MADHYAMIK LAST MINUTE SUGGESTION 2022 BANGLA জ্ঞানচক্ষু

WBSSE- SUGGESTIN-BANGLA- GYANCHAKSHU

WBBSE  MADHYAMIK BANGLA  | জ্ঞানচক্ষু 

 

প্রিয় ছাত্র ছাত্রীরা তোমরা যারা ২০২২ সালে মাধ্যমিক দেবে , PRIKSHAPASTUTI .ORG এক্সপার্ট টিমের পক্ষ থেকে প্রথমেই তোমাদের অভিননন্দন  জানাই। এই করোনা পরিস্থিতিতে যাতে তোমরা বাড়িতে বসে সুন্দর ভাবে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারো তার জন্যই আমাদের  এই প্রচেষ্টা। আশা করছি তোমরা আমাদের দেওয়া সাজেশন গুলি ভালো করে পড়লে অবশ্যই মাধ্যমিকে চুড়ান্ত সফলতা লাভ করতে পারবে। আজকে তোমাদের সামনে মাধ্যমিক  বাংলা গল্প ‘ জ্ঞানচক্ষু  ‘ থেকে মাধ্যমিক ২০২২ পরীক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্ব পূর্ন MCQ/SAQ/LAQ প্রশ্ন-উত্তর গুলি তুলে ধরা হল –

বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নোত্তর [MCQ] : [প্রতিটি প্রশ্নের মান-1]

 

(১)তপনের গল্প কোন পত্রিকায় কি নামে ছাপা হয়েছিল ?

উত্তর – সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ‘প্রথম দিন ‘নামে। 

(২) তপনের নতুন মেসো মশাই ছিলেন–

উত্তর -একজন লেখক

(৩)তপনের প্রথম গল্পটি লিখেছিলেন–

উত্তর-হোম টাস্কের  খাতায়  

(৪)তপন মেসোর  মুখে দেখেছিল-– 

উত্তর– কুরুনার ছাপ।

(৫)তপনের গল্পের কথা উঠেছিল।

উত্তর-চায়ের টেবিলে।

(৬)তপনকে এখন কী বলা চলে ?

উত্তর-লেখক

(৭)সূচিপত্রে গল্পের নাম ছি

উত্তর– প্রথম দিন

 

(৮)নতুন মেসো পেশায় ছিলেন –

উত্তর-একজন অধ্যাপক

(৯)ছোট মাসি তপনের চেয়ে বড় ছিল—

উত্তর-বছর আষ্টেকের। 

(১০)তপনের চোখ হয়েছিল

উত্তর-  মার্বেল

(১১)গল্প লিখে  তপন  প্রথম জানায় — 

উত্তর-ছোট মাসি কে। 

(১২) প্রথম দিন গল্পের লেখক হলেন–

উত্তর- শ্রী তপন কুমার রায়।

(১৩)“না কি অতি আহ্লাদে বাক্য হরে গেল?”—এখানে ‘হরে গেল এই শব্দবন্ধটির অর্থ হল—
 
উত্তরঃ হারিয়ে যাওয়া।
 
(১৪)তপনের লেখা গল্পটি নিয়ে চলে গিয়েছিলেন-
 
উত্তরঃ তপনের ছোটো মাসি।
 

(১৫) যাকে দেখে তপনের চোখ মার্বেলের মতন হয়ে গেল-

 
উত্তরঃ  নতুন মেশোমশাইকে
 
(১৬) তপনের চোখ মার্বেল হয়ে যাওয়ার অর্থ- —
উত্তরঃ অবাক হয়ে যাওয়া

 

(১৭)নতুন মেসোমশাই ছিলেন একজন-

 
উত্তরঃ লেখক এবং অধ্যাপক 

 

(১৮)“কথাটা শুনে _________ চোখ মার্বেল হয়ে গেল!” (শূন্যস্থানে শব্দ বসাও)

 
উত্তর – তপনের 

 

(১৯)“আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম।”—কথাটি বলেছেন-

 
উত্তর-  মেজো কাকু

 

(২০) জ্ঞানচক্ষু গল্পে, জহুরি বলতে যাকে বোঝানো হয়েছে তিনি হলেন-

 
উত্তরঃ নতুন মেসো  .

 

(২১)ছোট মেসো তপনদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন সঙ্গে নিয়েৃ-

 
উত্তরঃ সন্ধ্যাতারা পত্রিকা

 

(২১)তপনের লেখা গল্প তার মেসোমশাইকে দিয়েছিল—

 
উত্তরঃ ছোটোমাসি   
 

অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর : [প্রতিটি প্রশ্নের মান-1]

 

(১) “তিনি নাকি বই লেখেন “–তিনি কে ?

উত্তর: তিনি হলেন তপনের নতুন মেসোমশাই। 

 

(২) “বাবা, তারে পেটে পেটে এত”-কে কোন প্রসঙ্গে একথা বলেছিলেন ?

 

   উত্তরঃ আশাপূর্ণাদেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু গল্পে তপন যে একটি আস্ত গল্প লিখে ফেলেছে এবং তার ছোটো মেসো ছাপিয়ে দেবেন—তা বাড়ির কেউ বিশ্বাস করেননি, বরং তাকে নিয়ে নানারকম ঠাট্টা-তামাশা হয়েছে। অবশেষে তপনের গল্প প্রকাশিত হয়ে যাওয়ায় তার মা তাকে উপরোক্ত কথাটি বলেছিলেন।

 

(৩) “আর তোমরা বিশ্বাস করবে কিনা জানি না…”—এখানে কোন্ ঘটনার কথা বলা হয়েছে?

 

  উত্তরঃ এক জায়গায় বসে তপনের একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলার প্রসঙ্গে উপরোক্ত মন্তব্যটি করা হয়েছে।

 

(৪) “যেন নেশায় পেয়েছে!”—এখানে কোন্ নেশার কথা বলা হয়েছে?

 

   উত্তরঃ তপনের গল্প লেখার নিরলস চেষ্টার কথা এখানে বলা হয়েছে। হোম টাস্ক ফেলে রেখে, লুকিয়ে লুকিয়েও সে গল্প লিখে গেছে।

 

(৫) “শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন”—তপনের সংকল্প কী ছিল ?

 

  উত্তরঃ তপন সংকল্প করেছিল যে, যদি কখনো লেখা ছাপাতে হয়, তাহলে তপন নিজে গিয়ে তা পত্রিকার অফিসে জমা দেবে।

 

(৬) কেন তপন হঠাৎ একটা ভয়ানক উত্তেজনা অনুভব করেছিল ?

 

   উত্তরঃ গ্রীষ্মের নিথর দুপুরে সিঁড়িতে নিরিবিলিতে একাসনে বসে একটা আস্ত গল্প শেষ করে তপন। সেটা পড়ার পরে ভয়ানক উত্তেজনায় তপন লেখক হয়ে ওঠার। অনুভূতি অনুভব করেছিল।

 

(৭)“কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল।”—কোন্ কথা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল?

 

  উত্তরঃ তপন তার বালক বয়সে কোনোদিন কোনো লেখককে স্বচক্ষে দেখেনি। কবি-লেখকরাও যে আমাদের মতো সাধারণ বাস্তব জগতের প্রাণী এ কথাই তপন জানত না। তাই সে যখন শুনল যে,তার সদ্যবিবাহিতা ছোটোমাসির স্বামী অর্থাৎ তার নতুন মেসো একজন লেখক—তখন বিস্ময়ে তার চোখ মার্বেলের মতো হয়ে গেল।

 

(৮)লেখালেখি ছাড়া তপনের নতুন মেসোর পেশা কী ?

 

    উত্তরঃ লেখালেখি ছাড়া তপনের নতুন  মেসো কলেজের একজন অধ্যাপক।

 

(৯) “তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন” —দিনটিতে কোন্ উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছিল?

 

   উত্তরঃ তপনের জীবনে প্রথমবার তার লেখা গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ নামক পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। কিন্তু ছাপার পর দেখা যায় যে, তার গল্পের অনেকাংশই লেখক মেসো সংশোধনের নামে নতুন করে লিখেছিলেন। এই ঘটনায় ব্যথিত তপনের মনে হয়েছিল, আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন।
 
 

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর : [প্রতিটি প্রশ্নের মান-3]

 

(১) এ “বিষয়ে সন্দেহ ছিলপনের।”—কোন বিষয়ে কেন তপনের সন্দেহ ছিল ?

 

   উত্তরঃ তপনের সন্দেহ নিরশন : আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু নামক গল্প থেকে অংশটি গৃহীত হয়েছে। তপন জানত না যে, লেখকরা তার বাবা, কাকা কিংবা মামার মতো একজন সাধারণ মানুষ। তার সন্দেহ দূর হয় ছোটো মেসোমশাইকে দেখে। তিনি একজন লেখক। কিন্তু অন্য সাধারণ মানুষের মতো দাড়ি কামান। সিগারেট খান, খাবার অতিরিক্ত হলে ফিরিয়ে দেন, স্নান করেন, ঘুমোন। এমনকি আর সকলের মতো খবরের কাগজের খবর নিয়ে গল্প কিংবা তর্ক করেন। অবসর সময়ে সিনেমা দেখেন কিংবা বেড়াতেও বের হন। এসব দেখে তপনের সন্দেহ দূর হয় ও সে বিশ্বাস করে লেখকরাও সাধারণ মানুষ।

 

(২)রত্নের মূল্য জহুরির কাছে। রত্ন এবং জহুরি বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

 

   উত্তরঃ রত্ন ও জহুরি : আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু নামাঙ্কিত গল্পে রত্ন বলতে তপনের লেখা গল্পটিকে এবং জহুরি বলতে তপনের ছোটো মেসোকে বোঝানো হয়েছে।
তপন যে গল্পটি লিখেছিল তা দেখে তার ছোটো মাসি যথেষ্ট ভালো বললেও প্রকৃত বিচারকের রায় দরকার ছিল তপনের। আর এই বিষয়ে লেখক হিসাবে পরিচিত তার ছোটোমেসো যে যোগ্য ব্যক্তি তাতে কারো সন্দেহ থাকতে পারে না। তাই রত্নের মূল্য ও গুরুত্ব যেমন একজন জহুরি সবথেকে ভালো বোঝেন। তেমনই তপনের গল্পের কদরও ছোটোমেসোই বুঝতে পারবে।

 

(৩) তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনে সবচেয়ে দুঃখের দিন। কী কারণে তপনের এরূপ মনে হয়েছিল ?

 

   উত্তরঃ তপনের মনে হওয়ার কারণ : তপনের প্রথম লেখা গল্পটি নতুন মেসোমশাই-এর সুপারিশে সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। ছাপা গল্পটি পাঠ করে তপন। অবাক হয়ে যায়। কারণ তার নতুন মেসোমশাই গল্পটিকে ঠিকঠাক করতে গিয়ে সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়েছেন। ছাপানো গল্পের মধ্যে তপন নিজেকে খুঁজে পায় না। তার মনে হয় অন্য কারোর লেখা ছাপা হয়েছে। শ্রী তপন কুমার রায় নাম দিয়ে। নিজের সৃষ্টিকে পরিবর্তিত হতে দেখে তপনের মন বেদনায় ভরে ওঠে।

 

(৪)‘শুধু এ দুঃখের মুহর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন।” কোন দুঃখের মুহুর্তের কথা বলা হয়েছে। তপন কী সংকল্প নিয়েছিল ?

 

   উত্তরঃ দুঃখের মুহূর্ত : সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় নিজের ছাপা গল্প পড়তে গিয়ে যখন তপন বুঝল গল্পটি ছোটো মেসোমশাই আগাগোড়া কারেকশান করে দিয়েছেন। নিজের গল্পে নিজেকে না পেয়ে তপন খুব দুঃখ পেয়েছিল।
তপনের সংকল্প :এই দুঃখের মুহূর্তে তপন সংকল্প করে, যদি কখনো নিজের লেখা ছাপতে দেয়, তবে কারো মাধ্যমে নয়, নিজে গিয়ে পত্রিকা অফিসে দিয়ে আসবে। যদি তাতে তার গল্প ছাপা না হয় তবুও। কারণ কেউ সুপারিশ করে তার লেখা ছেপে দিয়েছে এমন কথা যেমন অপমানের, তেমনই কষ্টের। নিজের লেখা পড়তে গিয়ে অন্যের লেখা পড়া খুবই কষ্টকর।

 

(৫)ক্রমশ ও কথাটা ছড়িয়ে পড়ে।”—কোন কথা, ওই কথা ছড়িয়ে পড়ায় কী ঘটেছিল?

 

   উত্তরঃ কারেকশানের কথা : তপনের প্রকাশিত গল্পটি আসলে ছোটো মেসোমশাই কিছুটা কারেকশান করে দিয়েছেন—এই কথাটা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে বাড়িতে।
মেসোর মহত্তের কথা : ছোটো মেসোমশাই-এর কারেকশানের কথা বাড়ির সবাই জেনে গেলে তপনের গল্প লেখার কৃতিত্ব খানিকটা কমে যায়। তপনের বাবা, কাকা, ছোটো মেসোমশাই-এর হাতের ছোঁয়াকে বেশি গুরুত্ব দিতে চান। সেদিন পারিবারিক আলোচনায় তপনের গল্পের কথা উঠলেও নতুন মেসোর মহত্ত্বের কথা ঘুরে ফিরে আসে।

 

(৬) “বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের”—কখন এবং কেন তপনের এরকম অনুভূত হয়েছিল?

 

   উত্তরঃ তপনের অনুভূতি : পুজোর ছুটির অনেকদিন পর ছোটোমাসি আর মেসোমশাই হাতে একখানা সন্ধ্যাতারা পত্রিকা নিয়ে তপনদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। সেই দিন তপনের এইরকম অনুভূতি হয়েছিল।
সাহিত্য রচনা এবং প্রকাশ সম্পর্কে তপনের দারুণ কৌতুহল ছিল।  তাই ছােটো মেসোমশাই তার লেখা গল্প সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপানোর জন্য যখন নিয়ে গিয়েছিলেন তখন তপন উৎসাহিত হয়। তবে অপেক্ষা করতে করতে তপন গল্প। প্রকাশের আশা ছেড়ে দিয়েছিল। ঠিক এই সময় ছোটো মাসি আর মেসোমশাই সন্ধ্যাতারা পত্রিকা নিয়ে তাদের বাড়িতে আসায় তার গল্প প্রকাশের আবেগ উৎকণ্ঠায় তপনের এরকম অনুভূতি হয়েছিল।

 

(৭)পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে, কার মধ্যে কেন এমন ভাবনার উদয় হয়েছিল ?

 

   উত্তরঃ ভাবনার উদয় : গল্পের প্রধান চরিত্র তপনের মধ্যে এমন ভাবনার উদয় হয়েছিল। তপনের লেখা গল্প ছাপা হয়ে প্রকাশিত হবে। এটা ছিল তপনের কাছে কল্পনার অতীত। ফলে মেসোর হাতে সন্ধ্যাতারা পত্রিকা দেখে তপনের বুকের রক্ত ছলকে ওঠে। তবে কী সত্যিই তার গল্প ছাপা হয়েছে এবং সে লেখা হাজার হাজার ছেলের হাতে ঘুরবে। তপনের কাছে এটা একটা অলৌকিক ঘটনা বলে মনে হয়।

 

(৮) ‘যেন নেশায় পেয়েছে’-কীসের নেশা, কীভাবে তাকে নেশায় পেয়েছে?

 

   উত্তরঃ লেখার নেশা : আশাপূর্ণা দেবীর জ্ঞানচক্ষু গল্পে তপনের গল্প লেখার নেশার কথা বলা হয়েছে।
   লেখার প্রতি আসক্তি : তপন একজন সাহিত্য প্রেমী বালক। গল্প লেখা ও সেগুলি ছাপা ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে তার প্রচণ্ড কৌতূহল ছিল। মাসির বিয়ের পর লেখক মেসোমশাইকে খুব কাছ থেকে দেখতে পায় এবং গল্প লেখার রহস্যও তার কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়। তপন একটি গল্প লিখে ছোটোমাসিকে দেখালে মাসি সেটা মেসোমশাইকে দেখায়। তখন তিনি  সেটা পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এতে আরও উৎসাহিত হয়ে তপন একের পর এক গল্প লেখার নেশায় মগ্নহয়ে ওঠে।

 

(৯)‘সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়’—সারা বাড়িতে ?শোরগোল পড়ে যাওয়ার কারণ কী ?

 

   উত্ত প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে তপনের লেখা গল্প। ছেপে বেরোলে সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়। জ্ঞানচক্ষু গল্পে দেখা যায়—তপনের কাচা হাতের গল্পটিকে মেসো সংশোধনরঃ শোরগোল পড়ে যাওয়ার কারণ : করে নিজের প্রভাব খাটিয়ে সন্ধ্যাতারা সম্পাদককে দিয়ে প্রকাশ করিয়েছেন। জীবনের প্রথম গল্প ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হলে অনাবিল উত্তেজনায় তপন আনন্দে মাতোয়ারা হয়। আর সেই খবরে সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়।
 
 

ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্ন -উত্তর [প্রতিটি প্রশ্নের মান  – ৫ ]

 

 

(১)’রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই।’–‘ রত্ন’ ও ‘জহুরী ‘বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?উদ্ধৃতিটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর– আশাপূর্ণা দেবীর জ্ঞানচক্ষু গল্পে উল্লেখিত উদ্ধৃতিতে ‘ রত্ন’ বলতে  মূল্যবান পাথর কে  এবং  ‘জহুরী ‘বলতে রত্ন বিশেষজ্ঞ কে বুঝানো হয়েছে।জ্ঞানচক্ষু গল্পে ‘রত্ন’ বলতে  তপনের লেখা গল্প আর ‘জহুরী’ বলতে তপনের লেখক মেসোকে  বুঝানো হয়েছে। এক কথায় তপনের লেখা গল্পের মূল্য একজন লেখক অর্থাৎ তপনের নতুন মেসো মশাই বুঝতে পারবেন ।

তপন ছোটবেলা থেকেই অনেক গল্প পড়েছে  ও শুনেছে । তাই গল্প জিনিসটা যে কি তার অজানা নয় । সে শুধু এটাই জানত না যে মানুষেরাই  এই গল্প লিখতে পারে । তার ধারণা ছিল গল্প যারা লেখে তারা আকাশ থেকে পড়া কোন জীব, যারা অন্য গ্রহের বাসিন্দা কিন্তু নিজের লেখককে চাক্ষুষ দেখে তার সেই ভুল ভাঙ্গে ,তার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায় অর্থাৎ  বোধোদয় হয় যে – লেখকেরা  বাবা, কাকা, আমাদের মতই একজন সাধারন মানুষ ।লেখক মেসোর  দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তপনের  লেখক হয়ে ওঠার বাসনা জন্মায়। দুপুরবেলা সবাই যখন চুপচাপ তখন তপন হোম তাস্কের  খাতা নিয়ে তিনতলার সিঁড়িতে বসে আস্ত  একটা গল্প লিখে ফেলে । সমবয়সীদের মত সাধারন বিষয় এর পরিবর্তে নিজের বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি নিয়ে গল্প তৈরি করে ।লেখা শেষ করে নিজেই শিহরিত, রোমাঞ্চিত ও পুলকিত হয়। উত্তেজনাবশে ছোট মাসির হাত ঘুরে তা  লেখক মেসোর  হাতে পড়ে। ছোট মেসো তপনের লেখার সুখ্যাতি করলো তপন  মনে করে একজন লেখকের লেখার প্রকৃত মূল্যায়ন একজন প্রকৃত লেখকই করতে পারে । তাই বলা হয়েছে রত্নের  মূল্য জহুরির কাছেই ।

(২)জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের —- জ্ঞানচক্ষু কি  তপনের প্রকৃত জ্ঞানচক্ষু কিভাবে খুলে গিয়েছিল।

উত্তর-আশাপূর্ণা দেবীর লেখা জ্ঞানচক্ষু গল্পে জ্ঞানচক্ষু বলতে জ্ঞান রূপ চক্ষু বা মানুষের অন্তর্দৃষ্টি কে বোঝানো হয়েছে ,যার সাহায্যে মানুষ প্রকৃত সত্যকে যাচাই করে নিতে পারে।

শিশুমনের কল্পনায় তপনের মনে হয় লেখকেরা আকাশ থেকে পড়া কোন জীব বা অন্য গ্রহের বাসিন্দা  ।কিন্তু নতুন লেখ মেসোকে  দেখে তার সেই ধারণা বদলে যায় । সে জানতে পারে মেসো  অনেক বই লিখেছেন এবং তা ছাপানো হয়েছে ।তাই জলজ্যান্ত একজন লেখককে চাক্ষুষ দেখার পর তপন  বুঝতে পারে আসলে মানুষই গল্প লেখে । যারা বাবা, কাকা, আমাদের মতই নিছক সাধারণ মানুষ । এভাবেই তপনের প্রাথমিক জ্ঞানচক্ষু  খোলে ।

লেখক মেসো কে দেখেই তপনের গল্প লেখক হওয়ার বাসনা প্রবল হয়। আর তা থেকেই হোমটাস্কের  খাতায় বিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা ,অনুভূতি নিয়ে গল্প লিখে ছোট মাসি কে দেখায় ।ছোট মাসির সুপারিশে  এবংছোট মেসোর   সহায়তায় তা  সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপানো হয়। তপনের গল্প কারেকশনের  নামে ছোট মেসো আমূল বদলে দিয়েছে , তপন পড়তে গিয়ে তা  জানতে পারে। তখন লজ্জায় ,হতাশায়, কষ্টে  তপন প্রতিজ্ঞা করে যে, অন্যের সুপারিশ ছাড়াই  সে নিজের লেখা নিজেই ছাপতে দেবে । এভাবেই তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে যায়।

 

 

(৩)’ শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন ‘  — দুঃখের মুহূর্তে বলতে কি বুঝানো হয়েছে ? তপন কোন সংকল্প গ্রহণ করেছিল তা সংক্ষেপে লেখ।

 

উত্তর– বিখ্যাত কথা সাহিত্যিক এবং ছোটগল্প লেখিকা আশাপূর্ণা দেবীর জ্ঞানচক্ষু গল্পে লেখক সম্পর্কিত ধারণার  অবসানে উদ্যোগী তপন হোমটাস্কের  এর খাতায় একটি গল্প লেখে ।গল্পটার বিষয় ছিল তার বিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি। ছোট মাসির সাহায্যে সেই লেখা তার লেখক মেসোর  হাতে পৌঁছায়। তিনি তপনের লেখার  তারিফ করেন এবং সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় কারেকশন করে ছাপানোর জন্য নিয়ে যান ।এদিকে তপন বাড়ি ফিরে  দিন গুণতে থাকে ।  তপন ভাবে তার লেখা আঁটোসাঁটো ছাপার অক্ষরে বেরোবে। হাজার হাজার ছেলের হাতে তা  ঘুরবে ।এটা তার কাছে অলৌকিক ঘটনা বলেই মনে হয় ।হঠাৎ একদিন  মাসি ও মেসো তপনের গল্প সম্বলিত পত্রিকা নিয়ে তপন দের বাড়িতে উপস্থিত হয়। বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের ।মনে হয় তার জীবনের সবচেয়ে সুখের দিন এটি ।বাড়ির সকলের নানান রকমের প্রশংসা শুনে তপন লজ্জিত হয়। কিন্তু নিজের হাতে  গল্প পড়তে বসে তপনের তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়। লজ্জায় ঘৃণায় অপমানে তপন চরম আঘাত পায়। সে দেখে কারেকশনের নামে ছোট মেসো তার পুরো গল্পটি পাল্টে দিয়েছে ।তাই গভীর দুঃখে তপন সংকল্প করে যদি  কখনও লেখা ছাপা দেয় তো তপন  নিজেই গিয়ে  দেবে ।নিজের কাঁচা  লেখা ছাপানো হলে হবে ,না হলে না হবে- কিন্তু তবু  নিজের গল্প পড়তে বসে যেন অন্যের লেখা গল্পের লাইন তপনকে পড়তে না হয়।

 

(৪)প্রশ্ন জ্ঞানচক্ষু গল্প অবলম্বনে তপনের চরিত্র বিশ্লেষণ করো।

 উত্তর-আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপন । গল্পে তপনের চরিত্রটি সবসময়ের মতোই আশা-আকাঙ্ক্ষা স্বপ্ন- স্বপ্নভঙ্গ ‘কল্পনা- বাস্তব এবং আনন্দ- অভিমানের টানাপোড়নে লেখা। তার চরিত্রের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি হল—

 কল্পনাপ্রবনতা  —  শিশুমনের স্বাভাবিক প্রবণতা হিসাবে তপন একজন কল্পনাপ্রবণ শিশু ।লেখক সম্পর্কে তার ধারণা ছিল যে , লেখকেরা আকাশ থেকে পড়া জীব, তারা অন্য গ্রহের বাসিন্দা ।অবশ্য লেখক মেসো কে দেখে তার চোখ মার্বেল এর মত গোল হয়ে গেলে সে বুঝতে পারে লেখকেরা তার বাবা কাকা মামাদের মতোই সাধারণ মানুষ।

 

শিশুর সরলতা–ছোট মেসো  যখন তপনের গল্পের তারিফ করে বলে তপনের গল্প দিব্যি হয়েছে ।সেই সঙ্গে বলে গল্প ছাপিয়ে এনে দেবে। একথা তপন সহজেই বিশ্বাস করে এবং মনে মনে মেসোর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে ।তপনের মনে হয় রত্নের মূল্য জহুরিই বুঝে ।

 

উৎসাহী মানসিকতা–লেখক মেসোকে দেখে   তপনের মনে লেখক হওয়ার বাসনা জন্মায়। তপনকে গল্প লেখা নিয়ে বাড়িতে নানা ঠাট্টা বিদ্রুপ তীর্যক বাক্য সহ্য করতে হয়। কবি-সাহিত্যিক কথাশিল্পী বলে সকলে  ব্যঙ্গ করলেও তপনের উৎসাহে কোনো ঘাটতি দেখা যায়নি, বরং সে আরো দু’তিনটি গল্প লেখে ফেলে।

আত্মমর্যাদাবোধ–তপনের লেখা গল্প মেসো কারেকশনের নামে  সম্পূর্ণ বদলে দিলে তপনের মনে রাগ ও  অভিমানের সৃষ্টি হয়। গল্প পড়ে  দুঃখে তপনের চোখে জল আসে। তার মনে হয় আজকের দিনটা তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন। তাই সেই দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করে যে, এরপর  নিজের লেখা নিজে  ছাপাতে দেবে কিন্তু কারো অপমান সহ্য করবে না।

 
 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *