মাধ্যমিক ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের 2 নম্বরের প্রশ্ন উত্তর

মাধ্যমিক ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর। প্রিয় ছাত্র ছাত্রীরা তোমরা যারা ২০২৩ সালে মাধ্যমিক দেবে , PRIKSHAPASTUTI .ORG এক্সপার্ট টিমের পক্ষ থেকে প্রথমেই তোমাদের অভিনন্দন জানাই। যাতে তোমরা বাড়িতে বসে সুন্দর ভাবে  মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারো তার জন্যই আমাদের এই প্রচেষ্টা। এই অনলাইন MOCK TESTER মাধ্যমে তোমরা দেখে নাও মাধ্যমিক ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ঃপ্রতিরোধ ও বিদ্রোহ  TOPIC এর উপর SAQ ২ নম্বরের পার্ট ২ প্রশ্ন উত্তর  ২০২৩ পরীক্ষার জন্য তোমরা কতটা প্রস্তুতি নিয়েছো।  আর তোমাদের এই অনলাইন লাস্ট মিনিট সাজেশন  কেমন লাগছে নীচের COMMENT সেক্শনে কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবে।

মাধ্যমিক ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর

২ নাম্বারের প্রশ্ন উত্তর 

(১)কেনারাম ও বেচারাম কী?

উত্তর কেনারাম:ব্যবসায়ীরা যখন সাঁওতালদের কাছ থেকে কৃষিপণ্য কিনত কিন্তু  বেশি ওজনের বাটখারা ব্যবহার করত। বেশি ওজনের বাটখারা কেনারাম নামে পরিচিত ছিল।

বেচারাম :আবার ব্যবসায়ীরা যখন সাঁওতালদের লবণ-চিনি প্রভৃতি পণ্য বিক্রয় করত তখন কম ওজনের বাটখারা ব্যবহার করত এই কম ওজনের বাটখারা কে বলা হয়বেচারাম।

 (২)কামিয়াতি ও হারওয়াহি কি ?

উত্তর:কামিয়াতি: কামিয়াতিচুক্তি হলো ঋণগ্রহীতা যতদিন না  ঋণ শোধ করতে পারবে ,ততদিন তাকে মহাজন জমিতে বেগার খাটতে হবে।

হারওয়াহি:হারওয়াহি চুক্তি হলো ঋণগ্রহীতাকে মহাজন জমিতে বিনা পারিশ্রমিকে লাঙল  দিতে হবে আর 33 শতাংশ সুদ সহ ঋণ শোধ করতে হবে।

(৩)ভগনা ডিহির মাঠ স্মরণীয় কেন?

উত্তর-সাঁওতালরা মহাজন ,জমিদার ও সরকারি কর্মচারীদের মিলিত শোষণ অত্যাচারে বিক্ষুব্ধ হয়ে  1855 খ্রিষ্টাব্দ এ  বিদ্রোহ ঘোষণা করে। 1855 খ্রিষ্টাব্দের 30 শে জুন ভগনা ডিহির মাঠে 10000 সাঁওতাল সিধু ও কানুর নেতৃত্বে স্বাধীন সাঁওতাল রাজ্য প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করে।  প্রকৃতপক্ষে ভগনাডিহির মাঠ  থেকেই সাঁওতালরা ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।  তাই সাঁওতাল বিদ্রোহের  ইতিহাসে ভগনা ডিহির মাঠ বিশেষভাবে স্মরণীয়।

(৪)ডহর কথার অর্থ কি ?সিধু – কানু ডহর কোথায় আছে?

উত্তর -ডহর: সাঁওতালি ভাষায় ডহর কথার অর্থ হল  খোলা বা উন্মুক্ত চত্বর। সাঁওতাল বিদ্রোহের দুই প্রধান নেতা সিধু ও কানুর স্মরণে কলকাতার ধর্মতলার   একাংশের নামকরণ করা হয়েছে সিধু কানু ডহর।

(৫)খুৎকাঠি প্রথা কি?

উত্তর-খুৎকাঠি প্রথা:  খুৎকাঠি প্রথা কথার অর্থ হল যৌথ  কৃষিব্যবস্থা। মুন্ডারা বহুকাল ধরে জঙ্গল পরিষ্কার করে কৃষি কাজ করতো এবং জমির যৌথ মালিকানা ভোগ করতো।  ব্রিটিশ আমলে তাদের যৌথ কৃষি ব্যবস্থা বা খুৎকাঠি প্রথা অবসান ঘটিয়ে ব্যক্তিগত মালিকানা ব্যবস্থা চালু করায়  মুন্ডারা ক্ষুদ্ধ হয়। 

(৬)মুন্ডাউলগুলান কি ?

উত্তর  -মুন্ডাউলগুলান:  আদিবাসীদের ব্যবহৃত শব্দ উলগুলান কথার অর্থ বিরাট তোলপাড় বা বড় আলোড়ন। ভারতে  উপজাতি কৃষক বিদ্রোহের ইতিহাসের অন্যতম বড় ঘটনা ছিল 1899 থেকে  1900 খ্রিস্টাব্দ সময়পর্বে রাঁচীকে  কেন্দ্র করে সংঘটিত মুন্ডাউলগুলান বা  মুন্ডা বিদ্রোহ। মুন্ডাদের উপর জমিদার মহাজন ও ব্রিটিশ কর্মচারীদের শোষণ ও  অত্যাচারের ফলে উলগুলান শুরু হয়েছিল।  বিরসামুন্ডার মৃত্যুর পর এই উলগুলান এর অবসান ঘটে। 

(৭মুন্ডা বিদ্রোহের প্রধান লক্ষ্য কি ছিল ?

উত্তর – মুন্ডা বিদ্রোহের প্রধান লক্ষ্য : অরণ্যবাসী  মুন্ডাদের বিদ্রোহের পিছনে প্রধান লক্ষ্য ছিল নিম্নরূপ –

দিকুদের বিতাড়ন  : বহিরাগত দিকু ও  ঠিকাদার শ্রেণীর লোকেরা অর্থ উপার্জনের জন্য মুন্ডাদের এলাকায় মাদক দ্রব্য বিক্রি শুরু করে। এতে মুন্ডাদের চারিত্রিক অবক্ষয় ঘটলে তারা এই দিকুদের বিতাড়নের জন্য সোচ্চার  হয়ও বিদ্রোহ করে। 

ব্রিটিশ শাসনের অবসান :  ব্রিটিশ আমলে মুন্ডাদের যৌথ কৃষি বা খুৎকাঠি প্রথায়  ভাঙ্গন ধরে।  সরকার জমিতে ব্যক্তিগত কৃষি ব্যবস্থা চালু করলে এবং ঔপনিবেশিক অরণ্য আইন 1878 দ্বারা মুন্ডাদের থেকে অরণ্যের অধিকার কেড়ে  নিলে মুন্ডারা ব্রিটিশ  শাসনের অবসানের জন্য বিদ্রোহ করে।

(৮)বিরসামুন্ডার নতুন ধর্মমত সম্পর্কে কি জানো ? 

উত্তর– বিরসামুন্ডা এক নতুন ধর্ম-দর্শনের উদ্ভাবন করতে গিয়ে নিজেকে ধরতি আবা বলে ঘোষণা করেন। তার একমাত্র লক্ষ্য ছিল স্বাধীন মুন্ডা রাজ্য প্রতিষ্ঠা। এই  উদ্দেশ্যে তিনি বিদেশিদের বহিষ্কার ও খাজনা বন্ধের আহ্বান জানান।

(৯)ভিল কারা ?

উত্তর- ভারতবর্ষের একটি প্রাচীনতম আদিবাসী সম্প্রদায় হল ভিল।  গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের খান্দেশ ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে এই আদিবাসী সম্প্রদায় বসবাস করত।  এরা স্বাধীন ও স্বনির্ভর জীবন-যাপনে অভ্যস্ত ছিল। ভিলরা  বিভিন্ন কারণে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে ,যা ইতিহাসে ভিল  বিদ্রোহ নামে পরিচিত। 

(১০)সন্ন্যাসী ফকির বিদ্রোহের কারণ লেখ। 

উত্তর– 1763 খ্রিস্টাব্দে বাংলাযর  সন্ন্যাসী ও ফকিররা  বৃটিশ  সরকার এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে যা ইতিহাসে সন্ন্যাসী ফকির বিদ্রোহ নামে পরিচিত। এই বিদ্রোহের কারণগুলি হল নিম্নরূপ –

অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় : বাংলায় ব্রিটিশ সরকারের ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থা চালু হলে কৃষিজীবী সন্ন্যাসী ও ফকিরদের  কাছ থেকে অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ে শুরু করে। এর ফলে সন্ন্যাসী ও ফকিররা ক্ষুব্ধ হয়। তীর্থকর : সন্ন্যাসীরা মাঝে মাঝেদলবদ্ধভাবে তীর্থ  করতে যেত  .ব্রিটিশ সরকার তাদের উপর তীর্থ কর আরোপ করলে তারা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে।

(১১)সন্ন্যাসী ফকির বিদ্রোহের মজনু শাহ ও মুসা শাহের  অবদান কি ?

উত্তর- 1770 খ্রিস্টাব্দের ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের সময় পূর্ববঙ্গের ময়মনসিংহ অঞ্চলে সন্ন্যাসী ফকির বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মজনু শাহ ও তার ভ্রাতা মুসাশাহ । ম্যাজিস্টেট হ্যামিল্টনের  বিরুদ্ধে এই  বিদ্রোহ শুরু হয়। নাটোরের জমিদার রানী ভবানী সহ  বিভিন্ন ধনী  জমিদারদের কাছে সাহায্যের আবেদন করে ব্যর্থ হয়েও অনেক কষ্টে লড়াই চালিয়ে যান।  1773 খ্রিস্টাব্দে তার মৃত্যুর পর মুসা শাহ বিদ্রোহ  চালিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন।

(১২)সন্ন্যাসী ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হল  কেন?

উত্তর -সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহের ব্যর্থতার কারনগুলি ছিল নিম্নরূপ – 

(ক)1766 খ্রিস্টাব্দ থেকে সন্ন্যাসী-ফকিরদের মধ্যে আত্মকলহের ফলে বিদ্রোহীরা দুর্বলহয়ে পড়েছিল।

(খ)মজনু  শাহ , ভবানী পাঠকদের মতো নেতারা পরাজিত ও নিহত হলে উপযুক্ত নেতৃত্বের অভাবে  এই বিদ্রোহ তার গতি হারিয়েছিল। 

(১৩)বাংলায় সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহের্ গুরুত্ব কি  ছিল ?

উত্তর-বাংলায় সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহের্ গুরুত্ব গুলি ছিল নিম্নরূপ –  

(ক)সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহ ছিল কোম্পানির শাসনের বিরুদ্ধে  ভারতীয়দের প্রথম বিদ্রোহ। 

(খ)সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও পরবর্তী ব্রিটিশবিরোধী বিদ্রোহ গুলি কে প্রভাবিত করেছিল।  

(১৪)তিতুমীরস্মরণীয় কেন?

উত্তরেতিতুমীর : বাংলায়ওয়াহাবি আন্দোলনের নেতা ছিলেন মীর নিসার আলী ওরফে  তিতুমীর।  তিনি রায়বেরেলি সৈয়দ আহমদ ব্রেলভী সংস্পর্শে এসে ওহাবী আদর্শে অনুপ্রাণিত হন।  তিনি বাংলায় জমিদার, নীলকর সরকারে বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠিত করেন।  তিতুমীর বাঁশের কেল্লা তৈরি করে ব্রিটিশ সৈন্য বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করে মৃত্যুবরণ করেন।

(১৫)ফরাজী কথাটির অর্থ কি ? ফরাজী আন্দোলন বলতে কি বোঝ ?

উত্তর-  ফরাজী কথাটি ফরাজ  শব্দ থেকে এসেছে।  এর অর্থ আল্লাহর আদেশ।

ফরাজি আন্দোলন  :উনিশ শতকে ভারতে মুসলমানদের মাধ্যমে ইসলামের পুনরুজ্জীবনে যে আন্দোলন চলছিল তা বাংলায় ফরাজি আন্দোলন নামে পরিচিত। ফরাজি আন্দোলনের প্রবর্তক ছিলেন হাজী শরীয়তউল্লাহ।

**********একাদশ শ্রেণীর আরো প্রশ্ন-উত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন *****************

**********দ্বাদশ শ্রেণীর আরো প্রশ্ন-উত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন। ***************

*********দশম শ্রেণীর শ্রেণীর আরো প্রশ্ন-উত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন।***************

********WBP এবং KP পরীক্ষার MOCK TEST দিতে এখানে ক্লিক করুন ******************

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *