পরীক্ষা প্রস্তুতি : মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন। মাধ্যমিক ইতিহাস প্রথম অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর। প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা তোমরা যারা এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে তোমাদের সকলকে WWW.PARIKSHAPRASTUTI.ORG এক্সপার্ট টিমের পক্ষ থেকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। তোমরা যাতে মাধ্যমিক ইতিহাস বিষয়ে ১০০% নাম্বার পেতে পারো তার জন্য আমাদের টীম তোমাদের জন্য বিষয় ভিত্তিক chapter wise সাজেশন নিয়ে আসবে ধারাবাহিক ভাবে। আজকে মাধ্যমিক ইতিহাসের প্রথম অধ্যায়ের ৪ নাম্বারের প্রশ্ন-উত্তরের সাজেশন এবছরের জন্য তুলে ধরা হল। মাধ্যমিক ইতিহাস প্রথম অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর।
মাধ্যমিক ইতিহাস প্রথম অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর
[১] আধুনিক সামাজিক ইতিহাস চর্চায় নারী সমাজের ইতিহাসের গুরুত্ব লেখ।
উত্তরঃ নারী সমাজের ইতিহাস:- ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে সামাজিক ইতিহাসের অংশ হিসেবে নারী সমাজের ইতিহাস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আধুনিক ভারতে নারী সমাজের কার্যকলাপ ,সামাজিক মর্যাদা তথা অবস্থান বিবর্তনকে নারী সমাজের ইতিহাস বলা হয়।
আলোচ্য বিষয়: নারী সমাজের ইতিহাস বিভিন্ন সামাজিক প্রেক্ষাপটে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে প্রধানত আলোচনা করে।
উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ:নারী সমাজের ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ গুলি হল- জেরাল্ডিনফোবর্স এর লেখা উইমেন ইন মডার্ন ইন্ডিয়া এবং চিত্রা ঘোষের বাংলার রাজনীতি ও নারী আন্দোলন প্রভৃতি।
নারী ইতিহাসের গুরুত্ব :নারী ইতিহাস চর্চা বিভিন্ন দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। যেমন –
(ক) পূর্বে নারী সমাজের যে বিষয়গুলি উপেক্ষিত ছিল বর্তমানে নারী ইতিহাস চর্চার মাধ্যমে সেই বিষয়গুলিকে গুরুত্বসহকারে আলোচনা করা হচ্ছে।
(খ) নারীর ইতিহাস পারিবারিক ক্ষেত্রে নারী সমাজের উপর হিংসাত্মক কার্যকলাপ , শিশুর উপর অত্যাচার, বধু হত্যা, নারী নির্যাতন ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করে।
(গ) নারী ইতিহাস লিঙ্গবৈষম্য, পারিবারিক সম্পর্ক ,সামাজিক অবস্থার কথা তুলে ধরে।
(ঘ) বিভিন্ন যুগে নারীর সামাজিক, অর্থনৈতিক অবস্থার কথা তুলে ধরে নারীর ইতিহাস।
[২] ইতিহাসের উপাদান হিসেবে আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তরঃ সূচনা: ইতিহাস লেখার জন্য বিভিন্ন উপাদানের সাহায্য নিতে হয়। এই উপাদান গুলির মধ্যে লিখিত উপাদান গুলির গুরুত্ব সবথেকে বেশি। এরকমই দুটি গুরুত্বপূর্ণ লিখিত উপাদান হল- আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা।
উল্লেখযোগ্য আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা: আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল – বিপিনচন্দ্র পালের সত্তর বৎসর , রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনস্মৃতি, সরলা দেবী চৌধুরানীর জীবনের ঝরাপাতা প্রভৃতি।
আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথার গুরুত্ব: আধুনিক ইতিহাস রচনার উপাদান হিসেবে আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা গুরুত্ব গুলি হল
(ক) সাধারণ মানুষের কথা, লেখকের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ইত্যাদি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরে।
(খ) রাজনৈতিক ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির বিভিন্ন রকমের ব্যাখ্যা লেখক তার নিজের দৃষ্টিভঙ্গিতে তুলে ধরেন।
(গ) স্থানীয় ইতিহাস রচনার উপাদান হিসাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
(ঘ) জাতীয় ইতিহাসের বহু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লেখকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে।
[৩] বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী সত্তর বৎসর কেন ইতিহাসের উপাদান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তরঃ সূচনা: আত্মজীবনী বলতে বুঝায় নিজের সম্পর্কে লেখা। বিপিনচন্দ্র পালের লেখা আত্মজীবনীর নাম সত্তর বৎসর ।এই গ্রন্থটি সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয় প্রবাসী পত্রিকায় রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় এর সম্পাদনায়। এই গ্রন্থটি 1857 খ্রিস্টাব্দে থেকে 1880 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তৎকালীন বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেছে, যা ইতিহাস রচনার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
সত্তর বৎসর থেকে প্রাপ্ত ঐতিহাসিক তথ্যসমূহ: বিপিনচন্দ্র পালের লেখা সত্তর বৎসর আত্মজীবনী থেকে নিম্নরূপ ঐতিহাসিক তথ্য গুলি পাওয়া যায়-
(ক) জন্ম ও বংশপরিচয়: বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী থেকে জানা যায় তিনি 1858 খ্রিস্টাব্দে বর্তমান বাংলাদেশের শ্রী হট্ট পৈউল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
(খ) শিক্ষাব্যবস্থা: সত্তর বৎসর থেকে সমকালীন শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। সেই সময় প্রত্যেক গ্রামে টোল ও ফারসি শেখার জন্য মাদ্রাসা ও মক্তব ছিল ।পূর্বে নবাবদের কাজকর্মের জন্য ফারসি জানা লোকের প্রয়োজন ছিল বলেই অনেক হিন্দু ছাত্র মাদ্রাসায় ফারসি শেখতো।
(গ) সমাজব্যবস্থা: সত্তর বৎসর গ্রন্থ থেকে জানা যায় সে সময় সমাজ ছিল পুরুষতান্ত্রিক ।ব্রাহ্মসমাজে হিন্দু-মুসলমানের পাশাপাশি বসবাস করত এবং তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল। সমাজে ক্রীতদাস প্রথার প্রচলন ছিল । তাছাড়া এই গ্রন্থ থেকে তৎকালীন সমাজের বিভিন্ন রীতিনীতি ,খাদ্যাভাস, পোশাক-পরিচ্ছদ, নাচ-গান প্রভৃতি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।
(ঘ ) নারীশিক্ষা: সত্তর বৎসর গ্রন্থ থেকে জানা যায় সে সময় মেয়েদের লেখাপড়া শেখার রীতি ছিল না। তখন কুসংস্কার ছিল যে মেয়েরা লেখাপড়া শিখলে বিধবা হয় ।তবে উত্তরবঙ্গ এবং গৌড় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মধ্যে নারী শিক্ষা প্রচলিত ছিল।
(ঙ) রাজনৈতিক ব্যবস্থা: তৎকালীন বৃটিশ বিরোধী বিভিন্ন আন্দোলন এবং বিভিন্ন সভা সমিতির কার্যকলাপ সত্তর বৎসর গ্রন্থ
থেকে জানা যায়।
(৪) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মজীবনী “জীবনস্মৃতি”কে কেন ইতিহাসের উপাদান হিসেবে গণ্য করা হয়? অথবা
ইতিহাস রচনায় জীবনস্মৃতির গুরুত্ব লেখ।
উত্তর:- সূচনা:- জীবনস্মৃতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা স্মৃতিকথামূলক তথ্যসমৃদ্ধ একটি গ্রন্থ ।এটি ১৩১৯ বঙ্গাব্দে গ্রন্থ আকারে প্রকাশিত হয়।
জীবনস্মৃতি থেকে প্রাপ্ত তথ্য: ইতিহাস রচনার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনস্মৃতি নিম্নরূপ তথ্য গুলি তুলে ধরে। যেমন –
(i) ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল: জীবনস্মৃতি থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তথা ঠাকুর পরিবারের শিশুদের ছেলেবেলা ,তাদের শিক্ষালাভ ,সঙ্গীতচর্চা প্রভৃতি সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায় তাছাড়া ঠাকুর মহলের নারী-পুরুষদের অবস্থান, চাকর-বাকর দের কাজকর্ম উৎসব-অনুষ্ঠান অতিথিসেবা ইত্যাদি বিষয় সম্বন্ধে জানা যায়।
(ii) বাঙালি সমাজে জাতীয় চেতনার প্রসার: এই গ্রন্থ থেকে বাঙালি সমাজে জাতীয় চেতনার প্রসারের কথা জানা যায়। বাঙালিরা সে সময় পাশ্চাত্য শিক্ষা ও সংস্কৃতি গ্রহণের পাশাপাশি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চার দিকে মনোযোগী ছিলেন বলে জানা যায়।
(iii) বাঙালির স্বদেশ চিন্তা: এই গ্রন্থ থেকে জানা যায় নবগোপাল মিত্র প্রতিষ্ঠিত হিন্দুমেলা এবং অন্যান্য সংগঠনগুলি স্বদেশী দ্রব্য ব্যবহার এবং বিদেশি দ্রব্য বয়কট আন্দোলনে বাঙালি যুবসমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
(iv) রাজনৈতিক যোগ: জীবন স্মৃতি থেকে জানা যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রত্যক্ষভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের দেশাত্মবোধক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতেন।
(৫) সরলা দেবী চৌধুরানী জীবনের ঝরাপাতা থেকে আমরা কোন ঐতিহাসিক তথ্য পেতে পারি। অথবা
ইতিহাসের উপাদান হিসেবে জীবনের ঝরাপাতা গুরুত্ব লেখ।
উত্তর:- সূচনাঃ জীবনের ঝরাপাতা হল সরলা দেবী চৌধুরানীর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ এই গ্রন্থটি দেশ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে 13 51 থেকে 1352 বঙ্গাব্দে প্রকাশিত হয়েছে।
জীবনের ঝরাপাতা থেকে প্রাপ্ত তথ্য সমূহ:- ইতিহাস রচনার নিম্নরূপ গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো এই গ্রন্থ থেকে পাওয়া যায়
ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল: সরলা দেবী চৌধুরানী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বোন স্বর্ণকুমারী দেবীর মেয়ে। তাই তার এই গ্রন্থ থেকে ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলের বিভিন্ন বিষয়, নারী -পুরুষ সম্পর্ক, চাকর-বাকরদের কাজকর্ম ,উৎসব-অনুষ্ঠান, অতিথিসেবা ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায় ।
স্বদেশী চিন্তা: সরলা দেবী চৌধুরানী স্বদেশী দ্রব্যের ব্যবহার প্রচার করার জন্য লক্ষীর ভান্ডার নামে একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন । তিনি মহিলাদের উন্নতির জন্য আন্তরিকভাবে সচেষ্ট ছিলেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি 1911 খ্রিস্টাব্দে ভারত স্ত্রী মহামন্ডল নামে একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন।
বিপ্লবী কার্যকলাপ: জীবনের ঝরাপাতা থেকে সেই সময়কার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায় ।সরলা দেবী বাঙালি জাতির মধ্যে বীরত্বের সঞ্চার করার জন্য বীরাষ্টমী ব্রত এবং প্রতাপাদিত্য উৎসব এর প্রচলন করেছিলেন। তিনি সশস্ত্র বিপ্লবের পক্ষপাতী ছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবন: জীবনের ঝরাপাতা থেকেই জানা যায় সরলা দেবী স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন ।শেষ জীবনে তিনি ঈশ্বরের চিন্তায় নিমগ্ন ছিলেন।
(৬) ইতিহাস রচনার উপাদান হিসেবে ইন্দিরা গান্ধীকে লেখা পিতা জহরলাল নেহেরুর চিঠি গুলির গুরুত্ব কতখানি?
সূচনা: আধুনিক ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ব্যক্তিগত চিঠি পত্র বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ।এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হলো কন্যা ইন্দিরা গান্ধীকে পিতা জহরলাল নেহেরুর লেখা চিঠি গুলি। এই চিঠি গুলি পরবর্তীতে লেটার্স ফ্রম এ ফাদার টু হিজ ডটার নামে একটি গ্রন্থ আকারে প্রকাশিত হয়। ইন্দিরা কে লেখা জওহরলাল নেহেরুর চিঠি গুলি গুলি থেকে ইতিহাস রচনার নিম্নরূপ তথ্য গুলি পাওয়া যায়-
প্রকৃতি ও পৃথিবীর পরিচয়: প্রকৃতি ও পৃথিবীর পরিচয় পাওয়ার ক্ষেত্রে এই চিঠি গুলি ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ।এই চিঠি গুলিতে পাহাড়-পর্বত, সমুদ্র, নক্ষত্র, মরুভূমির জীব জন্তু ,মানুষ সমাজের বিবর্তন,উন্নয়ন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে ।
জাতী ও ভাষাগত ধারণা দান: বেশ কয়েকটি চিঠিতে নেহেরু কন্যা ইন্দিরাকে বিভিন্ন জাতির উৎপত্তি এবং বিভিন্ন ভাষার উৎপত্তি সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি আর্যদের ভারতে আগমন, রামায়ণ-মহাভারতের ঘটনা তুলে ধরেছেন ।
সভ্যতার বিকাশ: নেহেরু কন্যা ইন্দিরা মনে ইতিহাসবোধ গড়ে তোলার জন্য আগুনের আবিষ্কার ,ভাষা ,লিপি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, সমুদ্রযাত্রা প্রভৃতি বিষয়ে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
সামাজিক শ্রেণী বিন্যাস: তৎকালীন ভারতীয় সমাজে বিভিন্ন শ্রেণীর পরিচয় এই চিঠি গুলি থেকে পাওয়া যায়। রাজা, মন্দিরের পুরোহিত, কারিগর শ্রমিক-কৃষক প্রভৃতি শ্রেণীর পরিচয় পাওয়া যায়।
(৭) সংবাদপত্র এবং সাময়িক পত্রের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করো।
সূচনা: সংবাদপত্র এবং সাময়িকপত্র আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ।তবে এই দুটির মধ্যে কিছু তথ্য গত পার্থক্য আছে
সাময়িকপত্র এবং সংবাদ পত্রের মধ্যে পার্থক্য গুলি হল নিম্নরূপ
(1) সময়কাল কত পার্থক্য: সংবাদপত্রের সময়কাল সাময়িকপত্র প্রকাশের অনেক আগে বলেই মনে করা হয় ।
(2) আকার আকৃতি গত পার্থক্য: সংবাদপত্রগুলি সাময়িক পত্র গুলির তুলনায় অনেকটাই বড় হয় ।
(3) প্রকাশনার সময়কাল: সাময়িক পত্র গুলির নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রকাশিত হয় ।কখনো এক সপ্তাহ, কখনো এক মাস ,কখনো 3 মাস বা এক বছর অন্তর প্রকাশিত হয় । অন্যদিকে সংবাদপত্রগুলি প্রতিদিন প্রকাশিত হয়।
(4) বিষয়বস্তুর পার্থক্য: সংবাদপত্রগুলি থেকে সাধারণত আমরা দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন ঘটনাবলি সম্বন্ধে জানতে পারি। কিন্তু সাময়িক পত্র কেবলমাত্র একটি নির্দিষ্ট বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রকাশিত হতে পারে। সেটি যেমন সমাজের কোন দিক হতে পারে আবার কোন গবেষণা মূলক বিষয় হতে পারে।
(৮) আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনার উপাদান হিসেবে সংবাদপত্র ও সাময়িক পত্রের গুরুত্ব আলোচনা করো।
সূচনা: সংবাদপত্র ও সাময়িক পত্র আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে ।উনিশ শতক থেকে সংবাদপত্র এবং সাময়িক পত্রগুলি ভারতীয় ইতিহাসের বিভিন্ন তথ্য গুলি বহন করে চলেছে।
সংবাদপত্র ও সাময়িক পত্রের গুরুত্ব গুলি হল-
ঐতিহাসিক তথ্য:- সংবাদপত্র সাময়িক পত্র গুলির সমকালীন বিভিন্ন সামাজিক ,অর্থনৈতিক রাজনৈতিক ,ধর্মীয় ঐতিহাসিক তথ্যগুলিকে তুলে ধরে ।
ব্রিটিশ সরকারের বিভিন্ন নীতি: সংবাদপত্র ও সাময়িক পত্র গুলি সমকালীন ব্রিটিশ সরকারের বিভিন্ন শোষণমূলক নীতির সমালোচনা করেছিল এবং তাদের অত্যাচারের কাহিনী তুলে ধরেছিল। এই পত্রিকা গুলির মধ্যে হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
জাতীয় চেতনার বিকাশ: সংবাদপত্র সাময়িক পত্র গুলিতে সরকারের জন বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে ভারতীয়দের আন্দোলনের খবর প্রতিনিয়ত প্রকাশিত হয় ।এর ফলে ভারতীয় জনগণের মধ্যে সরকারের বিরুদ্ধে জাতীয় চেতনার বিকাশ ঘটে।
জনমত গঠন: ব্রিটিশ সরকারের পাস করা দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন ,ইলবার্ট বিল ,বঙ্গভঙ্গ প্রস্তাবপ্রভৃতির বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী জনমত গঠনে সমকালীন সংবাদপত্র ও সাময়িক পত্র গুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। সিপাহী বিদ্রোহ ,নীল বিদ্রোহের সময় জনমত গঠনে সংবাদপত্র এবং সাময়িক পত্র গুলী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
(৯) আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসেবে বঙ্গদর্শন পত্রিকার গুরুত্ব আলোচনা করো
সূচনা: আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনায় অন্যতম উপাদান হলো বঙ্গদর্শন পত্রিকা ।
ইতিহাসের উপাদান হিসেবে বঙ্গদর্শন পত্রিকার গুরুত্ব গুলি হল
তৎকালীন সমাজের ছবি: বঙ্গদর্শন পত্রিকায় তৎকালীন সমাজের জীবনযাত্রার সুন্দর বর্ণনা পাওয়া যায় ।এই পত্রিকার সম্পাদক বঙ্কিমচন্দ্র তৎকালীন বাবু সমাজ এবং ইংরেজদের সঙ্গে বাবু সমাজের সম্পর্কের সমালোচনা করেছেন।
বাঙালির সাংস্কৃতিক জীবনের ছবি: বাঙালি সমাজের সাংস্কৃতিক ইতিহাসকে সুন্দরভাবে তুলে ধরেছে বঙ্গদর্শন পত্রিকা ।এই পত্রিকার মধ্য দিয়ে নব্য শিক্ষিত বাঙালিদের সঙ্গে সাধারণ বাঙালি সমাজের সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন গড়ে উঠেছিল।
স্বদেশ চেতনা: ইতিহাসের উপাদান হিসেবে বঙ্গদর্শন পত্রিকা বাঙালি সমাজকে স্বদেশ চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছিল ।বঙ্কিমচন্দ্র বন্দেমাতরম সঙ্গীতটি প্রথম বঙ্গদর্শন পত্রিকাতে প্রকাশিত হয়েছিল ।এটি পরবর্তীকালে ভারতীয় বিপ্লবী এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মূলমন্ত্রে পরিণত হয়।
কৃষকদের অবস্থার বর্ণনা: বঙ্গদর্শন পত্রিকায় প্রকাশিত বঙ্গদেশের কৃষক অংশে বঙ্কিমচন্দ্র গ্রামীণ সমাজের হত দরিদ্র কৃষকদের দুর্দশার কথা বর্ণনা করেছেন। ইংরেজদের অত্যাচারের কাহিনী তিনি সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন।
(১০) আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনার উপাদান হিসেবে সোমপ্রকাশ পত্রিকার গুরুত্ব আলোচনা করো।
সূচনা: উনিশ শতকের ভারতের ইতিহাস রচনায় গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ সম্পাদিত সোমপ্রকাশ পত্রিকাটি।
ইতিহাসের উপাদান হিসেবে সোমপ্রকাশ পত্রিকার গুরুত্ব গুলি হল-
শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সমাজের মুখপত্র: উনিশ শতকের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বাঙালি সমাজের মুখপাত্র হয়ে উঠেছিল সোমপ্রকাশ পত্রিকাটি। পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত শহরের মধ্যবিত্তরা এই পত্রিকায় লেখালেখির মাধ্যমে তৎকালীন সরকারের নানা দমন মূলক শাসন নীতির আসল রূপ তুলে ধরতেন।
সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি: সোমপ্রকাশ পত্রিকায় বাল্য বিবাহ, বহু বিবাহ, কৌলিন্য প্রথা প্রভৃতি উপর লেখা প্রকাশিত হলে পাঠকদের মধ্যে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি পায় ।স্ত্রী শিক্ষা প্রসারের ক্ষেত্রে এই পত্রিকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
নীলকরদের অত্যাচারের বিবরণ: সোমপ্রকাশ পত্রিকা প্রথম থেকেই ভারতীয় সাধারণ কৃষকদের উপর নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের কাহিনী সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলত। এর ফলে সাধারণ মানুষের মনে এক বৃটিশ বিরোধী বাতাবরণ সৃষ্টি হয় ।
স্বদেশ চিন্তার প্রসার: এই পত্রিকার মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে ব্রিটিশবিরোধী স্বাদেশিকতার পক্ষে প্রচার চালানো হয় ।এর ফলে সাধারণ মানুষের মনে স্বদেশপ্রেমের জাগরণ ঘটে।
(১১) ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা এবং অসুবিধা গুলি লেখ। অথবা
ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ইন্টারনেটের গুরুত্ব লেখ।
সূচনা: কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ইন্টারনেট বলে ।ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটেছে ।তাই বর্তমান যুগকে তথ্য বিস্ফোরণের যুগ বলা হয়। ইন্টারনেটের সাহায্যে ইতিহাসের অনেক তথ্য পাওয়া যায়। তবে ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহে ইন্টারনেটের সুবিধা যেমন আছে তেমনি বেশ কিছু অসুবিধাও আছে।
ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা বা গুরুত্ব গুলি হল:
(i) সহজে তথ্য সংগ্রহ:- ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসে অতি সহজে ইতিহাসের বিভিন্ন ধরনের তথ্য পাওয়া যায় ।কোন কিছু বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন লিখে তার সরাসরি উত্তর পাওয়া যায়।
(ii) অর্থ বাঁচে:- ইতিহাসের কোন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভের জন্য বই কিনতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয় ।সেই তুলনায় সে বিষয়ের জ্ঞান লাভের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ অনেক কম ।
(iii) সময় বাঁচে:- ইতিহাসের কোন তথ্য সংগ্রহের সময় সেই বইটি পড়তে গিয়ে প্রচুর সময় লাগে কিন্তু ইন্টারনেটে নির্দিষ্ট বিষয়ে তথ্য বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন যেমন গুগল-ইয়াহু ইত্যাদির মাধ্যমে খুব অল্পসময়ের খুঁজে নেওয়া যায়।
(iv) সর্বশেষ তথ্য:- ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইতিহাসের বিভিন্ন গবেষণার লেটেস্ট বা সর্বশেষ তথ্য পাওয়া যায়।
ইন্টারনেটের অসুবিধা গুলি হল:
(i) নির্ভরযোগ্যতার অভাব:- ইন্টারনেট থেকে আমরা ইতিহাসের যে সমস্ত তথ্য গুলি পাই ,সেগুলি কতটা নির্ভরযোগ্য তা যাচাই করার সুযোগ কম। কারণ একই বিষয়ে আলাদা আলাদা ওয়েবসাইটে আলাদা আলাদা তথ্য থাকে ।
(ii) অসম্পূর্ণ তথ্য:- অনেক সময় ইন্টারনেট কোন গ্রন্থ বা গবেষণাপত্রের সম্পূর্ণ অংশ পাওয়া যায় না। এর ফলে সে বিষয়ের উপর সম্পূর্ণ ধারণা লাভ করা যায় না।
(iii) মনগড়া তথ্য:– ইন্টারনেটে আজকাল যে কেউ ইতিহাসের উপর নিজের মনগড়া তথ্য আপলোড করতে পারে। এর ফলে নির্দিষ্ট বিষয়ে ভ্রান্ত তথ্য পাঠককে বিভ্রান্ত করে।
(iv) অসম্পূর্ণ গবেষণা:- ইতিহাসের বিভিন্ন গবেষণার তথ্য সংগ্রহের সময় ইন্টারনেটে কখনো কখনো পরস্পরবিরোধী অসম্পূর্ণ গবেষণামূলক তথ্য পাওয়া যায়, যা পাঠককে বিভ্রান্ত করে।
Pingback: HS ENGLISH SUGGESTION 2023 THE EYES HAVE IT -SAQ | Pariksha Prastuti
Pingback: WBCHSE CLASS XI ENGLISH SUGGESTION 2023 LEELA'S FRIEND - SAQ | Pariksha Prastuti
Pingback: মাধ্যমিক লাস্ট মিনিট সাজেশন ২০২২ | বাংলা রচনা | Pariksha Prastuti
Pingback: MADHYAMIK BANGLA RACHANA SUGGESTION 2023 | Pariksha Prastuti
Pingback: FABLE- CLASS 10 - MADHYAMIK 2023 | Pariksha Prastuti
Pingback: AFRICA -BENGALI KABITA-CLASS 10 - MADHYAMIK-2023 | Pariksha Prastuti
Pingback: THE EYES HAVE IT-LAQ -HS ENGLISH SUGGESTION 2023 | Pariksha Prastuti
Pingback: মাধ্যমিক ইতিহাস প্রথম অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর ONLINE MOCK TEST | Pariksha Prastuti