মাধ্যমিক বাংলা প্রলয়উল্লাস কবিতার প্রশ্ন-উত্তর

prloyullas

পরীক্ষা প্রস্তুতি : মাধ্যমিক বাংলা প্রলয়উল্লাস কবিতার প্রশ্ন-উত্তর। প্রিয় ছাত্র ছাত্রীরা তোমরা যারা ২০২৩ সালে মাধ্যমিক দেবে , PRIKSHAPASTUTI .ORG এক্সপার্ট টিমের পক্ষ থেকে প্রথমেই তোমাদের অভিনন্দন জানাই। যাতে তোমরা বাড়িতে বসে সুন্দর ভাবে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারো তার জন্যই আমাদের এই প্রচেষ্টা। আশা করছি তোমরা আমাদের দেওয়া সাজেশন গুলি ভালো করে পড়লে অবশ্যই মাধ্যমিকে চুড়ান্ত সফলতা লাভ করতে পারবে। আজকে তোমাদের সামনে মাধ্যমিক  বাংলা কবিতা ‘প্রলয়োল্লাস ‘ থেকে মাধ্যমিক ২০২৩ পরীক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্ব পূর্ন প্রশ্ন-উত্তর গুলি তুলে ধরা হল – প্রলয়উল্লাস কবিতার প্রশ্ন-উত্তর

মাধ্যমিক বাংলা প্রলয়োল্লাস কবিতার প্রশ্ন উত্তর 

১ নম্বরের প্রশ্ন -উত্তর  ( MCQ )

(১) ‘কেশের দোলায় ঝাপটা মেরে গগন দুলায়।’- কে ? 

উত্তর  –  ঝামর

(২).“ বিশ্ব পাতার বক্ষ কোলে ”  যা ঝােলে—

উত্তর  – কৃপাণ 

(৩).’এস্ত জটা’ ‘ র  যে বর্ণ —

উত্তর – পিঙ্গাল 

(৪)  জরায় মরা মুমূর্যদের প্রাণ লুকানাে রয়েছে

উত্তর –বিনাশের মধ্যে 

(৫) জীবনহারা অ-সুন্দর’কে ছেদন করতে আসছে?

উত্তর – যুবক 

(৬) উল্কা ছুটায় নীল খিলানে। নীল খিলান’ বলতে বােঝানাে হয়েছে-

উত্তর –আকাশকে 

(৭)‘প্রলয়ােল্লাস ’ কবিতায় ‘চিরসুন্দর হলেন

উত্তর –শিব 

(৮)ঘােড়ার ক্ষুরের দাপট কোথায় লাগে?

উত্তর –তারায় 

(৯)“সিন্ধুপারের সিংহদ্বারে ধমক হেনে ভাঙল আগল।’ – কে আগল ভাঙল ?

উত্তর –নৃত্য  পাগল 

(১০) কারা ভেঙে আবার নতুনের রূপদান করতে পারে ?

উত্তর -নবীনরা 

(১১) বজ্রশিখার মশাল জ্বেলে কে আসছে ?

উত্তর –ভয়ংকর 

(১২) দিগম্বরের জটায় কে হাসছে ?

উত্তর –শিশু চাঁদের কর 

(১৩)“এবার ওই আসে সুন্দর’’ সুন্দর কী বেশে আসছে ?

উত্তর –কাল ভয়ঙ্করের বেশে 

(১৪) কারা ভেঙে আবার  নতুনের রূপদান করতে পারে ?

উত্তর –নবীনরা 

 


১ নম্বরের প্রশ্ন -উত্তর SAQ  ( ২০ টি শব্দের মধ্যে )

(১) কাজী নজরুল ইসলামের কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতাটি? 

‘অগ্নিবীণা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। 

(২) “দিগন্তরের কাঁদন লুটায়”—দিগন্তরের কাঁদন কোথায় লুটিয়ে পড়ে? 

প্রলয়ােল্লাস কবিতায় কল্পনা করা’ ‘  দিগন্তরের কাঁদন ‘  রুদ্রদেবের আগুনরাঙা জটাজালে লুটিয়ে পড়ে। 

(৩)“প্রলয় নূতন সৃজন বেদন”—কথাটির অর্থ লেখো ? 

ধ্বংসসাধন অন্তর্বেদনার সৃষ্টি করলেও নতুন ইমারত এরই উপর গড়ে উঠবে । নবারুণ আবার দেখা দেবে দিবসের অবসানে  , তাই নতুনের আগমন বার্তা ধ্বনিত হবে । 

(৪) ‘বধূরা প্রদীপ তুলে ধর’–বধূরা কার উদ্দেশে’, প্রদীপ তুলে ধরবে কেন? 

 প্রদীপ তুলে ধরে বধূরা ভয়ঙ্কর রূপে আসা সুন্দরকে বরণ করবে |

(৫) “সিন্ধু পারের সিংহদ্বার” এখানে  কী বােঝানাে হয়েছে? 

কবি নজরুল সিন্ধুপারের  সিংহদ্বার’ বলতে একদিকে যেমন ইংরেজ শাসকদের রাজতন্ত্রকে বুঝিয়েছেন , তেমনি অন্যদিকে যেখানে ভারতীয় বিপ্লবীরা দ্বীপান্তরিত হয়েছিলেন, সেই আন্দামান স্থানটিকেও বুঝিয়েছেন। 

(৬) “ওই সে মহাকাল-সারথি রক্ত-তড়িৎ চাবুক হানে ” কী বােঝানাে হয়েছে  ‘মহাকাল-সারথি ‘ বলতে? 

‘মহাকাল-সারথি’ বলতে কবি  তরুণ বিপ্লবীদের কথা বলেছেন। পরাধীন ভারতকে স্বাধীন করেতে বিপ্লবীরা মহাকালের মতাে রুদ্র রূপ ধারণ করেবে।

(৭)  “ওই নূতনের কেতন ওড়ে”–নূতনের কেতন’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? অথবা, “ওই নূতনের কেতন ওড়ে কালবােশেখির ঝড়।” কালবােশেখির ঝড়’ কীসের প্রতীক? 

আলােচ্য কবিতাংশটিতে কবি পরাধীনতার বন্ধন থেকে মুক্তির প্রতীক হিসেবে ‘কালবােশেখির ঝড়’ এবং নূতনের কেতন’ শব্দ দুটি ব্যবহার করেছেন। 

(৮) “দিগম্বরের জটায় হাসে” – কে দিগম্বরের জটায় হাসে? 

দিগম্বর’ হলেন দেবাদিদেব মহাদেব। জটায় থাকে শিশু চাঁদের কিরণ। 

(৯) “দেবতা বাঁধা যজ্ঞ-যুপে’– কোথাকার দেবতা যজ্ঞ-যুপে বাঁধা? 

অসংখ্য ভারতীয় বিপ্লবী ইংরেজদের লােহার কারাগারে বন্দি। কবির ভাবনায় ওই বিপ্লবীরা দেবতার সঙ্গে তুলনীয়। তারা অন্ধ কারাগারের বন্ধকূপে বন্দি রয়েছে। 

(১০) “আসছে এবার অনাগত প্রলয়-নেশার নৃত্য পাগল।” কাকে  ‘নৃত্য পাগল’ বলা হয়েছে ?

নৃত্য পাগল’ বলতে নটরাজ শিবের কথা বলা হয়েছে, যাঁর দুই রূপ — সংহারক ও রক্ষক ।  

(১১) “মৃত্যু-গহন অন্ধকূপে”—‘অন্ধকূপ’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে ? 

প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ‘মৃত্যু-গহন অন্ধকূপ’ বলতে পরাধীন ভারতবর্ষকে বুঝিয়েছেন। 

(১২)“মহাকালের চণ্ড-রূপে”—’মহাকাল’ কাকে বলা হয়েছে ? 

‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় দেবাদিদেব মহাদেব হলেন ‘মহাকাল’, যিনি একাধারে ও রুদ্র, রক্ষক ও সংহারক।

(১৩) কী আখ্যা দেওয়া হয়েছে ধূমকেতুকে? 

কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ‘প্রলয়ােল্লাস’কবিতায় ‘ধূমকেতু’কে সর্বনাশী ও জ্বালামুখী বলা হয়েছে। 

(১৪) “তার চামর দুলায়।” কে, কার চামর দোলায়?

প্রলয় সৃষ্টিকারী ভয়ংকরের সম্মান রাখতে সর্বনাশী জ্বালামুখী ধূমকেতু চমরিপুচ্ছনির্মিত একপ্রকার ব্যজন দুলিয়ে যায়।

(১৫) “মাভৈঃ মাভৈঃ।” মাভৈঃ’ কথাটির অর্থ লেখো ? 

মাভৈঃ কথাটির অর্থ অভয়সূচক’ অর্থাৎ ‘ভয় করিও না’ । 

(১৬) “প্রলয় এবার ঘনিয়ে আসে।” কোথায় প্রলয় ঘনিয়ে আসে ? 

কুসংস্কারে আচ্ছন্ন, অনৈতিকতায় পরিপূর্ণ সারা জগতে প্রলয় ঘনিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে।

 
 
 
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর – ( ৩ নম্বরের )

 

(১) “আসছে এবার অনাগত প্রলয় নেশার নৃত্য পাগল” একথা কাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে? কেন কথাটি তার সম্পর্কে বলা হয়েছে? 

বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম এর ‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতার উল্লিখিত অংশে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে উদ্যত নবীন বিপ্লবীদের  কথা বলা হয়েছে। 

কবি নজরুলের কাছে পরাধীনতার যন্ত্রণা ছিল অসহনীয়। দেশের তরুণদের তিনি এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তির জন্য উৎসাহিত করেছেন। তরুণ বিপ্লবীদের দেখলে মনে হয় তারা যেন প্রলয় নেশার নৃত্য পাগল। কারণ জীবনকে বাজি রেখে তারা বিপ্লবের পথে এগিয়ে চলে। সমুদ্রপারে সিংহদ্বারের আগল ভাঙাই তাদের লক্ষ্য। 

(২) “দিগম্বরের জটায় হাসে শিশু-চাদের কর”—দিগম্বর বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? ‘শিশু চাদের কর’-এর হাসার অর্থটি বুঝিয়ে দাও। 

বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম এর ‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় দিগম্বর’বলতে কবি মহাদেবকে বুঝিয়েছেন। 

‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় কবি মহাদেবকে সমাজ পরিবর্তনের কারিগর রূপে দেখেছেন। তিনি মনে করেন যখন নতুন শুভ শক্তির প্রতিষ্ঠা হবে তখন মহাদেবের ধ্বংসাত্মক শক্তির দ্বারা পুরাতন লুপ্ত হবে । সমাজ  প্রতিষ্ঠা হবে শিশু চাঁদের উপস্থিতিতে। মহাদেবের জটায় থাকা চাঁদে তারই ইঙ্গিত লক্ষ করা যাচ্ছে । ওই চাঁদের আলােতেই সমাজের অন্ধকার কেটে এক নতুন শক্তির আগমন হবে বলে কবি আশা করেছেন। 

(৩) “ভেঙে আবার গড়তে জানে সে চিরসুন্দর।” সে বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে ? ভেঙে আবার গড়ার বিষয়টি বুঝিয়ে দাও। 

বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম এর ‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতার উল্লিখিত অংশে ‘সে’ বলতে দেবাদিদেব মহাদেবের প্রতীকে দেশের তরুণ বিপ্লবীদের কথা বলা হয়েছে। 

অসুন্দরের বিনাশ ঘটিয়ে মহাদেব সুন্দরের প্রতিষ্ঠা করেন। দেশের তরুণ বিপ্লবীরাও একইভাবে ধ্বংসের প্রচণ্ডতা নিয়ে আবির্ভূত হয়। সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজ সরকারকে আঘাত করাই তাদের লক্ষ্য। তবে অনেকেই ‘বিপ্লবের পথকে সমাজ পরিবর্তনের জন্য  ধ্বংসাত্মক বলে মনে করেন, কিন্তু কবির মতে সত্য-সুন্দরের প্রতিষ্ঠা হয় অসুন্দরকে ধ্বংস করেই নবরূপে সমাজ গড়ার মধ্য দিয়ে ।

(৪) “ওই নূতনের কেতন ওড়ে কালবােশেখির ঝড়।” ‘নূতনের কেতন’ কী ? 

বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম এর প্রলয়ােল্লাস কবিতাংশে উল্লিখিত ‘কেতন’-এর অর্থ হলাে পতাকা। কবিতায় ‘নূতনের কেতন’ নতুন দিকের সূচনা করার ইঙ্গিত বহন করেছে। ভারতে ইংরেজদের শাসন-শােষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য কবি নতুনের জয়গানে মুখরিত হয়ে উঠেছেন। তারা কালবৈশাখী ঝড়ের মতাে, প্রলয়রূপী শিবের মতাে সর্বধ্বংসী প্রলয়ের আগমন বার্তা নিয়ে উপস্থিত। 

(৫) “আসছে নবীন—জীবনহারা অ-সুন্দরে করতে ছেদন!” উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য কী । 

কবি নজরুল ইসলাম ছিলেন সত্য, শিব ও সুন্দরের পূজারি। ভারতীয় বিপ্লবীদের বন্দিদশা তার কাছে ছিল খুবই অস্বস্তিকর। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন,দেশের অরাজকতার অবসান ঘটানাে সম্ভব নবীন বিপ্লবীদের দ্বারাই জরাজীর্ণ ও প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে । প্রলয়ের মধ্যে দিয়ে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে দেশের তরুণ বিপ্লবীরাই পারে । দেশের ভয়ংকর এবং অসুন্দর  অবস্থাকে একমাত্র দেশপ্রেমীরাই পারে  নবীন রূপে  সুন্দর করে তুলতে। কবির এই স্বপ্নময় রূপটি উদ্ধৃত অংশটিতে ফুটে উঠেছে। 

(৬) “প্রলয় বয়েও আসছে হেসে”—উদ্ধৃতাংশটির কবি কে? প্রলয় বয়েও কারা,  কেন হাসছে? 

কাজী নজরুল ইসলাম হলেন প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় উদ্ধৃত অংশটির কবি । নজরুলের কাছে পরাধীনতা  ছিল অসহনীয়। তাই তিনি অরাজক পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে দেশের তরুণদেহ উৎসাহ দিয়েছেন । তিনি স্বপ্ন দেখতেন তরুণেরা সমস্ত অরাজকতার অবসান ঘটিয়ে দেশে নতুন সূর্যোদয় ঘটাবে। এবার নবসৃষ্টি ঘটবে তারা জানে । তাই  কবি যেন মনের ভাবনায় বলে ওঠেন  “চমকিয়া উঠি—তবু জয় জয় তা সেই শুভ কীর্তির।” 

(৭)“এবার মহানিশার শেষে/আসবে ঊষা অরুণ হেসে”—মহানিশা’ কী ? মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে। 

‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় ‘মহানিশা’ বলতে কবি কাজী নজরুল ইসলাম সামাজিক শােষণ ও পরাধীনতার জন্য বিশ্বব্যাপী যে অন্ধকারময় অবস্থা তাকে বুঝিয়েছেন। 

আশাবাদী কবি মনে করেন যে  অন্ধকার পরাধীনতা এবং সামাজিক শােষণ-বঞ্চনার মধ্য দিয়ে নেমে এসেছে তার অবসান ঘটবে । মহাদেব ধ্বংসের দেবতা হলেও তার মাথায় থাকে শিশু চাঁদ । তাই ধ্বংসের মধ্যে দিয়ে যে সৃষ্টি সূচিত হবে তা সেই চাঁদের আলােয় বোঝা যায় । 

 
ব্যাখ্যা ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর -(৫ নম্বরের )

(১)প্রলয়ােল্লাস’ কবিতার মূলবক্তব্য সংক্ষেপে আলােচনা করাে। অথবা, ‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় কবি প্রলয়ের মধ্যে দিয়ে যে উল্লাস অনুভব করেছেন তা উল্লেখ করাে।

অথবা, ‘প্রলয়ােল্লাস’কবিতায় প্রলয় ও আশাবাদের সুর কীভাবে ব্যক্ত হয়েছে তা বুঝিয়ে লেখাে। 

‘অগ্নিবীণা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘প্রলয়ােল্লাস’কবিতাটি আসলে কবির জীবন উল্লাসের কবিতা। ‘তােরা সব জয়ধ্বনি কর’ এই আহ্বানসূচক পঙক্তিটি কবিতায় মােট উনিশ বার উচ্চারিত হয়েছে, যা বুঝিয়ে দেয় এই পঙক্তিটিকেই কবি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন।  কবি স্বাগত জানিয়েছেন স্বাধীনতা ও সাম্যকে,যা মানুষকে পরাধীনতার নাগপাশ থেকে মুক্তির স্বাদ দিতে পারে।   যে বছর গ্রন্থাকারে  প্রলয়ােল্লাস কবিতাটি প্রকাশ পায় ওই একই বছরে নজরুল ‘ধূমকেতু’ পত্রিকার একটি সংখ্যায় লেখেন, “পূর্ণ স্বাধীনতা পেতে হলে সকলের আগে আমাদের বিদ্রোহ করতে হবে। সকল কিছু নিয়ম-কানুন, বাঁধন-শৃঙ্খল ও মানা-নিষেধের বিরুদ্ধে। প্রলয়ােল্লাস কবিতায় দেখা যায়— 

“সিন্ধুপারের সিংহদ্বারে ধমক হেনে ভাঙল আগল।” অর্থাৎ  কবি এই পঙক্তিটিতে স্পষ্টই বিদ্রোহের কথা বলেছেন। যে বিপ্লবী শক্তির আগমন প্রবল তেজ, বিপর্যয় নিয়ে ঘটে তা প্রাথমিকভাবে শঙ্কিত করতে পারে, কিন্তু সে-ই পাতে বিশ্বমায়ের আসন । কবি দেখেছেন— 

“ অন্ধকারার বন্ধ কূপে 

দেবতা বাধা যজ্ঞ-স্তূপে  ”

—এই দেবতা এখানে স্বাধীনতার প্রতীক। এখান থেকে তার মুক্তি পাওয়ার সময়  হয়ে গিয়েছে। 

কবি কাজী নজরুল ইসলামে ‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় বলেছেন, ধ্বংস দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এই ধ্বংস আসলে প্রাণহীন অসুন্দরকে বিনাশ করতেই । এর পরেই প্রতিষ্ঠা ঘটবে চিরসুন্দরের। কবি তাকেই স্বাগত জানানাের জন্য সকলকে আহ্বান করেছেন । 

(২)প্রলয়ােল্লাস কবিতায় একদিকে ধ্বংসের চিত্র আঁকা হয়েছে আবার অন্যদিকে নতুন আশার বাণী ধ্বনিত হয়েছে—কবিতা অবলম্বনে বিষয়টি আলােচনা করাে।

অথবা, “তােরা সব জয়ধ্বনি কর”—কাদের উদ্দেশে, কেন কবি জয়ধ্বনি করতে বলেছেন? 

‘অগ্নিবীণা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের  পরাধীন ভারতবর্ষের শােষিত-বঞ্চিত,অত্যাচারিত মানুষদের উদ্দেশে এই আহ্বান জানিয়েছেন। কবি কাজী নজরুল ইসলাম দেশবাসীকে পরাধীনতায় আবদ্ধ দেশমাতার স্বাধীনতার জন্য  আন্দোলনে শামিল করতে চেয়েছেন । তিনি অনুভব করেছেন  ভারতবাসীকে ঔপনিবেশিক শােষণ-বঞ্চনা, অত্যাচার মেরুদণ্ডহীন করে তুলেছে। 

 

“তােরা সব জয়ধ্বনি কর” প্রলয়ােল্লাস কবিতায় মােট উনিশ বার এই আত্মানসূচক পঙক্তিটি উচ্চারিত হয়েছে, যা বুঝিয়ে দেয় এই পুঙক্তিটিকে কবি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। আসলে ‘প্রলয়ােল্লাস’ হলাে ধ্বংসের মধ্য দিয়ে সৃষ্টির বন্দনা। যে তরুণের দল তাদের সাহস আর অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে সামাজিক বৈষম্যে,পরাধীনতার অবসান ঘটাতে চায় কবি তাদেরই জয়ধ্বনি করতে বলেছেন। এই যুবশক্তির মধ্যে রয়েছে আপাত ধ্বংসের উন্মাদনা। কবির কথায় তারা হলাে—“অনাগত প্রলয়-নেশার নৃত্য পাগল”, সমাজের যাবতীয় শক্তির প্রচণ্ডতা অসুন্দরকে দূর করতে নিজেরা ভয়ংকরের বেশ ধরে। এর মধ্যে দিয়ে পৃথিবীতে নবপ্রাণের প্রতিষ্ঠা ঘটে 

“…জগৎ জুড়ে প্রলয় এবার ঘনিয়ে আসে/জরায় মরা মুমূর্যদের প্রাণ লুকানাে ওই বিনাশ!” তাই তাদেরকে অভ্যর্থনা জানাতে হবে সমাজকে সুন্দর করে তুলতে । কারণ তারাই হবে ধ্বংসের মধ্যে দিয়ে সৃষ্টির কারিগর। এই কারণেই কবি নজরুল ইসলাম “তােরা সব জয়ধ্বনি কর” পঙক্তিটি বার বার ব্যবহার করেছেন। 

 
আরো পড়ুনঃ

**********একাদশ শ্রেণীর আরো প্রশ্ন-উত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন *****************

**********দ্বাদশ শ্রেণীর আরো প্রশ্ন-উত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন। ***************

*********দশম শ্রেণীর শ্রেণীর আরো প্রশ্ন-উত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন।***************

********WBP এবং KP পরীক্ষার MOCK TEST দিতে এখানে ক্লিক করুন ******************

1 thought on “মাধ্যমিক বাংলা প্রলয়উল্লাস কবিতার প্রশ্ন-উত্তর”

  1. Pingback: অসুখী একজন কবিতার MCQ & SAQ | Pariksha Prastuti

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *