WBBSE MADHYAMIK BANGLA | জ্ঞানচক্ষু
প্রিয় ছাত্র ছাত্রীরা তোমরা যারা ২০২২ সালে মাধ্যমিক দেবে , PRIKSHAPASTUTI .ORG এক্সপার্ট টিমের পক্ষ থেকে প্রথমেই তোমাদের অভিননন্দন জানাই। এই করোনা পরিস্থিতিতে যাতে তোমরা বাড়িতে বসে সুন্দর ভাবে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারো তার জন্যই আমাদের এই প্রচেষ্টা। আশা করছি তোমরা আমাদের দেওয়া সাজেশন গুলি ভালো করে পড়লে অবশ্যই মাধ্যমিকে চুড়ান্ত সফলতা লাভ করতে পারবে। আজকে তোমাদের সামনে মাধ্যমিক বাংলা গল্প ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ থেকে মাধ্যমিক ২০২২ পরীক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্ব পূর্ন MCQ/SAQ/LAQ প্রশ্ন-উত্তর গুলি তুলে ধরা হল –
বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নোত্তর [MCQ] : [প্রতিটি প্রশ্নের মান-1]
(১)তপনের গল্প কোন পত্রিকায় কি নামে ছাপা হয়েছিল ?
উত্তর – সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ‘প্রথম দিন ‘নামে।
(২) তপনের নতুন মেসো মশাই ছিলেন–
উত্তর -একজন লেখক
(৩)তপনের প্রথম গল্পটি লিখেছিলেন–
উত্তর-হোম টাস্কের খাতায়
(৪)তপন মেসোর মুখে দেখেছিল-–
উত্তর– কুরুনার ছাপ।
(৫)তপনের গল্পের কথা উঠেছিল।
উত্তর-চায়ের টেবিলে।
(৬)তপনকে এখন কী বলা চলে ?
উত্তর-লেখক
(৭)সূচিপত্রে গল্পের নাম ছি
উত্তর– প্রথম দিন
(৮)নতুন মেসো পেশায় ছিলেন –
উত্তর-একজন অধ্যাপক
(৯)ছোট মাসি তপনের চেয়ে বড় ছিল—
উত্তর-বছর আষ্টেকের।
(১০)তপনের চোখ হয়েছিল—
উত্তর- মার্বেল
(১১)গল্প লিখে তপন প্রথম জানায় —
উত্তর-ছোট মাসি কে।
(১২) প্রথম দিন গল্পের লেখক হলেন–
উত্তর- শ্রী তপন কুমার রায়।
(১৫) যাকে দেখে তপনের চোখ মার্বেলের মতন হয়ে গেল-
(১৭)নতুন মেসোমশাই ছিলেন একজন-
(১৮)“কথাটা শুনে _________ চোখ মার্বেল হয়ে গেল!” (শূন্যস্থানে শব্দ বসাও)
(১৯)“আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম।”—কথাটি বলেছেন-
(২০) জ্ঞানচক্ষু গল্পে, জহুরি বলতে যাকে বোঝানো হয়েছে তিনি হলেন-
(২১)ছোট মেসো তপনদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন সঙ্গে নিয়েৃ-
(২১)তপনের লেখা গল্প তার মেসোমশাইকে দিয়েছিল—
অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর : [প্রতিটি প্রশ্নের মান-1]
(১) “তিনি নাকি বই লেখেন “–তিনি কে ?
উত্তর: তিনি হলেন তপনের নতুন মেসোমশাই।
(২) “বাবা, তারে পেটে পেটে এত”-কে কোন প্রসঙ্গে একথা বলেছিলেন ?
(৩) “আর তোমরা বিশ্বাস করবে কিনা জানি না…”—এখানে কোন্ ঘটনার কথা বলা হয়েছে?
(৪) “যেন নেশায় পেয়েছে!”—এখানে কোন্ নেশার কথা বলা হয়েছে?
(৫) “শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন”—তপনের সংকল্প কী ছিল ?
(৬) কেন তপন হঠাৎ একটা ভয়ানক উত্তেজনা অনুভব করেছিল ?
(৭)“কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল।”—কোন্ কথা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল?
(৮)লেখালেখি ছাড়া তপনের নতুন মেসোর পেশা কী ?
(৯) “তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন” —দিনটিতে কোন্ উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছিল?
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর : [প্রতিটি প্রশ্নের মান-3]
(৫)ক্রমশ ও কথাটা ছড়িয়ে পড়ে।”—কোন কথা, ওই কথা ছড়িয়ে পড়ায় কী ঘটেছিল?
(৬) “বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের”—কখন এবং কেন তপনের এরকম অনুভূত হয়েছিল?
(৭)পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে, কার মধ্যে কেন এমন ভাবনার উদয় হয়েছিল ?
(৮) ‘যেন নেশায় পেয়েছে’-কীসের নেশা, কীভাবে তাকে নেশায় পেয়েছে?
(৯)‘সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়’—সারা বাড়িতে ?শোরগোল পড়ে যাওয়ার কারণ কী ?
ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্ন -উত্তর [প্রতিটি প্রশ্নের মান – ৫ ]
(১)’রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই।’–‘ রত্ন’ ও ‘জহুরী ‘বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?উদ্ধৃতিটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর– আশাপূর্ণা দেবীর জ্ঞানচক্ষু গল্পে উল্লেখিত উদ্ধৃতিতে ‘ রত্ন’ বলতে মূল্যবান পাথর কে এবং ‘জহুরী ‘বলতে রত্ন বিশেষজ্ঞ কে বুঝানো হয়েছে।জ্ঞানচক্ষু গল্পে ‘রত্ন’ বলতে তপনের লেখা গল্প আর ‘জহুরী’ বলতে তপনের লেখক মেসোকে বুঝানো হয়েছে। এক কথায় তপনের লেখা গল্পের মূল্য একজন লেখক অর্থাৎ তপনের নতুন মেসো মশাই বুঝতে পারবেন ।
তপন ছোটবেলা থেকেই অনেক গল্প পড়েছে ও শুনেছে । তাই গল্প জিনিসটা যে কি তার অজানা নয় । সে শুধু এটাই জানত না যে মানুষেরাই এই গল্প লিখতে পারে । তার ধারণা ছিল গল্প যারা লেখে তারা আকাশ থেকে পড়া কোন জীব, যারা অন্য গ্রহের বাসিন্দা কিন্তু নিজের লেখককে চাক্ষুষ দেখে তার সেই ভুল ভাঙ্গে ,তার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায় অর্থাৎ বোধোদয় হয় যে – লেখকেরা বাবা, কাকা, আমাদের মতই একজন সাধারন মানুষ ।লেখক মেসোর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তপনের লেখক হয়ে ওঠার বাসনা জন্মায়। দুপুরবেলা সবাই যখন চুপচাপ তখন তপন হোম তাস্কের খাতা নিয়ে তিনতলার সিঁড়িতে বসে আস্ত একটা গল্প লিখে ফেলে । সমবয়সীদের মত সাধারন বিষয় এর পরিবর্তে নিজের বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি নিয়ে গল্প তৈরি করে ।লেখা শেষ করে নিজেই শিহরিত, রোমাঞ্চিত ও পুলকিত হয়। উত্তেজনাবশে ছোট মাসির হাত ঘুরে তা লেখক মেসোর হাতে পড়ে। ছোট মেসো তপনের লেখার সুখ্যাতি করলো তপন মনে করে একজন লেখকের লেখার প্রকৃত মূল্যায়ন একজন প্রকৃত লেখকই করতে পারে । তাই বলা হয়েছে রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই ।
(২)জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের —- জ্ঞানচক্ষু কি তপনের প্রকৃত জ্ঞানচক্ষু কিভাবে খুলে গিয়েছিল।
উত্তর-আশাপূর্ণা দেবীর লেখা জ্ঞানচক্ষু গল্পে জ্ঞানচক্ষু বলতে জ্ঞান রূপ চক্ষু বা মানুষের অন্তর্দৃষ্টি কে বোঝানো হয়েছে ,যার সাহায্যে মানুষ প্রকৃত সত্যকে যাচাই করে নিতে পারে।
শিশুমনের কল্পনায় তপনের মনে হয় লেখকেরা আকাশ থেকে পড়া কোন জীব বা অন্য গ্রহের বাসিন্দা ।কিন্তু নতুন লেখ মেসোকে দেখে তার সেই ধারণা বদলে যায় । সে জানতে পারে মেসো অনেক বই লিখেছেন এবং তা ছাপানো হয়েছে ।তাই জলজ্যান্ত একজন লেখককে চাক্ষুষ দেখার পর তপন বুঝতে পারে আসলে মানুষই গল্প লেখে । যারা বাবা, কাকা, আমাদের মতই নিছক সাধারণ মানুষ । এভাবেই তপনের প্রাথমিক জ্ঞানচক্ষু খোলে ।
লেখক মেসো কে দেখেই তপনের গল্প লেখক হওয়ার বাসনা প্রবল হয়। আর তা থেকেই হোমটাস্কের খাতায় বিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা ,অনুভূতি নিয়ে গল্প লিখে ছোট মাসি কে দেখায় ।ছোট মাসির সুপারিশে এবংছোট মেসোর সহায়তায় তা সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপানো হয়। তপনের গল্প কারেকশনের নামে ছোট মেসো আমূল বদলে দিয়েছে , তপন পড়তে গিয়ে তা জানতে পারে। তখন লজ্জায় ,হতাশায়, কষ্টে তপন প্রতিজ্ঞা করে যে, অন্যের সুপারিশ ছাড়াই সে নিজের লেখা নিজেই ছাপতে দেবে । এভাবেই তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে যায়।
(৩)’ শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন ‘ — দুঃখের মুহূর্তে বলতে কি বুঝানো হয়েছে ? তপন কোন সংকল্প গ্রহণ করেছিল তা সংক্ষেপে লেখ।
উত্তর– বিখ্যাত কথা সাহিত্যিক এবং ছোটগল্প লেখিকা আশাপূর্ণা দেবীর জ্ঞানচক্ষু গল্পে লেখক সম্পর্কিত ধারণার অবসানে উদ্যোগী তপন হোমটাস্কের এর খাতায় একটি গল্প লেখে ।গল্পটার বিষয় ছিল তার বিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি। ছোট মাসির সাহায্যে সেই লেখা তার লেখক মেসোর হাতে পৌঁছায়। তিনি তপনের লেখার তারিফ করেন এবং সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় কারেকশন করে ছাপানোর জন্য নিয়ে যান ।এদিকে তপন বাড়ি ফিরে দিন গুণতে থাকে । তপন ভাবে তার লেখা আঁটোসাঁটো ছাপার অক্ষরে বেরোবে। হাজার হাজার ছেলের হাতে তা ঘুরবে ।এটা তার কাছে অলৌকিক ঘটনা বলেই মনে হয় ।হঠাৎ একদিন মাসি ও মেসো তপনের গল্প সম্বলিত পত্রিকা নিয়ে তপন দের বাড়িতে উপস্থিত হয়। বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের ।মনে হয় তার জীবনের সবচেয়ে সুখের দিন এটি ।বাড়ির সকলের নানান রকমের প্রশংসা শুনে তপন লজ্জিত হয়। কিন্তু নিজের হাতে গল্প পড়তে বসে তপনের তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়। লজ্জায় ঘৃণায় অপমানে তপন চরম আঘাত পায়। সে দেখে কারেকশনের নামে ছোট মেসো তার পুরো গল্পটি পাল্টে দিয়েছে ।তাই গভীর দুঃখে তপন সংকল্প করে যদি কখনও লেখা ছাপা দেয় তো তপন নিজেই গিয়ে দেবে ।নিজের কাঁচা লেখা ছাপানো হলে হবে ,না হলে না হবে- কিন্তু তবু নিজের গল্প পড়তে বসে যেন অন্যের লেখা গল্পের লাইন তপনকে পড়তে না হয়।
(৪)প্রশ্ন জ্ঞানচক্ষু গল্প অবলম্বনে তপনের চরিত্র বিশ্লেষণ করো।
উত্তর-আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপন । গল্পে তপনের চরিত্রটি সবসময়ের মতোই আশা-আকাঙ্ক্ষা স্বপ্ন- স্বপ্নভঙ্গ ‘কল্পনা- বাস্তব এবং আনন্দ- অভিমানের টানাপোড়নে লেখা। তার চরিত্রের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি হল—
কল্পনাপ্রবনতা — শিশুমনের স্বাভাবিক প্রবণতা হিসাবে তপন একজন কল্পনাপ্রবণ শিশু ।লেখক সম্পর্কে তার ধারণা ছিল যে , লেখকেরা আকাশ থেকে পড়া জীব, তারা অন্য গ্রহের বাসিন্দা ।অবশ্য লেখক মেসো কে দেখে তার চোখ মার্বেল এর মত গোল হয়ে গেলে সে বুঝতে পারে লেখকেরা তার বাবা কাকা মামাদের মতোই সাধারণ মানুষ।
শিশুর সরলতা–ছোট মেসো যখন তপনের গল্পের তারিফ করে বলে তপনের গল্প দিব্যি হয়েছে ।সেই সঙ্গে বলে গল্প ছাপিয়ে এনে দেবে। একথা তপন সহজেই বিশ্বাস করে এবং মনে মনে মেসোর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে ।তপনের মনে হয় রত্নের মূল্য জহুরিই বুঝে ।
উৎসাহী মানসিকতা–লেখক মেসোকে দেখে তপনের মনে লেখক হওয়ার বাসনা জন্মায়। তপনকে গল্প লেখা নিয়ে বাড়িতে নানা ঠাট্টা বিদ্রুপ তীর্যক বাক্য সহ্য করতে হয়। কবি-সাহিত্যিক কথাশিল্পী বলে সকলে ব্যঙ্গ করলেও তপনের উৎসাহে কোনো ঘাটতি দেখা যায়নি, বরং সে আরো দু’তিনটি গল্প লেখে ফেলে।
আত্মমর্যাদাবোধ–তপনের লেখা গল্প মেসো কারেকশনের নামে সম্পূর্ণ বদলে দিলে তপনের মনে রাগ ও অভিমানের সৃষ্টি হয়। গল্প পড়ে দুঃখে তপনের চোখে জল আসে। তার মনে হয় আজকের দিনটা তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন। তাই সেই দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করে যে, এরপর নিজের লেখা নিজে ছাপাতে দেবে কিন্তু কারো অপমান সহ্য করবে না।