বাড়ির কাছে আরশিনগর কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর

বাড়ির কাছে আরশিনগর

একাদশ শ্রেণীর বাড়ির কাছে আরশিনগর কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর। প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা তোমরা  যারা এবছর  একাদশ শ্রেণীর ফাইনাল পরীক্ষা দেবে তোমাদের সকলকে WWW.PARIKSHAPRASTUTI.ORG এক্সপার্ট টিমের পক্ষ থেকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। তোমরা যাতেএকাদশ শ্রেণীর বাংলা  বিষয়ে ১০০% নাম্বার পেতে পারো তার জন্য আমাদের টীম তোমাদের জন্য বিষয় ভিত্তিক chapter wise সাজেশন নিয়ে আসবে ধারাবাহিক ভাবে। আজকে  একাদশ শ্রেণীর বাড়ির কাছে আরশিনগর কবিতার প্রশ্ন ও উত্তরের সাজেশন  তুলে ধরা হল। আমাদের এই প্রচেষ্টা ভালো লাগলে তোমাদের বন্ধুদের মাঝে আমাদের এই ওয়েব পেজটি শেয়ার  করবে। বাড়ির কাছে আরশিনগর কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর

একাদশ শ্রেণীর বাড়ির কাছে আরশিনগর কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর

বাংলা কবিতা ”বাড়ির কাছে আরশিনগর”

বাড়ির কাছে আরশিনগর 
 লালন ফকির 
 
আমি একদিনও না দেখিলাম তারে
আমার বাড়ির কাছে আরশিনগর
ও এক পড়শি বসত করে।
গ্রাম বেড়িয়ে অগাধ পানি
ও তার নাই কিনারা নাই তরণী পারে।
আমি বাঞ্ছা করি দেখব তারি
আমি কেমনে সে গাঁয় যাই রে।
বলব কি সেই পড়শির কথা
ও তার হস্ত-পদ-স্কন্ধ-মাথা নাই রে।
ও সে ক্ষণেক থাকে শূন্যের উপর
আবার ক্ষণেক ভাসে নীরে।
পড়শি যদি আমায় ছুঁত
আমার যম-যাতনা যেত দূরে।
আবার সে আর লালন একখানে রয়
তবু লক্ষ যােজন ফাঁক রে।

বাড়ির কাছে আরশিনগর কবিতার মূল বিষয় বস্তু

আরশি’ শব্দের অর্থ আয়না। কিন্তু লালন তার গানে ‘আরশিনগর’ বলতে মনকে বুঝিয়েছেন। কারণ, মনের মধ্যেই চারপাশের জগৎ প্রতিফলিত হয়। সেখানে কবি এক পড়শির অস্তিত্বকে খুঁজে পেয়েছেন | এই পড়শিই হল বাউলসাধনার ঈশ্বর, যাকে তারা মনের মানুষ বলে মনে করেন। কিন্তু বাউলসাধনায় এই পড়শির সন্ধান পাওয়া বা তাঁকে  লাভ করা খুব সহজ নয়। তিনি যেখানে আছেন, তার চারপাশে আছে অতি গভীর জলরাশি। কবি মানুষের জাগতিক আশা-আকাঙ্ক্ষা ও বিষয়বাসনা ইত্যাদিকে এই জলরাশির প্রতীক দ্বারা বােঝাতে চেয়েছেন। সেই পড়শির কাছে যাওয়ার উপযুক্ত কোনাে তরণি বা উপায়ও আবার নেই। তার থেকেও বড়াে কথা, এই পড়শি বা আত্মতত্ত্ব-এর কোনাে স্পষ্ট চেহারা হয় না, কারণ পড়শির হাত-পা -কাঁধ মাথা কিছুই নেই। অর্থাৎ, বাউলদের ঈশ্বর যে নিরাকার এ কথার মধ্য দিয়ে লালন তা-ই বােঝাতে চেয়েছেন। অতএব সেই ‘পড়শি’ শুধুই উপলদ্ধির জগতে অবস্থান করেন। তাঁকে  কখনও বােঝা যায়, কখনও বােঝা যায় না। অথচ তাঁর  সন্ধান পেলেই মানুষের সব জীবনযন্ত্রণার অবসান ঘটত। কিন্তু তার সঙ্গে যে দূরত্ব তা ঘােচার নয়, কবির কথায় সে হল লক্ষ যােজনের দূরত্ব।

বাড়ির কাছে আরশিনগর কবিতার সঠিক উত্তর নির্বাচনধর্মী প্রশ্ন উত্তর (MCQ )

1)”আমার বাড়ির কাছে আরশীনগর ” , ‘ আরশীনগর ’ শব্দের ভাব – অর্থ হলো—  
[A]পরিষ্কার নগর
[B]দেবভূমি
[C]শহর
[D]ছবির মতো নগর 

Show Ans

Correct Answer: [B]দেবভূমি

2)”সে আর লালন একখানে রয় ” – সে কে ? 
[A]কবির বন্ধু 
[B]কবির বন্ধু 
[C]ভগবান
[D]মনের মানুষ

Show Ans

Correct Answer:[D]মনের মানুষ

3)”ও তার হস্ত – পদ স্কন্ধ – মাথা নাই রে ! ” বলতে বোঝায় 
[A]ঈশ্বর নিরাকার 
[B]মহাশূন্য 
[C]নিরাকার মানুষ 
[D]কোনোটাই নয় । 

Show Ans

Correct Answer:[A]ঈশ্বর নিরাকার 

4)”আমি একদিনও না দেখিলাম তারে ; ” — কাকে ? 
[A]মনের মানুষকে 
[B]পড়শির আরশীনগরকে 
[C]আরশীনগরের পড়শিকে
[D]পড়শিকে 

Show Ans

Correct Answer:[C]আরশীনগরের পড়শিকে

5)”গ্রাম বেড়িয়ে অগাধ পানি । ” এখানে ‘ বেড়িয়ে ’ শব্দের অর্থ হলো— 
[A]পার হয়ে
[B]ঘুরে ঘুরে 
[C] বেষ্টন করে 
[D]মধ্যে

Show Ans

Correct Answer:[C] বেষ্টন করে 

6)পড়শি দেখতে কেমন ? 
[A]তার হাত , পা , কাঁধ , মাথা নাই
[B]তার চোখ নাই 
[C]তার পা নাই 
[D]তার চুল নাই 

Show Ans

Correct Answer:[A]তার হাত , পা , কাঁধ , মাথা নাই

7)পড়শি কোথায় , কীভাবে বাস করে ? 
[A]সে জলে থাকে 
[B]সে মহাকাশে থাকে 
[C]সে সমুদ্রপোকূলে থাকে 
[D]সে শূন্যেও থাকে আবার জলেও থাকে

Show Ans

Correct Answer:[D]সে শূন্যেও থাকে আবার জলেও থাকে

8)’পড়শী ’ ছুঁলে কী হবে ? 
[A]যম – যাতনা দূরে যাবে 
[B]ধন্য হবে 
[C]আরোগ্য লাভ করবে 
[D]জ্ঞানচক্ষু খুলবে

Show Ans

Correct Answer:[A]যম – যাতনা দূরে যাবে 

9)’পড়শী ’ কোথায় বাস করে ?
[A]রূপনগরে 
[B]মায়াপুরীতে 
[C] যক্ষপুরীতে
[D]আরশিনগরে

Show Ans

Correct Answer:[D]আরশিনগরে

10)লালন ও পড়শির মাঝে কতখানি ফাঁক ? 
[A]কোটি মাইল 
[B]লক্ষ যোজন
[C]লক্ষ মিটার 
[D]হাজার যোজন 

Show Ans

Correct Answer:[B]লক্ষ যোজন

11)”জমি যাতনা সকল জেট দূরে “-জমি যাতনা বলতে কি বোঝানো হয়েছে ?
[A]পার্থিব দু:খ -শোক 
[B]মৃত্যুকালীন সকল যন্ত্রনা 
[C]উদরের  জ্বালা 
[D]প্রতিবেশীর অত্যাচার 

Show Ans

Correct Answer:[A]পার্থিব দু:খ -শোক 

12)পড়শীকে কবি কতদিন দেখেন নি ? 
[A]একবেলা 
[B]কোনোদিন দেখেন নি 
[C]দুই দিন 
[D]একদিন 

Show Ans

Correct Answer:[B]কোনোদিন দেখেন নি 

বাড়ির কাছে আরশিনগর কবিতার সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন উত্তর (SAQ ১ নাম্বারের )

১.‘ বাড়ির কাছে আরশীনগর ‘ কবিতায় কবির কোন মূল অভিপ্রায় ব্যক্ত হয়েছে ? 

Ans: ‘ বাড়ির কাছে আরশীনগর ’ কবিতায় কবির মূল অভিপ্রায় তথা পরমপুরুষ বা দেহান্তৰ্গত , চালিকাশক্তি অনুসন্ধানের কথা ব্যক্ত হয়েছে । 

২.“ যে ক্ষণেক থাকে শূন্যের উপর ক্ষণেক ভাসে নীরে ” – অর্থ কী ? 

Ans: ঈশ্বর বা মনের মানুষের উপস্থিতি সর্বত্র , সেই কথাই এখানে বলেছেন কবি । 

৩.“ আমি একদিনও না দেখিলাম তারে ” –কবি কাকে , কেন একদিনও দেখতে পাননি ? 

Ans: কবি লালন ফকির ‘ পড়শী ‘ বা মনের মানুষকে একদিনও দেখতে পাননি । পড়শির স্বরূপ নিরাকার , তাই কবি তাঁকে দেখতে পাননি । 

৪.“ বলবো কী সেই পড়শীর কথা ” —কথাগুলি কে বলেছেন ? 

Ans: বাড়ির কাছে আরশীনগর ‘ কবিতায় স্বয়ং কবি লালন ফকির উপরিউক্ত কথাগুলি বলেছেন । 

৫.“ মনে বাঞ্ছা করি দেখব তারে ” –কে , কাকে দেখার বাসনা প্রকাশ করেছেন ? 

Ans: প্রশ্নোধৃত পঙ্ক্তিটিতে বাউল কবি লালন ফকির পড়শিকে দেখার বাসনা প্রকাশ করেছেন । 

৬.“ আমি কেমনে সে গায় যাই রে । ” বক্তার যাওয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধা কোথায় ? 

Ans: বক্তা যে গ্রামটিতে যেতে চান সেই গ্রামটি কূলকিনারহীন অগাধ পানিতে পরিবেষ্টিত । সেখানে কোনো নৌকাও পৌঁছতে পারে না , এজন্যই বক্তা সেখনে যেতে পারেননি । 

৭.“ তবু লক্ষ যোজন ফাক রে । ” অর্থ কী ? 

Ans: লালন বলেছেন , ঈশ্বর বা মনের মানুষ তাঁর দেহে অবস্থান করলেও তাঁকে ধরা বা পাওয়া কঠিন ।

৮.“ আমার যম যাতনা যেত দূরে ” — ‘ যম যাতনা ‘ শব্দবন্ধে কী বোঝানো হয়েছে ? 

Ans: সাধক লালন ফকির মরণ যন্ত্রণা বা মৃত্যুভয়ের কথা বোঝানোর জন্যই ‘ যম – যাতন ‘ শব্দবন্ধের প্রয়োগ করেছেন ।

৯. কবিতায় ‘ক্ষণেক’ শব্দটি ব্যবহারের তাৎপর্য কী?

উত্তর: কবিতায় ‘ক্ষণেক’ শব্দটি ব্যবহারের মাধ্যমে ঈশ্বরের কোনাে এক স্থানে স্বল্পক্ষণের স্থায়িত্বকে বােঝানাে হয়েছে। ঈশ্বরের বাস এক জায়গায় নয়, কখনও তার অবস্থান শূন্যের ওপর, আবার কখনাে বা নীরে।

১০. “আবার সে আর লালন একখানে রয়’—একখানে বলতে কোন্‌খানের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: ‘একখানে’ বলতে কবি একই দেহাবয়ব বা শরীরের মধ্যে লালন এবং তার মনের মানুষের বাস করাকে বুঝিয়েছেন।

বাড়ির কাছে আরশিনগর কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (L AQ ) ৫ নাম্বারের

১) “আমি বাঞ্ছা করি দেখব তারি”বক্তা কাকে দেখতে চান? কীভাবে তাঁর দর্শন পাওয়া যাবে ?                                                                              ১+8 

উত্তরঃ লালন ফকির তার বাড়ির কাছে আরশিনগর’ কবিতায় তার মনের মানুষ’ অর্থাৎ ‘পড়শি’-কে দেখতে চেয়েছেন।

 কবি একজন বাউলসাধক হিসেবে জানেন ঈশ্বর রয়েছেন মনের ভিতরে। ‘মনের মানুষ হিসেবেই তার উপস্থিতি। কিন্তু বিষয়বাসনায় কাতর মানুষের পক্ষে তার সাক্ষাৎ পাওয়া সহজ কথা নয়। কোনাে মন্ত্র-তন্ত্র, সাধনপদ্ধতি নয়, শুধু আত্মােপলদ্ধির সাহায্যেই ‘মনের মানুষ’, যাঁকে কবি ‘পড়শি’ বলে উল্লেখ করেছেন তার দেখা পাওয়া যেতে পারে বলে কবি মনে করেছেন। তার সাক্ষাৎ পেলে পার্থিব জীবনের সব দুঃখ-যন্ত্রণা থেকে কবির মুক্তি ঘটবে। কিন্তু তার জন্য প্রয়ােজন বিষয়াসক্তিকে সম্পূর্ণ দূর করে শুদ্ধস্বভাবের অধিকারী হওয়া। “গ্রাম বেড়িয়ে অগাধ পানি”—এই পানি’ অর্থাৎ বিষয়বাসনাকে অতিক্রম করলেই ‘মনের মানুষ’ বা ‘পড়শি’র সান্নিধ্য পাওয়া সম্ভব। লােভ-মােহ, কামনা বাসনা আমাদের মনকে চারপাশ থেকে ঘিরে থাকে। এর থেকে মুক্ত হতে পারলেই চিত্তশুদ্ধি ঘটা সম্ভব। আর চিত্তশুদ্ধি ঘটলেই মনের ভিতরে থাকা অধর মানুষ’ বা পড়শির দেখা পাওয়া সম্ভব হয়। নিরাকার ঈশ্বর পরমভক্তের শুদ্ধ চেতনার মধ্য দিয়েই তার কাছে ধরা দেন।

২) “পড়শি যদি আমায় ছুঁত/ আমার যম-যাতনা সকল যেত দূরে।”—পড়শি’ কে? তাকে ছুঁলে কীভাবে ‘যম-যাতনা’ চলে যেত ?                                                       ১+8 

 উত্তর: লালন ফকির তার বাড়ির কাছে আরশিনগর’ কবিতায় ‘পড়শি’ বলতে পরমাত্মা বা ঈশ্বরের কথা বলেছেন। তিনি নিরাকার। আত্মতত্ত্বের সন্ধানের মাধ্যমে এই ‘মনের মানুষ’ বা ঈশ্বরের সন্ধান পাওয়া যায়।

বাউলসাধনার যাবতীয় সন্ধান এই ঈশ্বর বা ‘মনের মানুষ’-কে পাওয়ার জন্য। নিরাকার সেই পরমের সন্ধানেই মানুষ শুদ্ধ হয়। কিন্তু তার সন্ধানও সহজলভ্য নয়। তাকে দেখার ইচ্ছা হয়, কিন্তু পথ পাওয়া যায় না। স্বার্থপরতা আর বিষয়ভাবনা সেই পথ রুদ্ধ করে দেয়া সীমাহীন পার্থিববাসনা সেই পথের অন্যতম বাধা| আবার এই বিষয়যন্ত্রণা থেকে মুক্তির পথও কিন্তু সেই ‘মনের নানুস’ বা ঈশ্বরের সাধনাই | এই বিষয়বাসনা থেকে মুক্তি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষাই *প্তরের উদ্দেশে আমাদের সাধনাকে পরিচালিত করে|কবি উপলব্ধি করেন এক হারাবার থেকেও ঈশ্বরের সঙ্গে তার লক্ষযােজন দূরত্ব রয়ে গেছে। ফলে ববি রাতে ‘ণে মনের মানুষ’ এর সন্ধানের জন্য বিষয়বাসনা থেকে ব্লার তীব্র আকাসা প্রকাশ করেছেন|প্রকৃতপক্ষে, লালন ফকির আলােচ্য পণ্ডিটিতে আমোল প্রকাশ করে বলেছেন যে, আরশিনগরে থাকা সেই ‘পড়শি’ অর্থাৎ ‘মনের মানুষ’ এর সন্ধান যদি পাওয়া যেত, একমাত্র তা হলো ‘যম-যাতনা’ অর্থাৎ বিষযগৰাপার্থিবদুঃখ-শেকি থেকে মুক্তি পেতেন তিনি।

৩)“ বলবো কী সেই পড়শীর কথা ” – পড়শি কে ? পড়শির স্বরূপ ব্যাখ্যা করো । 

Ans: বাড়ির কাছে আরশীনগর ‘ কবিতার রচয়িতা স্বয়ং লালন ফকির উক্তিটির বক্তা । এখানে পড়শি বলতে অলৌকিক বা পার্থিব কোনো সত্তাকে বোঝানো হয়নি । পড়শি হলেন প্রত্যেকের মনে অবস্থানকারী আর এক মানুষ বা মনের মানুষ । তাঁকে উপলব্ধি করতে হয় হৃদয় দিয়ে । 

স্বরূপ : লালন বলেছেন , এই পড়শির কোনো আকার নেই । তাঁর হাত – পা নেই , না আছে কাধ – মাথা । তিনি নিরাকার । কখনো সাধনার উচ্চস্তরে তিনি বিরাজমান , কখনো বস্তুকে আশ্রয় করে তার প্রকাশ ঘটে । লালন তাঁর জীবনে কখনো এই মনের মানুষের দেখা পাননি । তাই বলেছেন , “ কেমনে সে গাঁয় যাই রে । ” পড়শি অন্তরে অবস্থান করেন কিন্তু লালন তার নাগাল পান না । লালনের মনে হয়েছে বিষয়ভাবনার জন্যই পড়শির সঙ্গে তাঁর “ লক্ষ যোজন ফাক ” ঘুচল না । 

৪)“ আমি একদিন না দেখিলাম তারে ” – কে , কাকে দেখেননি ? আক্ষেপের কারণ কী ? 

Ans: বাংলার মরমি সাধক লালন ফকির ‘ বাড়ির কাছে আরশীনগর ‘ কবিতায় উদ্ধৃত মন্তব্য করেছেন । এখানে বাউলকবি তার মনের মানুষকে না দেখার কথা বলেছেন । লালন জানেন , ঈশ্বরের অবস্থান মানুষের মনের নিবিড় জায়গায় । তিনি বাস করেন হৃদয়ের গহন অভ্যন্তরে লালন কোনোদিন তাঁর দেখা পাননি । এজন্য লালন নিজের অজ্ঞতাকেই দায়ী করেন । মানুষের লোভ – লালসা আর বিষয়ভাবনাই তাকে পরমপুরুষের সঙ্গে মিলিত হতে দেয় না । তাই লালন ইচ্ছে করলেই সাধনার পড়শিকে কাছে পান না । তার প্রবল ‘ বাঞ্ছা ‘ পড়শিকে দেখার । এর কারণ পড়শির দর্শন পেলে কবির ‘ যম – যাতনা ’ দূর হয়ে যেত । সংসারের প্রতি মোহ দূর হলে লালন নিশ্চিন্তে পড়শির সঙ্গে মিলিত হতে পারতেন । অনেক চেষ্টা করেও পার্থিব মায়া – বাসনা থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারেন না বলেই লালনের আক্ষেপ । এটাই পড়শির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে ।

৫)“ বাড়ির কাছে আরশীনগর ” —কার বাড়ি ? ‘ আরশীনগর ‘ শব্দের তাৎপর্য কী ? 

Ans: পঙ্ক্তিটিতে ‘ বাড়ি ‘ বলতে বাউল কবি লালন ফকিরের বাড়ির কথা বলা হয়েছে । ‘ বাড়ি ’ কথার রূপকার্থ কবির দেহভাণ্ড । মরমিয়া সাধক কবি লালন ফকির ‘ বাড়ির কাছে আরশীনগর ‘ কবিতায় ‘ আরশীনগর ‘ শব্দের দ্বারা কোনো নগর বা কোনো স্থানের কথা বলেননি । কবির কাছে ‘ আরশীনগর ’ হলো অন্তরভূমি , যেখানে পরম করুণাময় ঈশ্বর অবস্থান করেন । এই অন্তরভূমি কবির কাছে মনের মানুষ বা ‘ পড়শী ‘ । সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা এখানেই বিরাজ করেন । কবি এই মনের মানুষ ‘ পড়শী ‘ – র সঙ্গে থেকেছেন কিন্তু তাকে চিনতে পারেননি । তাই কবির আক্ষেপ – “ আমি একদিনও না দেখিলাম তারে। ” 

  কবি বলতে চেয়েছেন , ‘ আরশীনগর ’ বা মনের মানুষের সন্ধান পাওয়া সহজ ব্যাপার নয় । একমাত্র আত্মানুসন্ধানের মাধ্যমেই তার সন্ধান লাভ সম্ভব । এই আত্মানুসন্ধান আসলে নিজের ভেতরে যে মানুষ আছেন , তাঁকেই সন্ধান করা । মনকে শুচিশুদ্ধ করে , জাগতিক মায়াজাল থেকে মুক্ত হয়ে আত্মানুসন্ধান করলে তবেই ‘ আরশীনগর ‘ – এ বিরাজিত ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভ সম্ভব হবে । কিন্তু কবির পক্ষে এই আত্মানুসন্ধান করা সম্ভব হয়নি । তাই বাড়ির কাছে আরশীনগর ‘ থাকা সত্ত্বেও ঈশ্বরের সঙ্গে কবির ব্যবধান ‘ লক্ষ যোজন ফাঁক ‘ ।

 

**********একাদশ শ্রেণীর আরো প্রশ্ন-উত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন *****************

**********দ্বাদশ শ্রেণীর আরো প্রশ্ন-উত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন। ***************

*********দশম শ্রেণীর শ্রেণীর আরো প্রশ্ন-উত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন।***************

********WBP এবং KP পরীক্ষার MOCK TEST দিতে এখানে ক্লিক করুন ******************

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *