মাধ্যমিক বাংলা সিরাজদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর

সিরাজদৌলা

পরীক্ষা প্রস্তুতি : মাধ্যমিক বাংলা সিরাজদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর। প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা তোমরা যারা ২০২৩ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে parikshaprastuti.org এক্সপার্ট  টিমের পক্ষ থেকে তোমাদের অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই।  আজকে তোমাদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি মাধ্যমিক  বাংলা ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটক  থেকে ৪ নম্বরের প্রশ্ন উত্তরের সাজেশন , যেখান থেকে ২০২৩ সালের  পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  আশা করছি তোমরা  ভালো করে প্রস্তুতি নিবে, তাহলে  ফাইনাল পরীক্ষায় অবশ্যই কমন পাবে। আমাদের এই পেজে আরো অনেক সাজেশন দেওয়া হবে।  ভালো  লাগলে আমাদের এই WWW.PARIKSHAPRASTUTI.ORG ওয়েব পেজটিকে বন্ধুদের মাঝে অবশ্যই  শেয়ার করবে। মাধ্যমিক বাংলা সিরাজদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর।মাধ্যমিক বাংলা সিরাজদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর।মাধ্যমিক বাংলা সিরাজদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর।মাধ্যমিক বাংলা সিরাজদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর।মাধ্যমিক বাংলা সিরাজদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর।মাধ্যমিক বাংলা সিরাজদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর।

Table of Contents

মাধ্যমিক বাংলা সিরাজদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর

১)“ আমার এই অক্ষমতার জন্য তোমরা আমাকে ক্ষমা করো । ” কে , কেন এই মন্তব্য করেছেন ? যাকে উদ্দেশ্য করে একথা বলা তার মধ্যে এই মন্তব্যের কী প্রতিক্রিয়া হয়েছে ? 

Ans: নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত ‘ সিরাজদ্দৌলা ‘ শীর্ষক নাট্যাংশে প্রশ্নে উদ্ধৃত কথাটি সিরাজ ফরাসি প্রতিনিধি মঁসিয়ে লা – কে উদ্দেশ্য করে বলেছেন । 

মন্তব্যটি করার কারণ : ইংরেজরা ফরাসি উপনিবেশ চন্দননগর অধিকার করে নিলে নবাবের সাহায্য পাওয়ার আশায় মঁসিয়ে লা সিরাজের রাজসভায় আসেন । নবাব সিরাজ ফরাসিদের প্রতি পূর্ণ সহানুভূতিশীল হলেও জানান যে কলকাতা জয় করতে গিয়ে এবং পূর্ণিয়ার শওকত জঙ্গের সঙ্গে লড়াই – এর কারণে তাঁর বহু লোকক্ষয় ও অর্থব্যয়ও হয়েছিল । তার মন্ত্রীমণ্ডলও নতুন যুদ্ধের পক্ষপাতী নন । এই অবস্থায় সহানুভূতি থাকলেও ফরাসিদের সাহায্য করা সম্ভব নয় জানিয়ে সিরাজ বলেন , ‘ আমার এই অক্ষমতার জন্য তোমরা আমাকে ক্ষমা করো । ” 

  মন্তব্যের ফলে প্রতিক্রিয়া :সিরাজের এই কথার উত্তরে মঁসিয়ে লা বলেছেন যে সিরাজের সমস্যার কথা বুঝতে পেরে নবাবের জন্য তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখিত । একই সঙ্গে নিজেদের অবস্থাও তাঁকে কষ্ট দিচ্ছে । ভালোবাসার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া ছাড়া আর তাঁদের কোনো উপায় নেই । একই সাথে তিনি নবাবকে তাঁর ভাবী বিপদ সম্পর্কেও সচেতন করে দেন এবং জানান — “ … On our departure from this land , the smothered flame will burst forth and will destroy your kingdom and people . ” অর্থাৎ তাঁরা বাংলা ছেড়ে চলে যাওযার সাথে সাথেই যে চাপা আগুন জ্বলে উঠবে তাতে নবাবের সাম্রাজ্য ধ্বংস হয়ে যাবে । 

২)“ আপনাদের কাছে আমার এই ভিক্ষা যে আমাকে শুধু আশ্বাস দিন ” —কাদের কাছে বক্তা এই ভিক্ষা চান ? তিনি কী আশ্বাস প্রত্যাশা করেছিলেন ? 

Ans: বিখ্যাত নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের লেখা ‘ সিরাজদ্দৌলা ‘ নাট্যাংশের অন্যতম চরিত্র সিরাজ তাঁর বিরুদ্ধপক্ষ মিরজাফর , রাজবল্লভ , রায়দুর্লভদের কাছে ভিক্ষা চেয়েছেন । 

সিরাজের প্রত্যাশা করা আশ্বাস : ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি ধীরে ধীরে সমগ্র বাংলা দখলের উদ্দেশ্যে বিস্তৃত হচ্ছিল । নবাব সিরাজ ওই সত্যটি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন এবং বুঝেছিলেন তারই অধীনস্ত কিছু কর্মচারী ও সভাসদ এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত । কোম্পানির মদতে তারা ক্ষমতা দখলে উদগ্রীব হয়ে ওঠে । কিছু নবাব মনেপ্রাণে চাইতেন বাংলার স্বাধীনতা যেন অটুট থাকে । আর সেইজন্য সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বদেশ রক্ষায় সচেষ্ট হতে হবে , এই ছিল নবাবের ইচ্ছা । মীরাজাফর ও বাকি কিছু সভাসদ তাঁকে ত্যাগ করলেও এই সংগতি বিনষ্ট হবে বলে সিরাজ মনে করেছিলেন । এই বিবেক ও বুদ্ধি তাঁর সভার বাকি সদস্যদের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে বলেও হয়তো তিনি ভয় পেয়েছিলেন । তাই সমস্ত ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নিয়ে সবার উদ্দেশ্য বলেন— “ বাংলার মান , বাংলার মর্যাদা , বাংলার স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়াসে আপনারা আপনাদের শক্তি দিয়ে , বুদ্ধি দিয়ে সর্বরকমে আমাকে সাহায্য করুন । ” 

এছাড়াও তিনি বলেন , তিনি দোষ করে থাকলে তার জন্য তিনি ক্ষমাপ্রার্থী । এইজন্য সিরাজ মিরজাফর ও অন্যান্য সদস্যকে চলে যেতে বারণ করেন । বাংলার এই আসন্ন দুর্দিনে তাঁরা নবাবকে ছেড়ে চলে গেলে নবাব আরও অসহায় হয়ে পড়বেন । এইজন্য নবাব তাঁদের মুখে ফিরে না যাওয়ার আশ্বাসবাণীটি শোনার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠেন । 

৩)“ তোমাদের কাছে আমি লজ্জিত ” – কে , কাকে একথা বলেছেন ? বক্তা লজ্জা প্রকাশ করেছেন কেন ? 

Ans: নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের লেখা ‘ সিরাজদ্দৌল্লা ‘ নাটকে সিরাজদ্দৌল্লা ফরাসি প্রতিনিধি মঁসিয়ে লা – কে উদ্দেশ্য করে এই মন্তব্য করেছেন । 

  ফরাসিরা খুবই শান্ত , নিরীহ প্রকৃতির মানুষ বলে পরিচিত ছিল । তাদের ব্যাবসা কেন্দ্র ছিল চন্দননগর । কিন্তু নিষ্ঠুর ও অত্যাচারী ইংরেজরা নবাবের অনুমতি না নিয়ে নবাবের রাজ্যের মধ্যে থাকা চন্দননগর আক্রমণ করে এবং দখল করে নেয় । ফরাসি প্রতিনিধি মঁসিয়ে লা এই আক্রমণের প্রতিবাদ জানিয়ে নবাবের সাহায্য প্রার্থনা করেন । দীর্ঘদিন বিভিন্ন যুদ্ধের ফলে নবাবের লোকবল , অর্থবল এতই কমে গিয়েছিল যে ফরাসিদের হয়ে ইংরেজকে প্রতিহত করার ক্ষমতা তাঁর ছিল না । তাই তিনি নিরুপায় হয়ে ফরাসিদের কাছে লজ্জিত বলে জানিয়েছেন । 

৪)“ আমরা নবাবের নিমক বৃথাই খাই না , একথা তাঁদের মনে রাখা উচিত ” কে , কাকে একথা বলেছেন ? মন্তব্যটির প্রেক্ষাপট আলোচনা করো ।

Ans: শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের লেখা ‘ সিরাজদ্দৌল্লা ‘ নাটকে নবাবের বিশ্বস্ত সেনাপতি মীরমদন একথা বলেছেন । 

ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত । তার সঙ্গে গোপন সমঝোতায় যোগ দিয়েছে সিরাজের উচ্চপদস্থ কর্মচারীরা । এ সংবাদ নবাব জানতে পেরে ইংরেজ প্রতিনিধি ওয়াটসকে রাজসভা থেকে বিতাড়িত করেন । এতে জগৎশেঠ , মীরজাফর অভিযোগ করেন মানী লোকের মানহানি করা উচিত নয় । রাজবল্লভও নবাবের বিরোধিতা করেন । তখন নবাবের বিশ্বস্ত সেনাপতি মীরমদন ও মোহনলাল সিরাজের পাশে দাঁড়ান । মীরমদন মীরজাফরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন যুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ আনেন । নবাবের কাজের সমালোচনাও সব সময় শোভন নয় , একথা মীরজাফরকে মনে করিয়ে দেন মীরমদন ।

৫)“ বাংলার মান , বাংলার মর্যাদা , বাংলার স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়াসে আপনারা আপনাদের শক্তি দিয়ে , বুদ্ধি দিয়ে সর্বরকমে আমাকে সাহায্য করুন ” —সিরাজ কাদের কাছে , কী সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন ?

Ans: নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের লেখা ‘ সিরাজদ্দৌল্লা ’ শীর্ষক নাট্যাংশে নবাব সিরাজদ্দৌলা উক্ত সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন রাজবল্লভ , জগৎশেঠ , মিরজাফর প্রমুখের কাছে । 

  মিরজাফর , জগৎশেঠরা ছিলেন নবাব সিরাজদৌল্লার বিরোধী । তাঁরা মনে করতেন যে নবাব তাঁদের অপমান করেছেন । অন্যদিকে নবাব বুঝতে পেরেছিলেন এইসব ক্ষমতাবান ব্যক্তি যেমন স্বার্থপরতায় নিমগ্ন , তেমনি তাঁর বিরুদ্ধে এক ঘোরতর চক্রান্তে লিপ্ত । নবাবের বিরুদ্ধে মিরজাফরকে লেখা ওয়াটস – এর চিঠিটাই ছিল তার প্রমাণ । সেখানে লেখা ছিল— “ নবাবের ওপর নির্ভর করা অসম্ভব । চন্দননগর আক্রমণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ । ” 

এইসব ঘটনা সত্ত্বেও নবাব সিরাজ দেশের জন্য সমস্ত পুরনো বিবাদ ভুলে যেতে চেয়েছিলেন । আসলে তাঁর মনে হয়েছিল যে দেশের দুর্দিনে ঐক্যবদ্ধ থাকাটাই বেশি জরুরি । তাই বাংলার দুর্দিনে কেউ যেন তাঁকে ত্যাগ না করে । তাই সিরাজ কাতর অনুরোধ করেছিলেন এবং বাংলার মর্যাদা ও স্বাধীনতা রক্ষার ক্ষেত্রে শক্তি ও বুদ্ধি দিয়েও সকলকে তাঁর পাশে থাকতে বলেন । এমনকী যুদ্ধ শেষে বিচারের মুখোমুখি তিনি নিজেই দাঁড়াতে রাজি বলে জানান । কিন্তু তার আগে সকলের একজোট বা ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াইটাই তিনি প্রত্যাশা করেছিলেন ।  

৬)“ জানি না আজ কার রক্ত সে চায় । পলাশি ! রাক্ষসী পলাশি ” —এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে বক্তার যে মানসিক ভাবনার পরিস্ফুটন ঘটেছে তা আলোচনা করো ।

Ans: জনপ্রিয় নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের সিরাজদ্দৌল্লা নাট্যাংশে প্রশ্নোধৃত উক্তিটি নবাব সিরাজের । এক চরম মানসিক বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত অবস্থায় নাট্যাংশের শেষে লুৎফার কাছে তিনি বেদনার্ত উক্তিটি করেছেন । 

  নাট্যাংশে সিরাজের চরিত্রটি একটি অতীব ট্র্যাজিক চরিত্র । তিনি নিজের মানসচক্ষে আসন্ন বিনাশ প্রত্যক্ষ করেছেন । কিন্তু ভাগ্যহত সিরাজের পক্ষে সেই মর্মান্তিক পরিণতিকে এড়ানো সম্ভব হয়নি । এই হতাশার প্রতিফলন ঘটেছে প্রশ্নে উদ্ধৃত উক্তিটিতে । তিনি বুঝতে পেরেছিলেন বাংলাকে রক্ষা করতে তাঁর বহু রক্তক্ষয় হবে । ষড়যন্ত্রীদের স্বপক্ষে আনতে গিয়ে আবেগ দেখালেও তাঁর জানা ছিল পলাশির প্রান্তরে শুরু হবে বাংলার অস্তিত্ব রক্ষার চরম রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম । তাই তিনি বলেন—  “ … এই পনেরো মাসে আমার এমনি অভিজ্ঞতা হয়েছে , মানুষের এমন নির্মমতার পরিচয় আমি পেয়েছি যে , কোন মানুষকে শ্রদ্ধাও করতে পারি না , ভালোও বাসতে পারি না । ” 

পলাশির প্রান্তরে যেখানে এক কালে পলাশ ফুল রাঙিয়ে তুলত দিগন্ত , সেখানে আসন্ন পলাশির যুদ্ধ রক্তের দ্বারা লাল করে তুলবে । তাই প্রায় পনেরো মাসের নবাবিতে , যুদ্ধে আর ষড়যন্ত্রে ক্ষতবিক্ষত নবাব লুৎফাকে পলাশি সম্পর্কে ধারণা দিতে এমন আতঙ্কিত আর্তনাদ করেছেন ।

৭)“ জাতির সৌভাগ্য সূর্য আজ অস্তাচলগামী ” —বক্তা কে ? এই বক্তব্যের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো । 

অথবা , “ জাতির সৌভাগ্য সূর্য আজ অস্তাচলগামী ” —কোন জাতির কথা বলা হয়েছে ? জাতির সৌভাগ্য সূর্য অস্তাচলগামী কেন ? 

অথবা , “ বাংলার ভাগ্যাকাশে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা ” – কোন কারণে বাংলার ভাগ্যাকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা নেমে এসেছিল ?

Ans: নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত ‘ সিরাজদ্দৌল্লা ‘ নাটকে বাংলার চরম দুর্দিনে একথা বলেছেন নবাব সিরাজদ্দৌলা । এখানে জাতি বলতে বাঙালি জাতিকে বোঝানো হয়েছে । ইংরেজদের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে শামিল হয়েছেন নবাবের প্রধান সেনাপতি ভাবে মিরজাফর , জগৎশেঠ , রায়দুর্লভ , রাজবল্লভ , ঘসেটি বেগম প্রমুখ । সকলে মিলে নবাবকে সরিয়ে বাংলার সিংহাসন দখলের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন । ফলে জাতির সৌভাগ্য সূর্য অস্তাচলগামী হয়েছিল । 

নবাব আলিবর্দি খাঁ – র মৃত্যুর পর মুর্শিদাবাদের সিংহাসনে বসেছেন তাঁর দৌহিত্র সিরাজদ্দৌলা । সিরাজের পনেরো মাসের শাসনে ইংরেজরা ভীত – সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে । ব্রিটিশ শক্তি শাসনক্ষমতা দখলে অতিসক্রিয় প্রয়াস চালায় । দেশপ্রেমিক , প্রজাহিতৈষী নবাব সিরাজদ্দৌলা ঘরে – বাইরে শত্রু দমনে যথেষ্ট তৎপরতাও শুরু করেন । জাতির স্বাধীনতা , প্রজাদের নিরাপত্তা ও বাংলার কল্যাণসাধনকে তিনি জীবনের ব্রত করেছেন । একাজে তিনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন , ঘরে – বাইরে ষড়যন্ত্র ভেদও করেছেন । কিন্তু ইংরেজদের ক্ষমতালিপ্সা ও সৈন্যসমাবেশ ধীরে ধীরে বাড়তেই থাকে । নবাবের অনুগত ফরাসি বণিকদের বাণিজ্যস্থলগুলি একে একে আক্রমণ ও দখল করে ইংরেজ কোম্পানি তখন মুর্শিদাবাদের দিকে অগ্রসর হয় । নিরুপায় নবাব তখনও যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন বাংলা তথা জাতির স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য । আর এমন পরিস্থিতিতেই দিক্‌ভ্রষ্ট অসহায় নবাব সিরাজদ্দৌল্লার উপলব্ধি— “ জাতির সৌভাগ্য সূর্য আজ অস্তাচলগামী । ” 

৮)” আজ বিচারের দিন নয় , সৌহার্দ্য স্থাপনের দিন ” – কে , কাকে উদ্দেশ্য করে একথা বলেছেন ? এই বক্তব্যের প্রাসঙ্গিকতা লেখো ।

অথবা , “ অন্যায় আমিও করেছি , আপনারাও করেছেন ” – কে , কাকে একথা বলেছেন ? এই বক্তব্যের কারণ লেখো ।

অথবা , “ কে বেশি অপরাধী তা তিনি নিজেই বিচার করবেন ” –কে , কাকে একথা বলেছেন ? উক্তিটির তাৎপর্য লেখো । 

Ans: নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের লেখা ‘ সিরাজদ্দৌল্লা ‘ নাটকে নবাব সিরাজদৌলা তারই সেনাপতি মিরজাফরকে উদ্দেশ্য করে একথা বলেছেন। 

  বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদৌলা এক প্রজাহিতৈষী , উদার ও দেশপ্রেমিক নবাব হিসেবে পরিচিত । নবাবের ভালো মানসিকতার সুযোগে মিরজাফর , ঘসেটি বেগম , রাজবল্লভ , জগৎশেঠ প্রমুখ নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় । নবাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণাকারী ওয়াটসকে জাফর আলি বন্ধু বলে ঘোষণা করেন । অ্যাডমিরাল ওয়াটসনের গোপন চিঠি নবাবের হাতে এসে পৌঁছায় । এই খবর মিরজাফরের কানে পৌঁছালে মিরজাফর নবাবকে প্রশ্ন করেন , নবাব কী প্রকাশ্যে তাঁকে শাস্তি দিতে চান ? তদুত্তরে নবাব ক্ষমাপরায়ণ দৃষ্টি নিয়ে বলেন , “ আজ বিচারের দিন নয় , সৌহার্দ্য স্থাপনের দিন । ” 

৯)‘ সিরাজদ্দৌল্লা ‘ নাট্যাংশ অবলম্বনে ঘসেটি বেগমের চরিত্র বর্ণনা করো । ” 

অথবা , “ সিরাজদ্দৌল্লা ‘ নাট্যাংশে ঘসেটি বেগম স্বার্থান্বেষী , প্রতিহিংসাপরায়ণ , যুগোপযোগী এক বাস্তব নারী । ” এই মন্তব্যের আলোকে ঘসেটি বেগমের চরিত্র বিশ্লেষণ করো ।

অথবা , “ আমার রাজ্য নাই , তাই আমার কাছে রাজনীতিও নাই — আছে শুধু প্রতিহিংসা । ” উক্তিটির আলোকে বস্তার চরিত্র বিশ্লেষণ করো ।

অথবা , “ ঘসেটির বন্ধন মোচন হবে , সিরাজের পতন হবে , সুদিন নয় । ” বক্তা কে ? এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বস্তার কোন মনোভাব ফুটে উঠেছে তা আলোচনা করো । 

Ans: নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের লেখা ‘ সিরাজদ্দৌলা নাটকটি পলাশির যুদ্ধের ঐতিহাসিক ঘটনাকে সামনে রেখে রচিত হয়েছে । নাট্যকার বিশেষ কিছু চরিত্রের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক সত্যকে হুবহু রক্ষা করেছেন । এই চরিত্রগুলির মধ্যে অন্যতম চরিত্র হলো “ ঘসেটি বেগম । তাঁর চরিত্রের যে দিকগুলি পাঠ্যাংশে দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেগুলি হলো – 

 

ষড়যন্ত্রকারী : ঘসেটি বেগম সম্পর্কে সিরাজের মাসি । তিনি চেয়েছিলেন পিতা আলিবর্দির মৃত্যুর পরে তাঁর স্বামী বাংলার মসনদে বসুন । কিন্তু তাঁর স্বামীর আকস্মিক মৃত্যু হলে সিরাজের সিংহাসনে লাভ একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে ওঠে । নিজের মনোবাসনা পূর্ণ না হওয়ায় ঘসেটি সিরাজের প্রতি ঈর্ষা থেকে ইংরেজদের সাথে মিলিত হয়ে ষড়যন্ত্রে 

প্রতিহিংসাপরায়ণ : ঘসেটি সিরাজের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ও অভিসম্পাত করেছেন । কিন্তু রাজনৈতিক কারণে সিরাজ ঘসেটিকে গৃহবন্দি করে রেখেছিলেন । তাতে ঘসেটি আরও প্রতিহিংসাপরায়ণা হয়ে ওঠেন । ঘসেটির মুখেই সেই প্রতিহিংসার কথা প্রকাশ পায়— “ আমার রাজ্য নাই , তাই আমার কাছে রাজনীতিও নাই — আছে শুধু প্রতিহিংসা । ” এই প্রতিহিংসা তাঁর পূর্ণ হবে সেদিন যেদিন সিরাজের প্রাসাদ অপর জন অধিকার করবে এবং সিরাজকে হত্যা করবে । 

অমানবিক আচরণ : ঘসেটিকে সিরাজের মনে হয়েছে দানবী । ঘসেটির সঙ্গে থাকতে লুৎফারও ভয় হয়— “ মনে হয় , ওর নিশ্বাসে বিষ , ওর দৃষ্টিতে আগুন , ওর বুধ অঙ্গ সঞ্চালনে ভূমিকম্প । ” নবাবের সকল চেষ্টার বিরুদ্ধে প্রধান বিদ্রোহিনী ঘসেটি বেগম । 

স্বার্থপরতা : নারীর কোনো গুণ – বৈশিষ্ট্য ঘসেটির মধ্যে খুঁজে পাওয়া না যাওয়ায় নবাব তিনি মানবী না হয়ে হয়েছেন দানবী । সিরাজ তাঁকে মায়ের সম্মান দিলেও ঘসেটির মধ্যে কিন্তু মায়ের স্নেহ ছিল না , ছিল তীব্র প্রতিহিংসার দহন জ্বালা নাটকে এক কুচক্রী , স্বার্থান্বেষী , প্রতিহিংসাপরায়ণ কুট নারী হিসাবেই ঘসেটির উপস্থিতি । 

১০)…. তাই আজও তার বুকে রক্তের তৃষা । জানি না , আজ কার রক্ত সে চায় । পলাশি , রাক্ষসী পলাশি ! ‘ — ‘ ‘ পলাশি ‘ নামকরণের কারণ নির্দেশ করে উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।
Ans: নদিয়া জেলার ভাগীরথীর পূর্বতীরে বাংলার ঐতিহাসিক স্থান পলাশি । লাল পলাশের রঙে রঙিন হয়ে থাকত বলেই জায়গাটির এমন নাম । বাংলার ইতিহাসে পলাশি সেই রঙ্গ ভূমি , যেখানে এক লজ্জাজনক ও কলঙ্কময় অধ্যায় অভিনীত হয়েছিল । । শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘সিরাজদৌল্লা’ নাটকে পলাশির শেষ পরিণতি কী হবে তা না জেনেই আগে থেকেই  সিরাজ এই উক্তিটি  করেছেন । সিরাজ জানতেন কোম্পানির সঙ্গে যুদ্ধে বিজয়ী হওয়া কঠিন । নবাব ঘরে – বাইরে শত্রুবেষ্টিত হয়ে অনেকটাই অসহায় হয়ে পড়েছিলেন । ষড়যন্ত্রে সংশয়াচ্ছন্ন সিরাজ মানসিক দিক থেকে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গিয়েছিলেন । ঘসেটি বেগমের অভিসম্পাত তাঁকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছিল । তাই নাট্যাংশের শেষ সংলাপে নবাবের দ্বন্দ্বদীর্ণ ক্ষতবিক্ষত মনের পরিচয় মেলে । মানসিক টানাপোড়েনে আহত নবাব আশঙ্কা প্রকাশ করেন – পলাশে রাঙা পলাশির লালের নেশা ঘোচেনি , তাই সে রক্তের পিয়াসি । কিন্তু কার রক্ত তা অজানা , কারণ যুদ্ধের পরিণতি সম্পর্কে তিনি ছিলেন অনিশ্চিত ।

আরো পড়ুনঃ

*** মাধ্যমিক বাংলা এবছরের পরীক্ষার্থীরা আফ্রিকা কবিতা থেকে ১০০%কমন পেতে এখানে ক্লিক করুন। 

*** মাধ্যমিক বাংলা এবছরের পরীক্ষার্থীরা হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধ থেকে  ১০০%কমন পেতে এখানে ক্লিক করুন। 

*** মাধ্যমিক বাংলা এবছরের পরীক্ষার্থীরা কোনি  উপন্যাস থেকে ১০০%কমন  পেতে এখানে ক্লিক করুন। 

*** মাধ্যমিক বাংলা এবছরের পরীক্ষার্থীরা অভিষেক  কবিতা থেকে ১০০%কমন পেতে এখানে ক্লিক করুন। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *