মাধ্যমিক বাংলা জ্ঞানচক্ষু গল্পের বড়ো প্রশ্ন-উত্তর

জ্ঞানচক্ষু গল্পের বড়ো প্রশ্ন-উত্তর

পরীক্ষা প্রস্তুতি : জ্ঞানচক্ষু গল্পের বড়ো প্রশ্ন-উত্তর  প্রিয় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা তোমরা যারা এবছর ২০২৩ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষাদেবে ,তোমাদের সম্পূর্ণ সিলেবাসের উপর পরীক্ষা হবে। তাই মাধ্যমিক বাংলা ”জ্ঞানচক্ষু  ”  ছোট গল্প থেকে এবছর পরীক্ষায় আসতে  পারে এইরকম অতি গুরুত্বপূর্ণ কিছু  সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর (SAQ-৩ নম্বরের ) এবং ৫নম্বরের বড়ো প্রশ্ন – উত্তর গুলি এখানে আলোচনা করা হল।  তোমার এই প্রশ্ন উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য ভালো করে প্রস্তুতি করলে অবশ্যই  ”পথের দাবী ” গদ্যাংশ থেকে  সমস্ত ধরনের ৩ নম্বরের এবং ৫ নম্বরের প্রশ্ন-উত্তর তোমরা কমন পাবেই পাবে।জ্ঞানচক্ষু গল্পের বড়ো প্রশ্ন-উত্তর। জ্ঞানচক্ষু গল্পের বড়ো প্রশ্ন-উত্তর। জ্ঞানচক্ষু গল্পের বড়ো প্রশ্ন-উত্তর। জ্ঞানচক্ষু গল্পের বড়ো প্রশ্ন-উত্তর। জ্ঞানচক্ষু গল্পের বড়ো প্রশ্ন-উত্তর। জ্ঞানচক্ষু গল্পের বড়ো প্রশ্ন-উত্তর। জ্ঞানচক্ষু গল্পের বড়ো প্রশ্ন-উত্তর। জ্ঞানচক্ষু গল্পের বড়ো প্রশ্ন-উত্তর। জ্ঞানচক্ষু গল্পের বড়ো প্রশ্ন-উত্তর। জ্ঞানচক্ষু গল্পের বড়ো প্রশ্ন-উত্তর জ্ঞানচক্ষু গল্পের বড়ো প্রশ্ন-উত্তর

মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৩ 

জ্ঞানচক্ষু গল্প পরিচিতি 

শ্রেণী দশম শ্রেণী (মাধ্যমিক)
বিষয় মাধ্যমিক বাংলা
গল্প  জ্ঞানচক্ষু 
লেখক আশাপূর্ণা দেবী 

মাধ্যমিক বাংলা জ্ঞানচক্ষু গল্পের SAQ – ৩ নম্বরের 

(১) ‘এ বিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের।”—কোন বিষয়ে কেন তপনের সন্দেহ ছিল ?

উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু নামক গল্প থেকে অংশটি গৃহীত হয়েছে। তপন জানত না যে, লেখকরা তার বাবা, কাকা কিংবা মামার মতো একজন সাধারণ মানুষ।এ বিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের তার সন্দেহ দূর হয় ছোটো মেসোমশাইকে দেখে। তিনি একজন লেখক। কিন্তু অন্য সাধারণ মানুষের মতো দাড়ি কামান। সিগারেট খান, খাবার অতিরিক্ত হলে ফিরিয়ে দেন, স্নান করেন, ঘুমোন। এমনকি আর সকলের মতো খবরের কাগজের খবর নিয়ে গল্প কিংবা তর্ক করেন। অবসর সময়ে সিনেমা দেখেন কিংবা বেড়াতেও বের হন। এসব দেখে তপনের সন্দেহ দূর হয় ও সে বিশ্বাস করে লেখকরাও সাধারণ মানুষ।

(২)রত্নের মূল্য জহুরির কাছে। রত্ন এবং জহুরি বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু নামাঙ্কিত গল্পে রত্ন বলতে তপনের লেখা গল্পটিকে এবং জহুরি বলতে তপনের ছোটো মেসোকে বোঝানো হয়েছে।

(৩) তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনে সবচেয়ে দুঃখের দিন। কী কারণে তপনের এরূপ মনে হয়েছিল ?

উত্তরঃ তপনের প্রথম লেখা গল্পটি নতুন মেসোমশাই-এর সুপারিশে সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। ছাপা গল্পটি পাঠ করে তপন অবাক হয়ে যায়। কারণ তার নতুন মেসোমশাই গল্পটিকে ঠিকঠাক করতে গিয়ে সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়েছেন। ছাপানো গল্পের মধ্যে তপন নিজেকে খুঁজে পায় না। তার মনে হয় অন্য কারোর লেখা ছাপা হয়েছে – শ্রী তপন কুমার রায় নাম দিয়ে। নিজের সৃষ্টিকে পরিবর্তিত হতে দেখে তপনের মন বেদনায় ভরে ওঠে।

(৪)‘শুধু এ দুঃখের মুহর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন।” কোন দুঃখের মুহুর্তের কথা বলা হয়েছে। তপন কী সংকল্প নিয়েছিল ?

উত্তরঃ সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় নিজের ছাপা গল্প পড়তে গিয়ে যখন তপন বুঝল গল্পটি ছোটো মেসোমশাই আগাগোড়া কারেকশান করে দিয়েছেন। নিজের গল্পে নিজেকে না পেয়ে তপন খুব দুঃখ পেয়েছিল।
তপনের সংকল্প :এই দুঃখের মুহূর্তে তপন সংকল্প করে, যদি কখনো নিজের লেখা ছাপতে দেয়, তবে কারো মাধ্যমে নয়, নিজে গিয়ে পত্রিকা অফিসে দিয়ে আসবে। যদি তাতে তার গল্প ছাপা না হয় তবুও। কারণ কেউ সুপারিশ করে তার লেখা ছেপে দিয়েছে এমন কথা যেমন অপমানের, তেমনই কষ্টের। নিজের লেখা পড়তে গিয়ে অন্যের লেখা পড়া খুবই কষ্টকর।

(৫)ক্রমশ ও কথাটা ছড়িয়ে পড়ে।”—কোন কথা, ওই কথা ছড়িয়ে পড়ায় কী ঘটেছিল?

উত্তরঃ তপনের প্রকাশিত গল্পটি আসলে ছোটো মেসোমশাই কিছুটা কারেকশান করে দিয়েছেন—এই কথাটা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে বাড়িতে।
ছোটো মেসোমশাই-এর কারেকশানের কথা বাড়ির সবাই জেনে গেলে তপনের গল্প লেখার কৃতিত্ব খানিকটা কমে যায়। সেদিন পারিবারিক আলোচনায় তপনের গল্পের কথা উঠলেও নতুন মেসোর মহত্ত্বের কথা ঘুরে ফিরে আসে।

৬) “বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের”—কখন এবং কেন তপনের এরকম অনুভূত হয়েছিল?

উত্তরঃ পুজোর ছুটির অনেকদিন পর ছোটোমাসি আর মেসোমশাই হাতে একখানা সন্ধ্যাতারা পত্রিকা নিয়ে তপনদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। সেই দিন তাদেরকে দেখে বুকের রক্ত ছলকে উঠে তপনের।
সাহিত্য রচনা এবং প্রকাশ সম্পর্কে তপনের দারুণ কৌতুহল ছিল। তাই ছােটো মেসোমশাই তার লেখা গল্প সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপানোর জন্য যখন নিয়ে গিয়েছিলেন তখন তপন উৎসাহিত হয়। তবে অপেক্ষা করতে করতে তপন গল্প প্রকাশের আশা ছেড়ে দিয়েছিল। ঠিক এই সময় ছোটো মাসি আর মেসোমশাই সন্ধ্যাতারা পত্রিকা নিয়ে তাদের বাড়িতে আসায় তার গল্প প্রকাশের আবেগ উৎকণ্ঠায় তপনের এরকম অনুভূতি হয়েছিল।

(৭)পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে, কার মধ্যে কেন এমন ভাবনার উদয় হয়েছিল ?

উত্তরঃ গল্পের প্রধান চরিত্র তপনের মধ্যে এমন ভাবনার উদয় হয়েছিল। তপনের লেখা গল্প ছাপা হয়ে প্রকাশিত হবে। এটা ছিল তপনের কাছে কল্পনার অতীত। ফলে মেসোর হাতে সন্ধ্যাতারা পত্রিকা দেখে তপনের বুকের রক্ত ছলকে ওঠে। তবে কী সত্যিই তার গল্প ছাপা হয়েছে এবং সে লেখা হাজার হাজার ছেলের হাতে ঘুরবে। তপনের কাছে এটা একটা অলৌকিক ঘটনা বলে মনে হয়।

(৮) ‘যেন নেশায় পেয়েছে’-কীসের নেশা, কীভাবে তাকে নেশায় পেয়েছে?

উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর জ্ঞানচক্ষু গল্পে তপনের গল্প লেখার নেশার কথা বলা হয়েছে।
তপন একজন সাহিত্য প্রেমী বালক। গল্প লেখা ও সেগুলি ছাপা ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে তার প্রচণ্ড কৌতূহল ছিল। মাসির বিয়ের পর লেখক মেসোমশাইকে খুব কাছ থেকে দেখতে পায় এবং গল্প লেখার রহস্যও তার কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়। তপন একটি গল্প লিখে ছোটোমাসিকে দেখালে মাসি সেটা মেসোমশাইকে দেখায়। তখন ছোটমেসো সেটা পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এতে আরও উৎসাহিত হয়ে তপন একের পর এক গল্প লেখার নেশায় মগ্নহয়ে ওঠে।

(৯)‘সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়’—সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যাওয়ার কারণ কী ?

উত্তর : প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে তপনের লেখা গল্প ছেপে বেরোলে সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়। জ্ঞানচক্ষু গল্পে দেখা যায়—তপনের কাচা হাতের গল্পটিকে মেসো সংশোধন করে নিজের প্রভাব খাটিয়ে সন্ধ্যাতারা সম্পাদককে দিয়ে প্রকাশ করিয়েছেন। জীবনের প্রথম গল্প ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হলে অনাবিল উত্তেজনায় তপন আনন্দে মাতোয়ারা হয়। আর সেই খবরে সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়।

মাধ্যমিক বাংলা জ্ঞানচক্ষু গল্পের বড়ো প্রশ্ন-উত্তর -৫ নম্বরের 

(১)’রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই।’–‘ রত্ন’ ও ‘জহুরী ‘বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?উদ্ধৃতিটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: আশাপূর্ণা দেবীর জ্ঞানচক্ষু গল্পে উল্লেখিত উদ্ধৃতিতে ‘ রত্ন’ বলতে মূল্যবান পাথর কে এবং ‘জহুরী ‘বলতে রত্ন বিশেষজ্ঞ কে বুঝানো হয়েছে। আলোচ্য জ্ঞানচক্ষু গল্পে ‘রত্ন’ বলতে তপনের লেখা গল্প আর ‘জহুরী’ বলতে তপনের লেখক মেসোকে বুঝানো হয়েছে। এক কথায় তপনের লেখা গল্পের মূল্য একজন লেখক অর্থাৎ তপনের নতুন মেসো মশাই বুঝতে পারবেন ।
তপন ছোটবেলা থেকেই অনেক গল্প পড়েছে ও শুনেছে । তাই গল্প জিনিসটা যে কি তার অজানা নয় । সে শুধু এটাই জানত না যে মানুষেরাই এই গল্প লিখতে পারে । তার ধারণা ছিল গল্প যারা লেখে তারা আকাশ থেকে পড়া কোন জীব, যারা অন্য গ্রহের বাসিন্দা কিন্তু নিজের লেখক ছোটমেসোকে চাক্ষুষ দেখে তার সেই ভুল ভাঙ্গে ,তার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায় অর্থাৎ বোধোদয় হয় যে – লেখকেরা বাবা, কাকা, আমাদের মতই একজন সাধারন মানুষ ।লেখক মেসোর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তপনের লেখক হয়ে ওঠার বাসনা জন্মায়। দুপুরবেলা সবাই যখন চুপচাপ তখন তপন হোম টাস্কের খাতা নিয়ে তিনতলার সিঁড়িতে বসে আস্ত একটা গল্প লিখে ফেলে । সমবয়সীদের মত সাধারন বিষয় এর পরিবর্তে নিজের বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি নিয়ে গল্প তৈরি করে ।লেখা শেষ করে নিজেই শিহরিত, রোমাঞ্চিত ও পুলকিত হয়। উত্তেজনাবশে ছোট মাসির হাত ঘুরে তা লেখক মেসোর হাতে পড়ে। ছোট মেসো তপনের লেখার প্রসংশা করলো তপন মনে করে একজন লেখকের লেখার প্রকৃত মূল্যায়ন একজন প্রকৃত লেখকই করতে পারে । তাই বলা হয়েছে রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই ।

(২)জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের —- জ্ঞানচক্ষু কি? তপনের প্রকৃত জ্ঞানচক্ষু কিভাবে খুলে গিয়েছিল?

উত্তর: আশাপূর্ণা দেবীর লেখা জ্ঞানচক্ষু গল্পে জ্ঞানচক্ষু বলতে জ্ঞান রূপ চক্ষু বা মানুষের অন্তর্দৃষ্টি কে বোঝানো হয়েছে ,যার সাহায্যে মানুষ প্রকৃত সত্যকে যাচাই করে নিতে পারে।
শিশুমনের কল্পনায় তপনের মনে হয় লেখকেরা আকাশ থেকে পড়া কোন জীব বা অন্য গ্রহের বাসিন্দা ।কিন্তু নতুন লেখ মেসোকে দেখে তার সেই ধারণা বদলে যায় । সে জানতে পারে মেসো অনেক বই লিখেছেন এবং তা ছাপানো হয়েছে ।তাই জলজ্যান্ত একজন লেখককে চাক্ষুষ দেখার পর তপন বুঝতে পারে আসলে মানুষই গল্প লেখে । যারা বাবা, কাকা, আমাদের মতই নিছক সাধারণ মানুষ । এভাবেই তপনের প্রাথমিক জ্ঞানচক্ষু খোলে ।
লেখক মেসো কে দেখেই তপনের গল্প লেখক হওয়ার বাসনা প্রবল হয়। আর তা থেকেই হোমটাস্কের খাতায় বিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা ,অনুভূতি নিয়ে গল্প লিখে ছোট মাসি কে দেখায় ।ছোট মাসির সুপারিশে এবংছোট মেসোর সহায়তায় তা সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপানো হয়। তপনের গল্প কারেকশনের নামে ছোট মেসো আমূল বদলে দিয়েছে , তপন পড়তে গিয়ে তা জানতে পারে। তখন লজ্জায় ,হতাশায়, কষ্টে তপন প্রতিজ্ঞা করে যে, অন্যের সুপারিশ ছাড়াই সে নিজের লেখা নিজেই ছাপতে দেবে । এভাবেই তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে যায়।

(৩)’ শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন ‘ — দুঃখের মুহূর্তে বলতে কি বুঝানো হয়েছে ? তপন কোন সংকল্প গ্রহণ করেছিল তা সংক্ষেপে লেখ।

উত্তর: বিখ্যাত কথা সাহিত্যিক এবং ছোটগল্প লেখিকা আশাপূর্ণা দেবীর জ্ঞানচক্ষু গল্পে লেখক সম্পর্কিত ধারণার অবসানে উদ্যোগী তপন হোমটাস্কের এর খাতায় একটি গল্প লেখে ।গল্পটার বিষয় ছিল তার বিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি। ছোট মাসির সাহায্যে সেই লেখা তার লেখক মেসোর হাতে পৌঁছায়। তিনি তপনের লেখার তারিফ করেন এবং সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় কারেকশন করে ছাপানোর জন্য নিয়ে যান ।এদিকে তপন বাড়ি ফিরে দিন গুণতে থাকে । তপন ভাবে তার লেখা আঁটোসাঁটো ছাপার অক্ষরে বেরোবে। হাজার হাজার ছেলের হাতে তা ঘুরবে ।এটা তার কাছে অলৌকিক ঘটনা বলেই মনে হয় ।হঠাৎ একদিন মাসি ও মেসো তপনের গল্প সম্বলিত পত্রিকা নিয়ে তপন দের বাড়িতে উপস্থিত হয়। বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের ।মনে হয় তার জীবনের সবচেয়ে সুখের দিন এটি ।বাড়ির সকলের নানান রকমের প্রশংসা শুনে তপন লজ্জিত হয়। কিন্তু নিজের হাতে গল্প পড়তে বসে তপনের তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়। লজ্জায় ঘৃণায় অপমানে তপন চরম আঘাত পায়। সে দেখে কারেকশনের নামে ছোট মেসো তার পুরো গল্পটি পাল্টে দিয়েছে ।তাই গভীর দুঃখে তপন সংকল্প করে যদি কখনও লেখা ছাপা দেয় তো তপন নিজেই গিয়ে দেবে ।নিজের কাঁচা লেখা ছাপানো হলে হবে ,না হলে না হবে- কিন্তু তবু নিজের গল্প পড়তে বসে যেন অন্যের লেখা গল্পের লাইন তপনকে পড়তে না হয়।

(৪)প্রশ্ন জ্ঞানচক্ষু গল্প অবলম্বনে তপনের চরিত্র বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপন । গল্পে তপনের চরিত্রটি সবসময়ের মতোই আশা-আকাঙ্ক্ষা স্বপ্ন-স্বপ্নভঙ্গ ‘কল্পনা- বাস্তব এবং আনন্দ- অভিমানের টানাপোড়নে লেখা। তার চরিত্রের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি হল—
কল্পনাপ্রবন শিশুমনের স্বাভাবিক প্রবণতা হিসাবে তপন একজন কল্পনাপ্রবণ শিশু ।লেখক সম্পর্কে তার ধারণা ছিল যে , লেখকেরা আকাশ থেকে পড়া জীব, তারা অন্য গ্রহের বাসিন্দা ।অবশ্য লেখক মেসো কে দেখে তার চোখ মার্বেল এর মত গোল হয়ে গেলে সে বুঝতে পারে লেখকেরা তার বাবা- কাকা- মামাদের মতোই সাধারণ মানুষ।
শিশুর সরলতা–ছোট মেসো যখন তপনের গল্পের তারিফ করে বলে তপনের গল্প দিব্যি হয়েছে ।সেই সঙ্গে বলে গল্প ছাপিয়ে এনে দেবে। একথা তপন সহজেই বিশ্বাস করে এবং মনে মনে মেসোর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে ।তপনের মনে হয় রত্নের মূল্য জহুরিই বুঝে ।
উৎসাহী মানসিকতা–লেখক মেসোকে দেখে তপনের মনে লেখক হওয়ার বাসনা জন্মায়। তপনকে গল্প লেখা নিয়ে বাড়িতে নানা ঠাট্টা বিদ্রুপ তীর্যক বাক্য সহ্য করতে হয়। কবি-সাহিত্যিক কথাশিল্পী বলে সকলে ব্যঙ্গ করলেও তপনের উৎসাহে কোনো ঘাটতি দেখা যায়নি, বরং সে আরো দু’তিনটি গল্প লেখে ফেলে।
আত্মমর্যাদাবোধ–তপনের লেখা গল্প মেসো কারেকশনের নামে সম্পূর্ণ বদলে দিলে তপনের মনে রাগ ও অভিমানের সৃষ্টি হয়। গল্প পড়ে দুঃখে তপনের চোখে জল আসে। তার মনে হয় আজকের দিনটা তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন। তাই সেই দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করে যে, এরপর নিজের লেখা নিজে ছাপাতে দেবে কিন্তু কারো অপমান সহ্য করবে না

আরো পড়ুন : মাধ্যমিক বাংলা জ্ঞানচক্ষু গল্পের MCQ  এবং SAQ -১ নম্বরের প্রশ্ন-উত্তরের জন্য এখানে CLICK করুন। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *