মাধ্যমিক লাস্ট মিনিট সাজেশন বাংলা বহুরূপী MCQ / SAQ / LAQ

পরীক্ষা প্রস্তুতি : প্রিয় ছাত্র ছাত্রীরা তোমরা যারা ২০২২ সালে মাধ্যমিক দেবে , PRIKSHAPASTUTI .ORG এক্সপার্ট টিমের পক্ষ থেকে প্রথমেই তোমাদের অভিননন্দন  জানাই। এই করোনা পরিস্থিতিতে যাতে তোমরা বাড়িতে বসে সুন্দর ভাবে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারো তার জন্যই আমাদের এই প্রচেষ্টা। আশা করছি তোমরা আমাদের দেওয়া সাজেশন গুলি ভালো করে পড়লে অবশ্যই মাধ্যমিকে চুড়ান্ত সফলতা লাভ করতে পারবে। আজকে তোমাদের সামনে মাধ্যমিক  বাংলা গল্প ‘ বহুরূপী  ‘ থেকে মাধ্যমিক ২০২২ পরীক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্ব পূর্ন MCQ /SAQ এবং LAQ প্রশ্ন-উত্তর গুলি তুলে ধরা হল। মাধ্যমিক লাস্ট মিনিট সাজেশন বাংলা বহুরূপী MCQ / SAQ / LAQ

MADHYAMIK SUGGESTION BANGLA বহুরূপী :  [MCQ] : [প্রতিটি প্রশ্নের মান-1]

(১) সন্ন্যাসী  বাড়িতে এসেছিলেন —

উত্তর- জগদীশ বাবুর। 

(২)সন্ন্যাসীর বয়স ছিল –

উত্তর- হাজার বছরের  বেশি। 

(৩) হরিদার ঘরে আড্ডা দিত –

উত্তর- চারজন। 

(৪)হরিদার জীবনে সত্যিই একটা ………….. আছে। (শূন্যস্থান পূরণ করাে)

উত্তর-নাটকীয় বৈচিত্র্য 

(৫)বাসের  ড্রাইভারের নাম ছিল –

উত্তর -কাশীনাথ। 

(৬) হরিদা পেশায় ছিলেন একজন-
 
উত্তর -বহুরূপী। 
 

(৭)বাইজির ছদ্মবেশে হরিদা রোজগার করেছিলেন –

উত্তর -আট টাকা দশ আনা। 

(৮)বিরাগীরুপী হরিদার গায়ে ছিল –

উত্তর – উত্তরীয়। 

(৯) “সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস”—‘ভয়ানক দুর্লভ জিনিসটি হল—
 
উত্তর – সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলাে পাওয়া। 
 
(১০) বহুরূপী’ গল্পের লেখক হলেন-
 
উত্তর- সুবােধ ঘােষ
 
(১১) ঠিক দুপুরবেলাতে একটা আতঙ্কের হল্লা বেজে উঠেছিল
 
উত্তর- চকের বাসস্ট্যান্ডের কাছে
 
(১২) “বাসের যাত্রীরা কেউ হাসে, কেউ বা বেশ বিরক্ত হয় কেউ আবার বেশ বিস্মিত।”—বাসযাত্রীদের এমন প্রতিক্রিয়ার কারণ—
 
উত্তর- বহুরূপী হরিদার পাগলের সাজটা চমৎকার ছিল। 
 
(১৩) “… কিছুই শুনিনি”—কথাটা বলেছেন-
 
উত্তরঃ  হরিদা
 
(১৪) জগদীশবাবুর বাড়িতে সন্ন্যাসী ছিলেন।
 
উত্তর-  সাত দিন। 
 
(১৫). জগদীশবাবুর বাড়িতে আসা সন্ন্যাসী সারা বছর যা খেতেন সেটা হল—
 
উত্তর-  একটি হরিতকী। 
 
(১৭). সন্ন্যাসীকে খড়ম দিয়েছিলেন —
 
উত্তর-  জগদীশবাবু
 
( ১৮)হরিদা সপ্তাহে বহুরূপী সাজেন কত  দিন ?
 
উত্তর –একদিন। 

MADHYAMIK SUGGESTION BANGLA বহুরূপী : (SAQ )[ প্রতিটি প্রশ্নের মান-1]

 

(১). লেখক ও তাঁর বন্ধুরা হরিদার কাছে কোন্ ঘটনা শােনাতে এসেছিলেন ?

 
 
উত্তর : জগদীশবাবুর বাড়িতে খুব উঁচুদরের এক সন্ন্যাসী এসেছিলেন এবং তিনি সেখানে সাতদিন ধরে অবস্থান করেছিলেন। এই খবরটাই লেখক ও তার বন্ধুরা হরিদাকে শােনাতে এসেছিলেন।
 
 
 

(২)“মাঝে মাঝে সত্যিই উপােস করেন হরিদা।”—হরিদা মাঝে মাঝে উপােস। করেন কেন?

 

উত্তর : হরিদার জীবনের একমাত্র পেশা বহুরূপী সেজে রােজগার করা। যৎসামান্য রােজগারে এক সপ্তাহের ক্ষুন্নিবৃত্তি নিবারণ করা সম্ভব হয় না। তাই হরিদাকে মাঝে মাঝেই সত্যিই উপােস করে দিন অতিবাহিত করতে হয়।

 

(৩) “কী অদ্ভুত  কথা বলেন হরিদা!”—হরিদার কোন্ কথাকে অদ্ভুত মনে হয়েছিল?

 

উত্তর : হরিদা জানিয়েছিলেন যে, শত হােক একজন বিরাগী সন্ন্যাসী সেজে টাকা-ফাকা  দাবি করলে তার ঢং নষ্ট হয়ে যায়। তার এই কথাকে গল্প লেখকের অদ্ভুত মনে হয়েছিল।

 

(৪) নইলে আমি শান্তি পাব না”—কী পেলে বা শান্তি পাবেন?

 

 

উত্তর : বক্তা জগদীশবাবুর একান্ত ইচ্ছা যে বিরাগী তাকে কিছু উপদেশ দিয়ে প্রস্থান করলে তিনি শান্তি পাবেন।

 

(৫) “এই শহরের জীবনে মাঝে মাঝে বেশ চমৎকার ঘটনা সৃষ্টি করেন বহুরূপী হরিদা।”—“বহুরূপী’ গল্পে হরিদার বহুরূপী সাজার কয়েকটি উল্লেখ করাে।

 

উত্তর : কথাসাহিত্যিক সুবােধ ঘােষ রচিত ‘বহুরূপী’ গল্পে হরিদার বহুরূপী সাজার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলি হল—উন্মাদ পাগল, রুপসি বাইজি, বাউল, কাপালিক, পুলিশ, বুড়াে কাবুলিওয়ালা, ফিরিঙ্গি কেরামিন সাহেব, সন্ন্যাসী বিরাগী প্রভৃতি।

 

(৬)“জটাজুটধারী কোনাে সন্ন্যাসী নয়”।-উদ্দিষ্ট ব্যক্তিকে সন্ন্যাসী বলার কারণ কী?

 

উত্তর : আগন্তুককে সন্ন্যাসী না বলার কারণ হল, তার হাতে সন্ন্যাসীদের ব্যবহৃত কমলু ও চিমটে ছিল না। তার সঙ্গে বসার জন্যে মৃগচর্মের আসনও ছিল না। তিনি গৈরিক সাজে সজ্জিত ছিলেন না, তাছাড়া জটাজুটের পরিবর্তে তার মাথায় ছিল স্বাভাবিক শুভ্র চুল।

 

(৭) “জগদীশবাবুর দুই বিস্মিত চোখ অপলক হয়ে গেল”—কী দেখে জগদীশবাবুর এমন অবস্থা হয়েছিল?

 

 

উত্তর : জগদীশবাবু সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে যখন দেখেছিলেন আদুড় গায়ে সাদা উত্তরীয় পরে এক বিরাগী সামনে দাঁড়িয়ে তখন তিনি অপলক দৃষ্টিতে তার দিকে চেয়ে রইলেন।

 

(৮) “অদৃষ্ট কখনও হরিদার এই ভুল ক্ষমা করবে না।”—হরিদার কোন্ ভুল অদৃষ্ট কখনাে ক্ষমা করবে না?

 

উত্তর : শিল্প মর্যাদার স্বার্থে বহুরূপী হরিদা জগদীশবাবুর দিতে চাওয়া অর্থ প্রত্যাখান করে ভুল করেছিলেন বলে লেখক মনে করেছেন। সেই ভুলই অদৃষ্ট কখনাে ক্ষমা করবে না বলে লেখকের মনে হয়েছিল।

 

(৯) “পরম সুখ কাকে বলে জানেন?”—বক্তা স্বয়ং ‘পরম সুখ’ বলতে কী বােঝাতে চেয়েছেন?

 

উত্তর : কথাসাহিত্যিক সুবােধ ঘােষ রচিত ‘বহুরূপী’ গল্পে বা বিরাগী স্বয়ং সব সুখের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে যাওয়াকেই ‘পরম সুখ’ বলে বােঝাতে চেয়েছেন।

 

(১০) “বাঃ এ তাে বেশ মজার ব্যাপার!”—কোন্ ঘটনাকে মজার ব্যাপার বলা হয়েছে?

 

উত্তর : একদিকে জগদীশবাবুর বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণকারী আগন্তুক সন্ন্যাসী হিমালয়বাসী সর্বত্যাগী। অন্যদিকে কাঠের খড়মে সােনার বােল লাগানাে দেখে মুগ্ধ হয়ে তিনি পা বাড়িয়ে দিলেন জগদীশবাবুর দিকে—এমন পরস্পর বিরােধী ঘটনাকে উদ্ধৃতাংশের বক্তা হরিদা একে মজার ব্যাপার বলে উল্লেখ করেছেন।
 

 

 

MADHYAMIK SUGGESTION বহুরূপী : SAQ  (৬০ টি শব্দে ): [প্রতিটি প্রশ্নের মান-3]

(১) ঠিক দুপুরবেলাতে একটা আতঙ্কের হল্লা বেজে উঠেছিল।”—আতঙ্কের হল্লাটি বর্ণনা করাে।

উত্তর – এক দুপুরবেলা বাস স্ট্যান্ডের কাছে এক পাগলকে দেখা গিয়েছিল। কটকটে লাল চোখের সেই পাগলের মুখ থেকে লালা ঝরছিল। তার কোমরে ছেড়া কম্বল আর গলায় টিনের কৌটোর মালা জড়ানাে।  পাগলটা  ইট হাতে নিয়ে বাসে বসা যাত্রীদের দিকে তেড়ে যাচ্ছিল। তাকে দেখে যাত্রীরা চেঁচিয়ে উঠছিল। কেউ কেউ দু-এক পয়সা তার সামনে ফেলে দিচ্ছিল। কেউ চিনতে না পারলেও বাস ড্রাইভার বুঝতে পেরেছিল হরিদাই এই বহুরূপী যে পাগল সেজে সবাইকে ভয় দেখাচ্ছে।

 

(২)”কিন্তু দোকানদার হেসে ফেলে—হরির কাণ্ড”—হরি কী কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন?

উত্তর – বহুরুপী হরিদা বিভিন্ন বেশ ধারণ করত। একদিন সারাবেলার ব্যস্ততা যখন কমে এসেছে, সন্ধ্যার আলাে সবেমাত্র জ্বলেছে , হঠাৎই সবাই মিষ্টি রুমঝুম শব্দ শুনতে পায়। সবাই দেখে এক রূপসি বাইজি নাচতে নাচতে চলে যাচ্ছে । সবাই তার দিকে তাকিয়ে থাকে আর সে ফুলসাজি এগিয়ে দিলে দোকানিরা তাতে পয়সা ফেলে দেয়। হরিদাই বাইজি সেজে এই কাণ্ড ঘটিয়েছিল। আর বাইজি যে আসলে বহুরূপী সেটা জানতে পারলে অনেক মুগ্ধ দৃষ্টিরই মোহভঙ্গ হয়।

 

(৩) দয়ালবাবুর লিচুবাগানে কী ঘটনা ঘটেছিল ?

উত্তর – দয়ালবাবুর লিচুবাগানে স্কু লের চারটি ছেলে এসেছিল লিচু নেওয়ার আশায়। সেখানে হরিদা পুলিশ সেজে দাড়িয়েছিল। আর সেই চারজন ছেলেকে সে ধরেছিল। সব ছেলেরা তাকে সত্যি পুলিশ বলেই মনে করেছিল এবং ভয়ে কেঁদে ফেলেছিল । তারপর সেই ছেলেগুলির স্কুলের মাস্টার সেখানে এসে নকল পুলিশের কাছে ক্ষমা চেয়ে তাকে আট আনা ঘুষ দিয়েছিলেন । সেই আট আনা ঘুষ পাওয়ার পর নকল পুলিশ হরীদা সেই চারজন ছেলেকে ছেড়েছিল ।

 

(৪)জগদীশবাবুর বাড়িতে যে সন্ন্যাসী এসেছিলেন তার বর্ণনা দাও।

উত্তর – জগদীশবাবুর বাড়িতে সাত দিন ধরে এক সন্ন্যাসী ছিলেন। খুবই  উচুদরের এই সন্ন্যাসী থাকতেন হিমালয়ের গুহাতে । তিনি সারা বছরে শুধুমাত্র একটি হরীতকী খেয়ে থাকতেন। এছাড়া তিনি আর কিছুই খেতেন না। অনেকেই মনে করত, সন্ন্যাসীর বয়স ছিল হাজার বছরেরও বেশি। তার পায়ের ধুলাে ছিল অত্যন্ত দুর্লভ জিনিস; সবাই সন্ন্যাসীর এই পায়ের ধুলাে পেত না। একমাত্র জগদীশবাবুই সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলাে পেয়েছিলেন।

(৫) “সেতাে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস।”-দুর্লভ জিনিসটা কী? কে, কীভাবে তা লাভ করেছিল ?

উত্তর – দুর্লভ জিনিসটি হল সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো।

জগদীশবাবুর বাড়িতে এক সন্ন্যাসী এসে সাত দিন ছিলেন। সেই। সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলাে ছিল অত্যন্ত দুর্লভ। জগদীশবাবু যে-কোনাে মূল্যে সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলাে নিতে চেয়েছিলেন। তাই জগদীশবাবু একজোড়া কাঠের খড়মে সােনার বােল লাগিয়ে সন্ন্যাসীর পায়ের কাছে ধরেছিলেন। তখন বাধ্য হয়ে সন্ন্যাসী তার পা এগিয়ে দিয়েছিলেন আর সেই ফাঁকে জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলাে নিয়েছিলেন।

 

(৬) “হরিদার জীবনে সত্যিই একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য আছে।” হরিদার জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্যটি কী ছিল?

উত্তর – গরিব হরিদা নিজের ছােট্ট ঘরে দিন কাটাত । কোনােদিন খাবার জুটত, কোনােদিন জুটত না। কিন্তু এই রােজকার একঘেঁয়ে জীবনে হরিদার একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য ছিল। হরিদা মাঝে মাঝে বহুরূপী সেজে রােজগার করত। কোনাে কোনাে দিন সকালে অথবা সন্ধ্যায় বিচিত্র সব ছদ্মবেশে সে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ত। যারা চিনতে পারত তাদের মধ্যে কেউ কিছুই দিত না অথবা কেউ বিরক্ত হয়ে দু একটি পয়সা বাড়িয়ে দিত । তবু প্রতিদিন বহুরূপী বেশে রাস্তায় বেরনোটাই  ছিল হরিদার জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্য ।

(৭) হরিদা কোনােদিন চাকরি করেননি কেন?

 

উত্তর : চাকরি না করার কারণ : এক ঘেয়ে সময় বেঁধে কাজ হরিদার কোনােদিন ভালাে লাগত না। ইচ্ছে করলেই হরিদা যে কোনাে আপিসের কাজ বা কোনাে দোকানের কাজ পেয়ে যেত। কিন্তু ঘড়ির কাঁটা বেঁধে নিয়ম করে রােজ এক চাকরি করতে যাওয়া হরিদার পক্ষে সম্ভব ছিল না। হরিদার অভাব ছিল । এই অভাবটা সহ্য করতে হরিদার আপত্তি না থাকলেও এক ঘেয়ে কাজ করতে ভীষণ আপত্তি ছিল। তাই হরিদা কোনােদিন চাকরি করেননি।

 

(৮) ঠিক দুপুরবেলাতে একটা আতঙ্কের হল্লা বেজে উঠল আতঙ্কের হল্লাটির পরিচয় দাও?

 

উত্তর : আতঙ্কের হল্লা : সুবােধ ঘােষের বহুরূপী গল্পে হরিদা মাঝে মাঝে বহুরূপী সাজতেন। এক দুপুরবেলা বাসস্ট্যান্ডের কাছের এক পাগলকে দেখা গিয়েছিল কটকটে লাল চোখে সেই পাগলের মুখ থেকে লালা ঝরছিল। তার কোমরে ছেড়া কম্বল। আর গলায় টিনের কৌটোর মালা জরানাে। পাগলটি থান ইট নিয়ে বাসে বাস  যাত্রীদের দিকে তেড়ে যাচ্ছিল। তাকে দেখে যাত্রীরা চেচিয়ে উঠেছিল। কেউ কেউ দু-একটা পয়সা তার সামনে ফেলে দিচ্ছিল। কেউ চিনতে না পারলেও কাশীনাথ চিনতে পেরেছিল। পাগলটি আসলে হরিদা। হরিদা পাগল সেজে সবাইকে ভয় দেখাচ্ছিল। আসলে বহুরূপী ছদ্মবেশ সেজে।
 

 

(৯) জগদীশবাবুর যে সন্ন্যাসী এসেছিলেন—তার বর্ণনা দাও।

 

উত্তর : সন্ন্যাসীর বর্ণনা : জগদীশবাবুর বাড়িতে সাতদিন ধরে এক সন্ন্যাসী ছিলেন। খুব উঁচু দলের এই সন্ন্যাসী থাকতেন হিমালয়ের গুহাতে। তিনি সারা বছরে শুধুমাত্র একটি হরিতকি খান। এছাড়া তিনি আর কিছু খেতেন না। অনেকে মনে করত সন্ন্যাসীর বয়স ছিল হাজার বছরের বেশি তার পায়ের ধুলাে ছিল অত্যন্ত দুর্লভ জিনিস। একমাত্র জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলাে পেয়েছিলেন।

 

(১০) আপনি কী ভগবানের চেয়েও বড়াে-কে কেন কাকে এ উক্তি করেছিলেন?

 

উত্তর : বক্তা/শ্রোতা : সুবােধ ঘােষের বহুরূপী গল্পে ছদ্মবেশী  হরিদা জগদীশবাবুকে এ উক্তি করেন।
 
উক্তির কারণ : হঠাৎ আগন্তুককে দেখে জগদীশবাবু খুব অবাক হন। আর চোখে ধরা পরে অদ্ভুত এক শান্তি সৌম্য  দীপ্তিময় চেহারা। তিনি সন্ন্যাসীর কাছে এগিয়ে আসেন। তখনও  তার বিস্ময় কাটেনি। তখন বিরক্ত সন্ন্যাসী জগদীশবাবুকে একথা বলেছিলেন।

 

(১১) কিন্তু মাস্টারমশাই একটুকুও রাগ করেননি—কোন ঘটনার জন্য মাস্টারমশাই রাগ করেননি?

 

উত্তর : মাস্টারমশাই-এর রাগ না করার কারণ : সুবােধ ঘােষের রচিত বহুরুপী গল্প থেকে আলােচ্য অংশ নেওয়া হয়েছে। একবার তিনি পুলিশ সেজে দয়ালবাবুর লিচু বাগানের ভিতরে দাঁড়িয়েছিল। ইস্কুলের চারটি ছেলেকে তিনি ধরে ছিলেন। স্কুলের মাস্টারমশাই এসে সেই নকল পুলিশের কাছে ক্ষমা চেয়েছিল। তখন ছদ্মবেশি পুলিশ হরিদা আটআনা ঘুষ নিয়ে ছেলেগুলিকে ছেড়েছিলেন। তারপরে জানতে পারলেও স্কুলের মাস্টারমশাই রাগ করেননি
 

 MADHYAMIK SUGGESTION BANGLA  বহুরূপী : (LAQ) : [প্রতিটি প্রশ্নের মান-5]

(১)’গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা’– গল্পটি কী  ছিল ? হরিদার গম্ভীর হয়ে যওয়ার কারণ কী ছিল?

উত্তর – অবস্থাপন্ন জগদীশবাবুর বাড়িতে এসে সাতদিন ধরে ছিলেন এক সন্ন্যাসী, যিনি হিমালয়ের গুহায় থাকতেন। তার বয়স হাজার বছরের বেশি এবং সারা বছরে একটি হরিতকী ছাড়া তিনি আর কিছুই খেতেন না। জগদীশবাবু ছাড়া আর কাউকে তিনি পদধুলি দেননি। জগদীশবাবুও তা পেয়েছিলেন কৌশল করে। একজোড়া কাঠের খড়মে সােনার বােল লাগিয়ে জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর পায়ের কাছে ধরেন আর সন্ন্যাসী বাধ্য হয়ে তাতে পা গলতে গেলে সেই সুযােগে জগদীশবাবু তার পায়ের ধুলাে নিয়ে নেন | জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর ঝোলার ভিতরে একশাে টাকার একটি নােট জোর করে ফেলে দেন । সন্ন্যাসী হেসে সেখান থেকে চলে যান | এই গল্পই হরিদাকে শােনানাে হয়েছিল।

হরিদা সন্ন্যাসী এবং জগদীশবাবুর এই গল্প শুনে গম্ভীর হয়ে যান। কথকরা এই গান্তীর্যের কারণ বুঝতে পারেন না। এই সময়েই হরিদা তাদের জগদীশবাবুর বাড়িতে খেলা দেখাতে যাওয়ার কথা বলেন। জগদীশবাবুর কাছ থেকে সারা বছরের প্রয়ােজনীয় অর্থ হাতিয়ে। নেওয়াই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। জগদীশবাবুর ধর্ম বিষয়ে দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়েই হরিদা নিজের উদ্দেশ্য সফল করতে চেয়েছিলেন।

(২) “আজ তােমাদের একটা জবর খেলা দেখাব।”—কে, কাদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেছে? সে কোন্ জবর খেলা দেখিয়েছিল ?

উত্তর – ‘বহুরূপী গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হরিদা কথক ও তার বন্ধুদের উদ্দেশ্য করে উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন।

বহুরূপী সেজে অর্থোপার্জন ছিল হরিদার নেশা এবং পেশা | ধর্মভীরু জগদীশবাবুকে বােকা বানিয়ে নিজের জন্য মােটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতে চেয়েছিলেন হরিদা। তাই সাদা থান পড়ে, সাদা উত্তরীয় গায়ে দিয়ে হাজির হন  তার বাড়িতে। জগদীশবাবু হরিদার নিখুঁত ছদ্মবেশের কারণে তাকে চিনতে না পেরে বিনয় ও ভক্তিতে গদগদ হয়ে যান।  জগদীশবাবুকে নীচে নেমে আসতে বাধ্য করেন । কণ্ঠস্বরে গাম্ভীর্য, মুখমণ্ডলে প্রশান্তির ছবি ফুটিয়ে তুলে হরিদা নিজের সাজকে পূর্ণাঙ্গতা দান করেন । বিরাগীবেশী হরিদা জানায় যে তার কোনাে রাগ নেই, সে বিষয়ীর ঘরে থাকতে চায় না এবং সে সদ্য তীর্থ ভ্রমনে যাবে ।

তীর্থযাত্রার জন্য জগদীশবাবু হরিদাকে একশাে এক টাকার থলি দিতে চাইলে সে তা স্পর্শ না করে বেরিয়ে আসে। কিন্তু হরিদা অর্থগ্রহণ না করায় লেখক ও তার বন্ধুদের সন্দেহ হয়। যদিও হরিদার বাড়ি এসে তারা বুঝতে পারেন সেই বিরাগীর বেশ ধারণ করেছিল | হরিদার এইরূপ ছদ্মবেশ ধারণ করে জগদীশবাবুকে ধোঁকা দেওয়ার কৌশলটিকে আলােচ্য প্রসঙ্গে ‘জবর খেলা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

(৩) আমি যেমন অনায়াসে ধুলাে মাড়িয়ে চলে যেতে পারি, তেমনই অনায়াসে সােনাও মাড়িয়ে চলে যেতে পারি।- ছদ্মবেশ ধারণ করেও হরিদা কীভাবে এই কথার সত্যতা প্রমাণ করেছেন লেখাে।

উত্তর – বড় চমকপ্রদ এবং নাটকীয় হরিদার জীবন। বাঁধাধরা আর পাঁচটা পেশায় সে নিযুক্ত হতে চায়নি। কারণ একঘেয়ে কাজ করতে তার ভয়ানক আপত্তি। বহুরূপী সেঝে সে যা উপার্জন করত তাতে ঠিকমতাে দিনাতিপাত হত না। এই সময় সে শোনে জগদীশবাবুর বাড়িতে এক সন্ন্যাসীর আগমনের কথা | ধনী জগদীশবাবু সন্ন্যাসীকে অর্থ-সহ নানা কিছু দান করেছিলেন। সন্ন্যাসীর গল্প হরিদাকে উজ্জীবিত করে। সে সিদ্ধান্ত নেয় বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়ি থেকে বেশ কিছু আদায় করবে, যা দিয়ে তার সারাবছর চলে যাবে। হরিদা বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়ি উপস্থিত হয়। জগদীশবাবু তাকে দেখে অভিভূত এবং ভক্তিতে গদগদ হয়ে প্রথমে তার বাড়িতে থাকার কথা বলেন। তারপর টাকার থলি এনে হরিদার পায়ের কাছে রাখেন। কিন্তু হরিদা প্রকৃত বিরাগীর মতাে সবকিছু প্রত্যাখ্যান করে। লােভ রূপান্তরিত হয়ে যায় ত্যাগে। বিরাগীর আদর্শভূমিতে দাড়িয়ে হরিদা ঘােষণা করে যে, তার কাছে ধুলাের মতাে সােনাও তুচ্ছ। চরিত্রের সঙ্গে একাত্মতা পেশাদারিত্বকে পরাজিত করে ত্যাগের জীবনাদর্শকে তুলে ধরেছে।

(৪)বহুরূপী গল্প অবলম্বনে হরিদার চরিত্রের বর্ণনা দাও?

 

উত্তর : ভূমিকা : সাহিত্যিক সুবােধ ঘােষের নামাঙ্কিত ছােটো গল্পের প্রধান তথা কেন্দ্রিয় চরিত্র বহুরূপী হরি। তাকে ও তার শিল্পী সত্তার সৃষ্টির বৈশিষ্ট্যগুলিকে অবলম্বন করে সমগ্র কাহিনি আবর্তিত হয়েছে। চরিত্রটি একটি একমুখী কাহিনি। বিশ্বের উত্থানপতন যা ঘটলেও চরিত্রটির মধ্যে বৈচিত্র্য অবশ্যই আছে।
 
সাধারণ পরিচয় : খুবই দরিদ্র ছিলেন হরিদা। শহরের সবথেকে সরু একটা ছােটো ঘরে তিনি থাকতেন। দারিদ্র দূর করার জন্য মাঝে মাঝে তাকে বহুরূপী সাজাতে হত। 
 
স্বাধীনতা বােধ : হরিদা অন্যের অধীনে কাজ করতে চান না। কারণ তার মধ্যে অদ্ভুত এক স্বাতন্ত্র্যবােধ ছিল। আর এই স্বাধীনচেতা স্বভাবের জন্য ঘড়ি মিলিয়ে কাজ তিনি করেননি।
 
 মিসুকে স্বভাবের মানুষ : তিনি লােকজনের সঙ্গে মিশতে পছন্দ করতেন। তাই তার ঘরে পাড়ার ছেলেরা আড্ডায় বসত।
 
আধ্যাত্মিক জগতের মানুষ : হরিদার মনের মধ্যে এক আধ্যাত্মিক জগৎ ছিল। তাই সন্ন্যাসীর বার্তা জানতে পেরে তিনি বলেন- “থাকলে একবার গিয়ে পায়ের ধুলাে নিতে পারতাম”।
 
কৌতুক প্রিয়তা : হরিদার মধ্যে এক সাধারণ কৌতুকময়তা ছিল। তাই বহুরূপীর ছদ্মবেশে তিনি মানুষকে এমনভাবে তৃপ্তি দিতেন যা সাধারণভাবে স্বাধিকার পরিচয় বহন করত।
 
নিপুণ শিল্পী : নিজের বহুরূপী পেশায় তিনি নিপুণ শিল্পী। তাই অনেকে চিনতে পারত না। তার বহুরুপী পেশাকে অনেকে আসল ভেবেছে।
 
মূল্যায়ন : বহুরূপীর জীবনের মূল চাহিদা হল মনরঞ্জনের চাহিদা। প্রতারণার দ্বারা অর্থ উপার্জন নয়। মানুষকে আনন্দ দান করা আর একমাত্র প্রাসঙ্গিক বিষয়। তাই যে হাসি মূলত বলতে পারে- মানুষ তাে নয় এই বহুরূপী জীবন এর বেশি কী কী আশা করতে পারে।

 

(৫)‘এবার মারি তো হাতি লুঠি তো  ভাণ্ডার’—জগদীশবাবুর বাড়িতে কী ঘটনা ঘটেছিল তা লেখাে।

 

উত্তর : বহুরূপী খেলা : হরিদা জগদীশবাবুর   বাড়িতে  বহুরূপী ছদ্মবেশে   অভিনব খেলা     দেখিয়েছিলেন। হরিদা ছিলেন অত্যন্ত দরিদ্র। মাঝে মাঝে বহুরুপীর বেশ ধারণ করে সামান্য কিছু অর্থ উপার্জন করতেন। হিমালয়বাসী এক সন্ন্যাসী কীভাবে পাড়ার ধর্মবিশ্বাসী জগদীশবাবুকে ঠকিয়ে নিজের প্রাপ্তির ভাণ্ডার পূর্ণ করেছিলেন তা পাড়ার ছেলেদের কাছ থেকে শুনে হরিদার মাথাতেও জগদীশবাবুকে ঠকিয়ে অর্থ উপার্জনের দুষ্ট বুদ্ধি খেলে যায়। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলে ওঠেন—এবার। মারি তো  হাতি লুঠি তো  ভাণ্ডার। হরিদা ভেবেছিল একবারেই যা আদায় করে নেবে , তাতে তার সারা বছর চলে যাবে। পাড়ার ছেলেদের তিনি বলেন তারা যদি এই ঘটনার সাক্ষী থাকতে চায় তবে তারা যেন সকলে জগদীশবাবুর বাড়িতে চলে আসে। ছেলেরা চাঁদা নেওয়ার জন্য জগদীশবাবুর বাড়িতে হাজির হয়। জগদীশবাবুর বাড়িতে যে বিচিত্র বিন্যাসে হরিদা হাজির হন তাতে চিনতে খুব অসুবিধা হয় ছেলেদের। তার খােলা গা, তার ওপর একটি ধবধবে সাদা উত্তরীও, পরনে সাদা থান। জগদীশবাবুর ভক্তি উজার হয়ে ওঠে। তিনি বিরাগীটিকে তার ওখানে থাকতে বলেন। তিনি তীর্থ ভ্রমণের জন্য একশাে টাকা দিতে চান, সবকিছু ফিরিয়ে দেন হরিদা। জগদীশবাবুর কথাতে তিনি  তাকে উপদেশ শােনান—‘পরমসুখ কাকে বলে বুঝিয়ে বলেন  হরিদা। জগদীশবাবুর কথাতে তিনি উপদেশ শােনান-‘পরমসুখ কাকে বলে জানেন?’ সব সুখের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে যাওয়া। এরপর হরিদা সেই জায়গা পরিত্যাগ করেন। তিনি জগদীশবাবুর কাছ থেকে কোনাে অর্থ গ্রহণ করেননি। গল্পকার এই ঘটনার মাধ্যমে হরিদার নির্লোভ  স্বভাবকে তুলে ধরেছেন।

 

(৬) “পরম সুখ কাকে বলে জানেন সব সুখের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে যাওয়া”। এ বক্তব্য হরিদার জীবনে কীভাবে প্রভাব ফেলে বলাে।

 

উত্তর : হরিদার জীবনে প্রভাব : গল্পকার সুবােধ ঘােষের বহুরূপী গল্পটি এক অদ্ভত  মানুষের জীবনকে কেন্দ্রকরে রচিত। তার বহিঃজীবন ছিল দরিদ্র অভাবে বিষাদে দগ্ধ। কিন্তু অন্তঃজীবন ছিল মহা ঐশ্বর্য। এই ঐশ্বর্য আসলে সম্পদ নয়। এই ঐশ্বর্য ছিল তার চিন্তাশীলতা এবং বিবেক বােধ। সে  পেশায় বহুরূপী।  তাই মানুষের মুখাপেক্ষী তাকে থাকতে হয়।  কিন্তু তাই বলে যে নিজের পেশার ওপর কোনাে অন্যায় করে না। দশটা – পাঁচটা সাধারণ কাজে সে আনন্দ খুঁজে পায় না। বহুরূপীর মধ্যে যে একজন দার্শনিক  চিন্তা থাকে , তা যেন হরিদা নতুনভাবে আবিষ্কার করে। বিরাগী সন্ন্যাসীর ছদ্মবেশে জগদীশবাবুর প্রণামীর টাকা নিতে সে অস্বীকার করে। জগদীশবাবুকে সে শেখায় পরমসুখ মানে সর্বসুখ নয় , সুখ – দুঃখের সহ বন্ধন থেকে মুক্তি হল পরমসুখ। আসলে ব্যক্তিগত জীবনে হরিদা এই পরমসুখ অর্জন করেছিল। তা না হলে সামান্য রােজগারে অর্ধেক দিন উপােশ থাকা হরিদা কীভাবে একশাে টাকার থলি পায়ে ঠেলে দেয়। প্রকৃত সত্যিটি হল  ক্ষুদ্র গলির মধ্যে বাস করলেও বহুরূপীর জীবনে সার্থক মানুষের প্রতিচ্ছবি দেখা যায়।

 

* মাধ্যমিক ২০২২ পরীক্ষার রুটিনের জন্য এখানে ক্লিক করুন 

 

মাধ্যমিক ২০২২ বাংলা রচনার  লাস্ট মিনিট সাজেশন পেতে  ক্লিক করুন 

1 thought on “মাধ্যমিক লাস্ট মিনিট সাজেশন বাংলা বহুরূপী MCQ / SAQ / LAQ”

  1. Pingback: MADHYAMIK HISTORY LAST MINUTE SUGGESTION 3RD CHAPTER 2 MARKS SAQ PART 3 | Pariksha Prastuti

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *