পরীক্ষা প্রস্তুতি :অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার প্রশ্ন উত্তর । প্রিয় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা তোমরা যারা এবছর ২০২৩ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষাদেবে ,তোমাদের সম্পূর্ণ সিলেবাসের উপর পরীক্ষা হবে। তাই মাধ্যমিক বাংলা ”অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান” কবিতা থেকে এবছর পরীক্ষায় আসতে পারে এইরকম অতি গুরুত্বপূর্ণ কিছু সঠিক উত্তর নির্বাচনধর্মী প্রশ্ন-উত্তর (MCQ) ,অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর (VSAQ) সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর (SAQ ) এবং রচনাধর্মী বড় প্রশ্ন উত্তর (LAQ ) গুলি এখানে আলোচনা করা হল। তোমার এই প্রশ্ন উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য ভালো করে প্রস্তুতি করলে অবশ্যই অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতা থেকে সমস্ত ধরনের প্রশ্ন উত্তর তোমরা কমন পাবেই পাবে। মাধ্যমিক বাংলা অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার প্রশ্ন উত্তর
মাধ্যমিক বাংলা অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার প্রশ্ন উত্তর
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার সংক্ষিপ্ত বিষয় বস্তু
:প্রখ্যাত কবি জয় গােস্বামীর ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতাটি যুদ্ধের বিরুদ্ধে ও শান্তির সপক্ষে কবিতা। কবি যুদ্ধবাজদের অস্ত্র ত্যাগ করে সেই অস্ত্র পায়ের কাছে রাখতে বলেছেন। যুদ্ধকে প্রতিহত করার জন্য হাজার মানুষের প্রতিনিধি হয়ে উঠে দাঁড়িয়ে এগিয়ে এসে ধাবমান বুলেটকে প্রতিরােধ করবেন। তিনি যুদ্ধের পােশাক বর্ম নয়, শান্তির পােশাক যা গানের বর্ম, তা পরেছেন। তিনি অস্ত্রের যােদ্ধা নন শান্তির যােদ্ধা।
গান তার অল্পই জানা। গানের অল্প পুঁজি আঁকড়ে ধরে গানের গায়ের রক্ত মােছেন। গান হলাে শান্তির প্রতীক। শান্তির ওপর আঘাত অথবা রক্তের কলঙ্ক দাগ তিনি লাগতে দেন না। মাথার ওপর উড়ন্ত শকুন বা চিল হিংস্র মাংসাশী। তারা শান্তির দূত হতে পারে না। কবির শুধু একটা কোকিল, যার কণ্ঠের গান মধুক্ষরা, সে সহস্র উপায়ে শান্তির গানই বাঁধবে।
যুদ্ধ নয়, শান্তি স্থাপনের মহৎ উদ্দেশ্যে কবির নির্দেশ যুদ্ধবাজরা অস্ত্র ত্যাগ করে পায়ের কাছে ফেলুক। গায়ের যুদ্ধের সাজ খুলে খালি গা হােক। তখন সে ঋষিবালকতুল্য নিস্পাপ, নিষ্কলুষ। মাথায় তার গোঁজা ময়ূরপালক। গান তাকে নিয়ে বেড়াবে নদী, দেশগাঁয়ে— তামাম বিশ্বে। বিশ্বময় পরম শান্তি। কাজেই গান ওরফে শান্তির পদপ্রান্তে যুদ্ধাস্ত্র বর্জিত হােক।
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার সঠিক উত্তর নির্বাচনধর্মী প্রশ্ন-উত্তর MCQ
সঠিক উত্তর নির্বাচনধর্মী প্রশ্ন -MCQ (প্রশ্নমান – ১) অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান (জয় গোস্বামী) কবিতা প্রশ্ন উত্তর – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৩ – Madhyamik Bengali Suggestion 2023
[এখানে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরের চারটি অপসন দেওয়া আছে ,আর মধ্যে প্রথমে নিজে নিজে একটি উত্তর বেছে নাও এবং তার পরে Show Ans. এর উপর ক্লিক করে correct answer মিলিয়ে নাও ]
1)কোনটি জয় গোস্বামীর লেখা কবিতা ? [মাধ্যমিক ২০১৯][A]বাবরের প্রার্থনা
[B]অগ্নিবীণা
[C]রূপসী বাংলা
[D]পাতার পোশাক
2) ‘আঁকড়ে ধরে সে খরকুটো’— ‘খড়কুটো’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে ?
[A] অস্ত্রকে
[B]গানকে
[C]ঋষিবালককে
[D]কোকিলকে
3) ‘বর্ম খুলে দ্যাখো আদুড় গায়ে’ — আদুড় গায়ে’ কথাটির অর্থ কী ?
[A]ঝলমলে পোশাকে ঢাকা শরীর
[B]সাধারণ পোশাকে ঢাকা শরীর
[C]আবরণহীন শরীর
[D]কোনোটিই নয় ।
4) কবি কোথায় রক্ত মোছেন ?
[A]ময়ূরের গায়ে
[B]) কোকিলের গায়ে
[C] চিলের গায়ে
[D]গানের গায়ে
5) ‘গান তো জানি একটা দুটো’— সেই গানকে কবি কার সঙ্গে তুলনা করেছেন ?
[A]ইট-কাঠ
[B]খড়কুটো
[C]কাঠ-পাথর
[D]সোনা-দানা
6) ‘অস্ত্র ফ্যালো, অস্ত্র রাখো গানের দুটি পায়ে’ — কবিতাংশটির কবি —
[A]রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর
[B]নজরুল ইসলাম জয় গোস্বামী
[C]জীবনানন্দ দাশ
[D]জয় গোস্বামী
7)’আমার শুধু একটা কোকিল’ — এই কোকিলটি হল—
[A]কবির অনুভূতির জগৎ
[B]বসন্তের দূত
[C]এক ঋষিবালক
[D]একটি গ্রামের মানুষ
8)’অস্ত্র ফ্যালো, অস্ত্র রাখো’ — অস্ত্র কোথায় রাখবে ?
[A] বুলেটের পায়ে
[B]গানের পায়ে
[C]সুরের পায়ে
[D]গানের দুটি পায়ে
9) ‘হাত নাড়িয়ে _____ তাড়াই’ — শূন্যস্থান কোন শব্দ বসবে ?
[A]বুলেট
[B]মশা
[C]মাছি
[D]গান
10)কবি গানের গায়ে কী মোছেন ?
[A]অশ্রু
[B]রক্ত
[C]কান্না
[D]ঘাম
11) ‘তোমায় নিয়ে বেড়াবে গান’ — কোথায় ?
[A]নদীতে
[B]পাহাড়ে
[C]সাগরে
[D]আকাশে
12)’অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় শকুন বা চিল বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
[A]সুযোগ সন্ধানী মানুষকে
[B]উদার মানুষকে
[C]রাগী মানুষকে
[D]অসৎ মানুষকে ।
13) কবি কীসের বর্ম গায়ে পরেছেন ?
[A]লোহার
[B]কবিতার
[C]গানের
[D]চামড়ার
14)’অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় কবির কোকিল কীভাবে গান বাঁধে ?
[A]একটি সুরে
[B]লক্ষ সুরে
[C]সহস্র উপায়ে
[D]লাক্ষো উপায়ে
15)’আঁকড়ে ধরে সে’ —কী আঁকড়ে ধরে ?
[A]অস্ত্রকে
[B]ঋষি বালককে
[C]কোকিলকে
[D]খড়কুটোকে
16)ঋষিবালকের মাথায় কী গোঁজা ?
[A]বুনো ফুল
[B]আমের পাতা
[C]ধানের গাছ
[D]ময়ূর পালক
17)কবি জয় গোস্বামী পশ্চিমবঙ্গ সরকার থেকে কোন পুরস্কার লাভ করেন ?
[A] বঙ্গবিভূষণ
[B]শিক্ষারত্ন
[C] আনন্দ পুরস্কার
18)’বুলেট’ কি জাতীয় শব্দ –
[A]তৎসম শব্দ
[B]তদ্ভব শব্দ
[C]দেশি শব্দ
[D]বিদেশী শব্দ
19)অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান ‘ কবিতায় ‘অস্ত্র’ কোথায় ফেলার কথা বলা হয়েছে –
[A]হাতে
[B]পায়ে
[C]বুকে
[D]মাথায়
20)’গান বাঁধবে সহস্র উপায়ে ‘–কে গান বাঁধবে? [ মাধ্যমিক ২০২০ ][A]ছিল
[B]কোকিল
[C]শকুন
[D]ময়ূর
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর VSAQ
অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন (প্রশ্নমান – ১) অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান (জয় গোস্বামী) কবিতা প্রশ্ন উত্তর – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৩ – Madhyamik Bengali Suggestion 2023
১) “আঁকড়ে ধরে সে-খড়কুটো”—“সে-খড়কুটো’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তরঃ উদ্ধৃত পঙক্তিতে ‘সে-খড়কুটো’ বলতে কবির জানা একটা-দুটো গানকে বোঝানো হয়েছে।
২) “গান বাঁধবে সহস্র উপায়ে”—কে ‘সহস্ৰ উপায়ে’ গান বাঁধবে?
উত্তরঃ মানবতার পূজারি, প্রেমের গানের প্রতীক কবির একটি কোকিল সহস্র উপায়ে গান বাঁধবে।
৩) “বর্ম খুলে দ্যাখো”—কবি কাকে, কী দেখতে বলেছেন?
উত্তরঃ কবি জগৎবাসীকে—বিশেষ করে সমাজের স্বার্থান্ধ মানুষদেরকে আদুড় গায়ে মাথায় ময়ূরপালক গোঁজা ঋষিবালকের গান ও তার প্রভাব দেখতে বলেছেন।
৪) “গান দাঁড়াল ঋষিবালক” –“ঋষিবালক’বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?
উত্তরঃ ‘ঋষিবালক’শব্দটিকে বিশ্লেষণ করলে ‘ঋষির বালক’ বা ‘ঋষি সদৃশ বালক’ পাওয়া যায়। তবে এখানে ঋষিসদৃশ মানসিকতাসম্পন্ন প্রেমাবতার শ্রীকৃষকে বোঝানো হয়েছে।
৫) “মাথায় গোঁজা ময়ূরপালক”–কার মাথায় ময়ূরপালক গোঁজা দেখা যায় ?
উত্তরঃ পৌরাণিক কাহিনি মতে, দ্বাপরযুগের পরমপুরুষ শ্রীকৃয়ের মাথায় ময়ূরপালক গোঁজা দেখা যায়। এটি তার অলংকার সদৃশ।
৬) “তোমায় নিয়ে বেড়াবে গান/নদীতে, দেশগায়ে”—কীভাবে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে তুমি মনে করো?
উত্তরঃ অস্ত্র ফেলে দিলে, অস্ত্র গানের পায়ে রেখে মানবিকতা ও প্রেমবোধকে সম্বল করে সব মানুষ একাত্ম হতে পারলে গানের দ্বারা সবাইকে নিয়ে দেশগায়ে, নদীতে নিয়ে বেড়ানোর পরিস্থিতি তৈরি হবে।
৭) “রক্ত মুছি শুধু গানের গায়ে” –‘রক্ত মুছি’ ব্যাপারটি কী?
উত্তরঃ রক্ত মুছি’ ব্যাপারটি হল মানবতাবাদী কবি প্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে মনের সমস্ত গ্লানি, দুঃখ, যন্ত্রণা, ভালোমন্দ, ন্যায়-অন্যায় সবই সর্বকল্যাণময় ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করেন।
৮) “আমি এখন হাজার হাতে পায়ে” —পঙক্তির ‘আমি’ হাজার হাতে পায়ে কী করেন?
উত্তরঃ উদ্ধৃত পঙক্তির ‘আমি’ হাজার হাতেপায়ে এগিয়ে আসে, উঠে দাঁড়ায়, গানের বর্ম গায়ে পরে হাত নাড়িয়ে বুলেট তাড়ায়।
৯)“গানের বর্ম আজ পরেছি গায়ে” –‘বর্ম’কী?
উত্তরঃ ‘বর্ম ‘হল বিশেষ একধরনের অভেদ্য আবরণ, যা সারাদেহে ধারণ করে যোদ্ধারা যুদ্ধ করেন এবং শত্রুপক্ষের অস্ত্রাঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা করেন।
১০) “গান তো জানি একটা দুটো”—উদ্ধৃত পঙক্তির একটা দুটো গান কী হতে পারে বলে তুমি মনে করো?
উত্তরঃ উদ্ধৃত পঙক্তির একটা দুটো’ গান যা হতে পারে বলে আমার মনে হয় তা হল—মানবিকতার গান ও মানবপ্রেমের গান।
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর SAQ
ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন (প্রশ্নমান – ৩) অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান (জয় গোস্বামী) কবিতা প্রশ্ন উত্তর – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৩ – Madhyamik Bengali Suggestion 2023
১)মাথায় কত শকুল বা চিল’—উদ্ধৃতাংশটি ব্যাখ্যা করাে।
উত্তর : কবি জয় গােস্বামীর ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতা থেকে উদ্ধৃত এই অংশে শকুন বা চিল বলতে কবি স্বার্থান্ধ, অস্ত্রনির্ভর, যুদ্ধবাজ মানুষদের বুঝিয়েছেন। স্বার্থান্ধ, সুবিধাবাদী, লােভী, নিষ্ঠুর, অস্ত্রনির্ভর মানুষগুলি যাবতীয় মানবিক হৃদয় বৃত্তি, বােধ-বুদ্ধিকে বিসর্জন দিয়েছে।
তারা যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলায় মেতে উঠে হেলায় পদদলিত করছে মানবকে তাদের একমাত্র লক্ষ্য যেনতেন উপায়ে স্বার্থ সিদ্ধি করা। তাদের এই ঘৃণ্য স্বার্থান্ধ হিংস্র প্রয়াসের চিত্রটি ভাগাড়ের ওপর মৃতভুক তীক্ষ নখ-চক্ষুবিশিষ্ট শকুনের চক্কর কাটার সঙ্গে তুলনীয়।
২)গানের বর্ম আজ পরেছি গায়ে—কোন প্রসঙ্গে কেন এই কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : প্রসঙ্গ : কবি জয় গােস্বামী রচিত অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতায় বুলেট সর্বস্ব যুদ্ধবাদ মানুষদের রণং দেহি মনােভাবের বিরুদ্ধে কবির এই বক্তব্য।
বলার কারণ : হাজার হাজার মানুষের প্রতিনিধি হয়ে কবি যুদ্ধের এবং শান্তির পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। তিনি গানের বর্ম গায়ে পড়ে নিয়েছেন। অর্থাৎ সুন্দরকে বরণ করে নিয়েছেন। গান আছে বলে কবি জীবনের আনন্দ পান সেই ইতিবাচক বক্তব্য আলােচ্য অংশটির মধ্যে ধরা পরেছে।
উত্তর : কবির একথা বলার কারণ : অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতায় কবি জয় গােস্বামী গান দিয়ে জীবন রক্ষার আনন্দ বার্তাটুকু পৌঁছে দিতে চান। সেই প্রসঙ্গে আলােচ্য উক্তি।
উত্তর : তাৎপর্য : গানের কথা এবং সুরের সঙ্গে রসিক মানুষের অন্তরের বিশ্বভবন সম্ভব হয়। গানের মধ্যে যেমন রয়েছে, প্রখরতা তেমনি গানের মধ্যে রয়েছে মাটির ছোঁড়া। গান হৃদয়ের এক আশ্চর্য বিস্তৃতি ঘটায়। তুচ্ছ জাগতিক বিষয় থেকে মনকে অন্য জায়গায় নিয়ে যায়। গানের মাধ্যমে সম্ভব হয় প্রকৃতির সঙ্গে সংযােগ। মানুষের কাছাকাছি পোঁছায়। তাই কবি বলেন গানের মাধ্যমে নদীতে এবং দেশগাঁয়ে পৌঁছে যাবে।
উত্তর : কবি বক্তব্য : কবি জয় গােস্বামী অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতায় বুলেট অর্থাৎ অস্ত্র থেকে নির্গত গুলি প্রতিহত করার কথা বলেছেন, এখানে হাত নাড়িয়ে বুলেট তাড়ানাে বলতে মনুষ্যত্বের গানের সজীবতার কথা। শত আঘাতকে তুচ্ছ করে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। কবি মানবিকতার মন্ত্রকে ধারণ করে এগিয়ে। যেতে চান। এই কথার মাধ্যমে কবি প্রতিবাদী মানুষের কথা বলা হয়েছে।
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার রচনাধর্মী বড় প্রশ্ন উত্তর (LAQ )
রচনাধর্মী বড় প্রশ্ন উত্তর (প্রশ্নমান – ৫) অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান (জয় গোস্বামী) কবিতা প্রশ্ন উত্তর – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৩ – Madhyamik Bengali Suggestion 2023
১)কবি জয় গােস্বামীর ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় যুদ্ধবিরােধী মনােভাবের যে প্রকাশ ঘটেছে তা নিজের ভাষায় বিবৃত করাে।
অথবা , গান কীভাবে অস্ত্রের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে তা ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতা অনুসারে লেখাে।
অথবা, ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় কবি গানকে কীভাবে অস্ত্রের চেয়ে বেশি শক্তিশালী বলে প্রমাণ করেছেন?
উত্তর : কবি জয় গােস্বামী তার ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় অস্ত্রের অপরিসীম ধ্বংসক্ষমতার বিরুদ্ধে গানকেই হাতিয়ার করেছেন। প্রমাণ করেছেন গান অস্ত্রের চেয়ে বেশি শক্তিশালী।
অস্ত্র এবং গান চরিত্রগতভাবে পরস্পর বিপরীত মেরুতে অবস্থান করে। অস্ত্র হত্যা করে, আতংক সৃষ্টিকরে ধ্বংস করে। গান প্রাণে সুধা সঞ্চার করে। প্রেমের মন্ত্রে দীক্ষিত করে। সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করে। কবি দেখেছেন অস্ত্র হাতে নিয়ে মানুষ হিংস্রতার মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছে। হানাহানি, রক্তপাত, ধ্বংসযজ্ঞ চলছে নির্বিচারে। এই অবস্থায় হাত গুটিয়ে বসে থাকা শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। অস্ত্রের এই আস্ফালন, অস্ত্রধারীদের এই ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করা প্রয়ােজন। কবি জানেন অস্ত্রের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করে অস্ত্রের আস্ফালন কমানাে যাবে না। অমানবিকতার বিরুদ্ধে অমানবিকতা কোনাে অস্ত্র নয়। আগুন দিয়ে আগুন নেভানাে যায় না। প্রয়ােজন শুভ বােধবুদ্ধির বিকাশ, প্রকৃত কল্যাণকর প্রয়াস। গানের ক্ষমতা অপরিসীম, গান প্রাণে সুধা সঞ্চার করে হৃদয়ের যাবতীয় দীনতা-দুর্বলতা, পাপকে ধুয়ে মুছে নির্মল করে। শুভ চেতনা, সৃজনশীলতা জাগ্রত করে। ঐক্যবদ্ধ করে বিচ্ছিন্ন মানুষদের। গানের বর্ম গায়ে পরে নিয়েই কবি অস্ত্রের বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়িয়েছেন— ‘আমি এখন হাজার হাতে পায়ে এগিয়ে আসি, উঠে দাঁড়াই/ হাত নাড়িয়ে বুলেট তাড়াই। বুলেট যেন মশা-মাছি।
প্রশ্ন) ‘অস্ত্র ফ্যালাে, অস্ত্র রাখাে পায়ে’-কবি কেন অস্ত্র ফেলে দিতে বলেছেন? কবির এই আবেদনের মধ্যে তার কোন মানসিকতা ধরা পড়েছে?
উওর: কবি জয় গােস্বামী তার ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় অস্ত্রনির্ভর, ক্ষমতাদম্ভী মানুষদের কাছে অস্ত্র ত্যাগের আবেদন রেখেছেন। অস্ত্র হিংসা, হানাহানি এবং ধ্বংসের প্রতীক। মানুষের নিকৃষ্টতম প্রবৃত্তিকে উৎসাহিত করে অস্ত্র। জাগিয়ে তােলে ক্ষমতার দম্ভ। বিচ্ছিন্নতার বীজ বপন করে মানুষের মধ্যে বিভেদের প্রাচীর তুলে দেয়। শুভ চেতনা, সৌভ্রাতৃত্ব প্রভৃতি মানবিক গুণগুলিকে ধ্বংস করে মানুষকে পিশাচের পর্যায়ে নামিয়ে দেয়। হিংস্রতা বৃদ্ধি করে পৃথিবীর সংকটকে ঘনীভূত করে তােলে। এমন একটা নেতিবাচক উপাদানের জন্য অর্থব্যয়কে কবি অনর্থক বলে মনে করেন, তাই অস্ত্র ত্যাগের আবেদন রেখেছেন।
কবির এই আবেদনের মধ্যে যুদ্ধবিরােধী, মানবকল্যাণকামী মনােভাবের প্রকাশ ঘটেছে। পৃথিবীর ক্রমবর্ধমান অস্ত্র প্রতিযােগিতায় কবি আতঙ্কিত। অস্ত্রনির্ভর স্বার্থান্ধ মানুষের পৈশাচিক তাণ্ডবের
পরিণতি কী হতে পারে তা তিনি উপলব্ধি করেছেন। তাই সভ্যতার শুভ চেতনা জাগ্রত করতে তিনি সচেষ্ট হয়েছেন। কবি দেখেছেন বিশ্বব্যাপী অস্ত্র প্রতিযােগিতায় ব্যয় হয়ে যাচ্ছে বিরাট অঙ্কের অর্থ অথচ দেশের সাধারণ নাগরিকের নিরন্ন, কর্মহীন অবস্থা। সামান্য গ্রাসাচ্ছাদনের সংস্থানটুকু হচ্ছে না। এ এক ক্ষমাহীন অবিমৃষ্যকারিতা। মানুষের শুভ চেতনা জাগ্রত করে তার সৃজনশীল সত্তাকে কবি উৎসাহিত করতে চান। তাই অস্ত্রের পরিবর্তে গানে তার আস্থা। গান হলাে প্রাণের ভাষা। গান শুভ চেতনা ও কল্যাণবােধকে জাগ্রত করে। মানবিক গুণগুলির বিকাশ ঘটায়। অস্ত্র গানের কণ্ঠরােধ করে, জীবনকে নারকীয় করে তােলে। কাজেই অস্ত্র ত্যাগের মধ্যেই আছে মানবের প্রকৃত কল্যাণ, আনন্দমুখর জীবনের সন্ধান।
Pingback: অসুখী একজন কবিতার MCQ & SAQ | Pariksha Prastuti