পরীক্ষা প্রস্তুতি :সিন্ধুতীরে কবিতার প্রশ্ন উত্তর। প্রিয় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা তোমরা যারা এবছর ২০২৩ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষাদেবে ,তোমাদের সম্পূর্ণ সিলেবাসের উপর পরীক্ষা হবে। তাই মাধ্যমিক বাংলা সিন্ধুতীরে কবিতা থেকে এবছর পরীক্ষায় আসতে পারে এইরকম অতি গুরুত্বপূর্ণ কিছু সঠিক উত্তর নির্বাচনধর্মী প্রশ্ন-উত্তর (MCQ ) , সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর (SAQ ) এবং রচনাধর্মী বড় প্রশ্ন উত্তর (LAQ ) গুলি এখানে আলোচনা করা হল। তোমার এই প্রশ্ন উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য ভালো করে প্রস্তুতি করলে অবশ্যই সিন্ধুতীরে কবিতা থেকে সমস্ত ধরনের প্রশ্ন উত্তর তোমরা কমন পাবেই পাবে।
মাধ্যমিক বাংলা সিন্ধুতীরে কবিতার MCQ ধর্মী প্রশ্ন উত্তর
1)সিন্ধুতীরে কবিতাটি সৈয়দ আলাওলের লেখা কোন মূল কাব্য গ্রন্থের অন্তর্গত ?
[A]লোরচন্দ্রানী
[B]পদ্মাবতী
[C]সতীময়না
[D]তোহফা
2)”কন্যারে ফেলিল যথা “- কন্যাটি হলেন –
[A]বেহুলা
[B]লহনা
[C]রত্ন সেনের কন্যা পদ্মাবতী
[D]রম্ভা
3)’অতি মনোহর দেশ ”-মনোহর দেশটি কোথায় অবস্থিত ?
[A]নদীতীরে
[B]পুরীতে
[C]কাশ্মীরে
[D]সিন্ধুতীরে
4)সমুদ্রনৃপতি সুতা কে?
[A]লক্ষ্মী
[B]পদ্মা
[C]উমা
[D]বারুনী
5)”দিব্য পুরী ‘ শব্দটির অর্থ হল –
[A]জলের মাঝারে
[B] পিতৃপুরে
[C]সমুদ্র মাঝারে
[D]উদ্যানের মাঝে
6) ‘প্রত্যুষ’ শব্দের অর্থ হল –
[A]রাত্রি
[B] দ্বিপ্রহর
[C] অপরাহ্ণ
[D]ভোর
7)’তাহাতে বিচিত্র টঙ্গি …’- টঙ্গি ‘ শব্দের অর্থ –
[A]গাছপালা
[B]তিরধনুক
[C]টালি
[D]প্রাসাদ
8)’অতি মনোহর দেশ ‘ বলতে বোঝানো হয়েছে –
[A] সিংহলকে
[B]সমুদ্র পার্শ্ববর্তী পার্বত্য অঞ্চলকে
[C]সমুদ্রকে
[D] চিতোরকে
9)’সিন্ধুতীরের উপরের পর্বত ছিল—
[A]জনমানুষে পূর্ণ
[B]পশুপাখিতে ভরা
[C]ফল ফুলে সজ্জিত
[D]ঘরবাড়িতে পূর্ণ
10)’বিদ্যাধরি ’ আসলে কে ?
[A]ইন্দ্রের সভার গায়িকা
[B]ইন্দ্রের সভার বাচিক শিল্পী
[C]ব্রহ্মার মানসকন্যা
[D]ইন্দ্রের সভার নৃত্যশিল্পী
11)”সিন্ধুতীরে রহিছে মাঞ্জস ।’— ‘ মাঞ্জুস ’ শব্দটির অর্থ –
[A] বজরা
[B]ভেলা
[C]জাহাজ
[D]লহর
12) ‘শ্ৰীযুত মাগন ’ হলেন –
[A]পদ্মার পিতা
[B]মোহন্ত
[C] আলাওলের পৃষ্ঠপোষক
[D]ইন্দ্ৰ
13)’অচেতন পঞ্চকন্যাকে সারিয়ে তোলা হল –
[A]ভেষজ ওষুধ দিয়ে
[B]তন্ত্র – মন্ত্র – মহৌষধি দিয়ে
[C]কন্দ – শিকড় দিয়ে
[D]ফল – মূল দিয়ে
14):রূপে এটি রম্ভা জিনি “-রম্ভা হলেন –
[A]অপ্সরা
[B]দেবী
[C]দাসী
[D]সখি
15) ‘বিস্মিত হইল বালা ‘ — ‘ বালা ‘ শব্দের অর্থ হল –
[A]সখি
[B]সঙ্গীনি
[C]কন্যা
[D]দুখিনী
সিন্ধুতীরে কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর SAQ ছোট প্রশ্ন
১)’কন্যার ফেলিল যথা ‘ কন্যাকে কোথায় ফেলা হয়েছিল? (মাধ্যমিক ,২০১৮)
উত্তরঃ সৈয়দ আলাওলের “পদ্মাবতী ” কবিতায় কন্যা অর্থাৎ রানি পদ্মাবতী এক সামদ্রিক বিপর্যয়ের সম্মুক্ষীন হয়ে সমুদ্রবেষ্টিত এক দিব্যস্থানে অচৈতন্য অবস্থায় ভেসে ছিলেন। কন্যাকে ফেলা হয়েছিল বলতে সেই দিব্যস্থানটিকেই বোঝানো হয়েছে।
২)’সিন্ধুতীরে রয়েছে মাঞ্জস ‘-‘মাঞ্জস ‘ শব্দের অর্থ কি ? (মাধ্যমিক,২০২০)
উত্তরঃ সৈয়দ আলাওলের লেখা ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতার অন্তর্গত ‘মাঞ্জস ‘ শব্দের অর্থ হল – ‘ভেলা’ বা ‘মান্দাস’।
৩)’দেখিয়া রূপের কলা বিস্মিত বালা /অনুমান করে নিজ চিত্তে ‘-‘বালা ‘কি অনুমান করেন ?(মাধ্যমিক , ২০১৭ )
উত্তরঃ সৈয়দ আলাওলের ‘সিন্ধুতীরে ‘ কবিতায় সমুদ্রকন্যা পদ্মার অনুমান দেবরাজ ইন্দ্রের অভিশাপে বিদ্যাধরী অর্থাৎ পদ্মাবতী স্বর্গ ভ্ৰষ্ট হয়ে সমুদ্রতীরে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে আছেন।কিন্তু প্রকৃতপক্ষে চিতোরের রানী পদ্মাবতী সামদ্রিক দুর্যোগে চেতনাহীন অবস্থায় সমুদ্রতীরে পড়ে ছিলেন।
৪)’পঞ্চকন্যা পাইলা চেতন’-পাঁচ কন্যা কারা ?পঞ্চকন্যা কিভাবে চেতনা ফিরে পেল ?(পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন )
উত্তরঃ সৈয়দ আলাওলের ‘সিন্ধুতীরে ‘ কবিতায় উল্লেখিত পঞ্চকন্যা হলেন -চিতোরেন রানী পদ্মাবতী এবং তার চারজন সখি -চন্দ্রকলা,বিজয়া ,রোহিনী ,বিধুন্নলা।
সমুদ্রকন্যা পদ্মা এবং তার সখীদের সেবায় চিতোরের রানী পদ্মাবতী এবং তার চার সখি চেতনা ফিরে পায়।
৫)পদ্মা ও তাঁর সখীরা পঞ্চকন্যার কী চিকিৎসা করেছিলেন ?
উত্তরঃ ‘ সিন্ধুতীরে ’ কবিতায় পদ্মা ও তাঁর সখীরা অচৈতন্য পঞ্চকন্যাকে মাথায় ও পায়ে গরম সেঁক দেন । পদ্মা তাঁর অর্জিত বিদ্যাবলে তন্ত্রমন্ত্র ও মহৌষধি দিয়ে তাদের চিকিৎসা করেন ।
৬)‘ তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ ।।— ‘ তথা ” বলতে কোন্ স্থানের কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কাব্যাংশ থেকে গৃহীত আলোচ্য অংশে ‘ তথা ‘ বলতে সমুদ্রকন্যা পদ্মার নিজের হাতে রচিত উদ্যানের মধ্যে অবস্থিত রত্নখচিত উচ্চ টঙ্গি অর্থাৎ রাজপ্রাসাদের কথা বলা হয়েছে ।
৭)প্রত্যুষ কালে পদ্মা কী করতেন ?
উত্তরঃ সিন্ধুতীরে কবিতায় , সমুদ্রকন্যা পদ্মা পিতৃগৃহে হেসে – খেলে সুখে রাত্রিযাপন করতেন এবং প্রত্যুষে অর্থাৎ খুব সকালে সখীদের সঙ্গে নিয়ে নিজের তৈরি বাগানে ভ্রমণ করতেন ।
৮)‘ তুরিত গমনে আসি – তুরিত গমনে এসে পদ্মা কী দেখতে পেলেন ?
উত্তরঃ ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতানুসারে ভোরবেলা সখীসহ বাগানে বেড়ানোর সময় পদ্মা সমুদ্রতীরে একটি ভেলা দেখতে পেয়ে দ্রুত সেখানে পৌঁছে ভেলায় অচৈতন্য পাঁচ কন্যাকে দেখতে পেলেন ।
৯)‘ মধ্যেতে যে কন্যাখানি কোন কন্যার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কাব্যাংশে সমুদ্রকন্যা পদ্মা উদ্যান – ভ্রমণে এসে সংজ্ঞাহীন পঞ্চকন্যার মধ্যে স্বর্গের অপ্সরার মতো সুন্দর সিংহল – রাজকন্যা পদ্মাবতীকে আবিষ্কার করলেন । এখানে তাঁর কথাই বলা হয়েছে ।
১০)‘ শ্রীযুত মাগন গুণী — আলাওল তাঁর কবিতার শেষে মাগনের নাম উল্লেখ করেছেন কেন ?
উত্তরঃ কবি সৈয়দ আলাওল আরাকান রাজসভার অমাত্য মাগন ঠাকুরের আদেশে ‘ পদ্মাবতী ‘ রচনা শুরু করেন । তাই সেকালের মধ্যযুগীয় সাহিত্যরীতি অনুসারে তাঁর প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা জানাতে কবিতার শেষে মাগন ঠাকুরের নাম উল্লেখ করা হয়েছে ।
সিন্ধুতীরে কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর LAQ বড় প্রশ্ন উত্তর
১)’অতি মনোহর দেশ’-এই মনোহর দেশের সৌন্দর্যের পরিচয় দাও। (মাধ্যমিক,২০১৯)
অথবা
‘অতি মনোহর দেশ’-সিন্ধুতীরে কবিতাংশ অবলম্বনে মনোহর দেশের সৌন্দর্যের পরিচয় দাও। (পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন )
উত্তরঃ কবি সৈয়দ আলাওলের লেখা পাঠ্য ‘ সিন্ধুতীরে ’ কবিতা অনুসারে পদ্মাবতী সমুদ্রের তীরে যেখানে পড়েছিলেন , সেখানে একটি অনন্য সৌন্দর্যময় নগরী অবস্থিত । সেখানে দুঃখদুর্দশার লেশ মাত্র নেই । ন্যায় , সত্যধর্ম ও সদাচার সেখানে সর্বদা বিরাজমান । সেই সমুদ্র তীরবর্তী স্থানে পর্বত সমীপে সমুদ্ররাজ ও তাঁর কন্যার বাসস্থান । সমুদ্র – অধিপতি – কন্যা পদ্মা সেখানে এক উদ্যান রচনা করেছিলেন । নানা সৌন্দর্যময় ও সুগন্ধি ফুলে সে – উদ্যান সুরভিত । সেইসব ফুলের সৌরভ মূল্যবান সুগন্ধির চেয়েও সুগন্ধময় । সমুদ্রসুতার এই উদ্যানটি বিভিন্ন ধরনের সুলক্ষণযুক্ত বৃক্ষে পরিপূর্ণ । এইখানে মণিমাণিক্যখচিত প্রাসাদে রাজকন্যা বসবাস করতেন । হতচেতন পদ্মাবতী তাঁর সখীসহ এখানে এসে পড়েছিলেন ।
২)‘ কন্যারে ফেলিল যথা— কন্যার পরিচয় দাও । তাকে যেখানে ফেলা হয়েছিল , সেই স্থানটি কীরুপ ছিল ?
উত্তরঃসপ্তদশ শতকের আরাকান রাজসভার কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘ পদ্মাবতী ’ কাব্যের থেকে গৃহীত ‘ সিন্ধুতীরে ’ নামক পদ্যাংশ থেকে কন্যার পরিচয় আলোচ্য অংশটি উদ্ধৃত । কাব্যের মুখ্য চরিত্র পদ্মাবতীকেই এখানে ‘ কন্যা ‘ বলে সম্বোধন করা হয়েছে । পদ্মাবতী ছিলেন সিংহল রাজদুহিতা । ইতিহাস ও লোকশ্রুতি অনুসারে এই পদ্মাবতী পরবর্তীকালে চিতোরের রানা রত্নসেনের দ্বিতীয় পত্নীর মর্যাদা লাভ করেন ।
পাঠ্য ‘ সিন্ধুতীরে ’ কবিতা অনুসারে পদ্মাবতী সমুদ্রের তীরে যেখানে পড়েছিলেন , সেখানে একটি অনন্য সৌন্দর্যময় নগরী অবস্থিত । সেখানে দুঃখদুর্দশার লেশ মাত্র নেই । ন্যায় , সত্যধর্ম ও সদাচার সেখানে সর্বদা বিরাজমান । সেই সমুদ্র তীরবর্তী স্থানে পর্বত সমীপে সমুদ্ররাজ ও তাঁর কন্যার বাসস্থান । সমুদ্র – অধিপতি – কন্যা পদ্মা সেখানে এক উদ্যান রচনা করেছিলেন । নানা সৌন্দর্যময় ও সুগন্ধি ফুলে সে – উদ্যান সুরভিত । সেইসব ফুলের সৌরভ মূল্যবান সুগন্ধির চেয়েও সুগন্ধময় । সমুদ্রসুতার এই উদ্যানটি বিভিন্ন ধরনের সুলক্ষণযুক্ত বৃক্ষে পরিপূর্ণ । এইখানে মণিমাণিক্যখচিত প্রাসাদে রাজকন্যা বসবাস করতেন । হতচেতন পদ্মাবতী তাঁর সখীসহ এখানে এসে পড়েছিলেন ।
৩)তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ । ” – কোন কন্যার কথা বলা হয়েছে ? কন্যা কোথায় এবং কেন সর্বক্ষণ থাকে ?
উত্তরঃ কবি সৈয়দ আলাওলের লেখা ‘পদ্মাবতী’কবিতায় উল্লেখিত অংশে ‘কন্যা বলতে ‘ সমুদ্রকন্যা ‘ পদ্মার কথা বলা হয়েছে । রাজসভার কন্যা কোথায় এবং কেন সর্বক্ষণ থাকে
কবি আলাওল সিন্ধুতীরের যে অংশে পদ্মাবতী অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিল সেখানকার এক সুন্দর বর্ণনা তুলে ধরেছেন । ‘ সমুদ্রনৃপতিসুতা ’ পদ্মা এখানেই তার বাসস্থান গড়ে তোলেন । অপরূপ সৌন্দর্যময় প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য স্থানটিকে দিব্যভূমির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে । সেখানে কোনো দুঃখকষ্ট ছিল না । ছিল শুধু সদ্আচরণ ও সত্যধর্ম পালনের অভ্যাস । সেই দিব্যভূমির উপরের দিকে ছিল এক পর্বত । সেখানে সমুদ্রকন্যা পদ্মা এক উদ্যান তৈরি করেন । যে – উদ্যানে ফল ও ফুলের প্রাচুর্য ছিল । নানান ফুলের সুগন্ধে বাগানটি ভরে থাকত । এরই মাঝে পদ্মা রত্নশোভিত বিচিত্র প্রাসাদ গড়ে তোলেন । এইরূপ অপরূপ রূপময় সৌন্দর্যপূর্ণ স্থান পরিত্যাগ করতে কারই বা ভালো লাগে । তাই পদ্মাও সমুদ্রতীরের সেই দিব্যস্থান ত্যাগ না করে সেখানেই সর্বক্ষণ থাকেন ।
৪)‘ পঞ্চকন্যা পাইল চেতন / – পঞ্চকন্যা কাদের বলা হয়েছে । পঞ্চকন্যা কীভাবে চেতনা ফিরে পেয়েছিল ?
উত্তরঃ ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতাটি সৈয়দ আলাওল রচিত। এই কবিতায় পঞ্চকন্যা বলতে সিংহল রাজকন্যা ‘ পদ্মাবতী ‘ ও তার চার সখীকে ( চন্দ্রকলা , বিজয়া , রোহিণী , বিষন্নলা ) বোঝানো হয়েছে ।
প্রাতঃকালে ভ্রমণরতা পদ্মা সমুদ্রতীরে ভেলায় চার সখীসহ অপরূপ পদ্মাবতীকে অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পান । তাদের বসন ও কেশ বিন্যাস দেখে পদ্মার মনে হয়েছিল সমুদ্রের প্রবল ঝড়ে তাদের এই অবস্থা । মমতাবশত পদ্মা তাদের পরীক্ষা করে দেখেন যে , তাদের মধ্যে সামান্যতম শ্বাস বর্তমান । স্নেহময়ী পদ্মা বিধাতার ওপর বিশ্বাস রেখে দেবতার কাছে অচৈতন্য পঞ্চকন্যার জীবন ফিরে পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করেন । তিনি দেবতার কাছে এও অঙ্গীকার করেন যে , তিনি এই কন্যাদের প্রাণপণে চিকিৎসা করবেন । সেইমতো সখীদের তিনি নির্দেশও দেন । সঙ্গীরা পঞ্চকন্যাকে কাপড়ে ঢেকে উদ্যানের মাঝে আনেন । তারপর তাদের মাথায় ও পায়ে গরম সেঁক দেওয়া হয় , এ ছাড়া মন্ত্র – তন্ত্র – মহৌষধ সব কিছুই প্রয়োগ করা হয় । এইভাবে চারদণ্ড চলার পর পঞ্চকন্যা চেতনা ফিরে পান ।
৫)‘ দেখিয়া রূপের কলা বিস্মিত হইল বালা / অনুমান করে নিজ চিতে ‘ — ‘ বালা ‘ শব্দের অর্থ কী ? তার বিস্মিত হওয়ার কারণ কী ? তাকে দেখে বক্তার কী মনে হয়েছিল ?
উত্তরঃসপ্তদশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি আলাওলের ‘ পদ্মাবতী ’ কাব্য থেকে আমাদের পাঠ্য ‘ সিন্ধুতীরে ’ কবিতাটি গৃহীত । এখানে ‘ বালা ’ শব্দের অর্থ ‘ কন্যা ‘ । কবিতায় ‘বালা ‘ বলতে সমুদ্ররাজের কন্যা পদ্মাকে বোঝানো হয়েছে ।
বিস্মিত হওয়ার কারন :সমুদ্রকন্যা পদ্মা সমুদ্রতীরে ভেলায় চার সখী পরিবৃতা এক অপরূপা সুন্দরী রমণীকে দেখেছিলেন । তাকে দেখে তাঁর রম্ভা অর্থাৎ স্বর্গের অপ্সরা বলে মনে হয় এবং তিনি তার রূপে বিস্মিত হন ।
বক্তার প্রতিক্রিয়া : সখী পরিবৃতা অচৈতন্য পদ্মাবতীর রূপ – লাবণ্য দেখে পদ্মা তাকে স্বর্গের অপ্সরার সঙ্গে তুলনা করেন এবং বিস্মিত হন । তিনি এও চিন্তা করেন যে , কন্যা বুঝি স্বর্গের গায়িকা বিদ্যাধরি । ইন্দ্রের শাপে হয়তো স্বর্গ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছেন । তার ( তাদের ) অচৈতন্য অবস্থায় অপলক চাহনি , পরনের কাপড় ও মাথার চুলের অবিন্যস্ত অবস্থা দেখে সমুদ্রকন্যা পদ্মার মনে হয় এই কন্যারা প্রবল সমুদ্র ঝড়ের মুখে পড়েছিল । তাই হয়তো তাদের নৌকা ভেঙে গিয়েছিল কিংবা সমুদ্রপীড়ায় কাবু হওয়ার ফলে তাদের এই অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়েছে । অচৈতন্য পদ্মাবতীকে পরীক্ষা করার সময় পদ্মার মনে হয়েছে অপূর্ব সুন্দরী কন্যা যেন পটে আঁকা ছবি ।
৬)‘ সিন্ধুতীরে ’ কবিতাটির বিষয়বস্তু সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
উত্তরঃমধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের মুসলমান কবিদের অন্যতম সৈয়দ আলাওল রচিত ‘ পদ্মাবতী ‘ কাব্যের অংশ বিশেষ ‘ সিন্ধুতীৱে ‘ কবিতাটি শুরু হচ্ছে সিংহল – রাজকন্যা পদ্মাবতী ও তার চার সখীর সমুদ্রের জলে পতন ও সমুদ্রবক্ষে অবস্থিত এক নগরীতে এসে পড়া দিয়ে । নগরীর বর্ণনাতে তিনি এক রূপকথার সব পেয়েছির দেশ এঁকেছেন , যে – দেশে মনোরম সৌন্দর্যের পাশাপাশি দুঃখ – ক্লেশের লেশমাত্র নেই , সত্য ধর্ম ও সদাচার যে – নগরীর শিরোভূষণ , সেই নগরীতে বাস করেন সমুদ্রনৃপতি – কন্যা পদ্মা । পর্বতের পাশে অবস্থিত এক সুন্দর উদ্যানের রচয়িতা তিনি , যে – উদ্যানে নানাবর্ণ ও গন্ধের ফুল এবং ফলের সমারোহ । সেখানে আসার পথে পদ্মা সঙ্গীদের সঙ্গে এক অপরূপা কন্যাকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখতে পান । সেই কন্যার অবস্থা দেখে সমুদ্রকন্যা পদ্মা অনুমান করেন হয়তো স্বর্গের কোনো অপ্সরা তার সঙ্গীদের সঙ্গে ইন্দ্রের অভিশাপে স্বর্গভ্রষ্ট হয়েছেন অথবা কোনো সামুদ্রিক ঝড়ের প্রকোপে তাদের এই অবস্থা । মৃতপ্রায় পদ্মাবতী ও তার চার সখীকে রক্ষা করার জন্য সমুদ্রকন্যা পদ্মা নিজের সকল বিদ্যা প্রয়োগ করেন । বহু তন্ত্রমন্ত্র ও মহৌষধি প্রয়োগের পর অবশেষে তাদের জ্ঞান ফেরে । ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতার এই হল মূল উপজীব্য ।
⊕সিন্ধুতীরে কবিতার PDF DOWNLOAD -এর জন্য এখানে CLICK করুন।
আরো পড়ুনঃ কোনি উপনাস্যের প্রশ্ন উত্তরের পূর্ণাঙ্গ মাধ্যমিক পরীক্ষার সাজেশন।
আরো পড়ুনঃ হারিয়ে যাওয়া কালিকলম প্রবন্ধের পূর্ণাঙ্গ মাধ্যমিক পরীক্ষার সাজেশন।
Pingback: অসুখী একজন কবিতার বড় প্রশ্ন- উত্তর | Pariksha Prastuti
Pingback: অসুখী একজন কবিতার MCQ & SAQ | Pariksha Prastuti
পদ্মাবতী সিংহল রাজ গন্ধর্ব সেন এর কন্যা এবং চিতোরের রাজা রত্ন সেনের স্ত্রী।