত বাধা সত্ত্বেও শেষপর্যন্ত কাদম্বিনী উর্ত্তীর্ণ হন এবং শেষাবধি ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে বিলেত গমন করে সেখান থেকে চিকিৎসাবিদ্যায় অসামান্য সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে বেশ কিছু দুর্লভ ডিগ্রি নিয়ে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন । তিনিই ভারতের প্রথম বিলেতি ডিগ্রিধারী মহিলা চিকিৎসক হিসেবে চিহ্নিত । তিনি বিহার ও ওড়িশায় গিয়ে সেখানকার মহিলা শ্রমিকের দুঃখদুর্দশার সমস্যা খতিয়ে দেখেন । এমনকী সুদূর নেপালেও তিনি মানব সেবাকর্মের মহান ব্রতে নিজের অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন ।

উপসংহার: সুতরাং বাংলার বিজ্ঞানচর্চার সূচনাপর্বে চিকিৎসাবিজ্ঞানের জয়যাত্রা রচনার ক্ষেত্রে কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের ভূমিকার কথা সকৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করতেই হয় ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *