পরীক্ষা প্রস্তুতি : মাধ্যমিক বাংলা ”বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান” প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর। প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা তোমরা যারা ২০২৩ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে parikshaprastuti .org এক্সপার্ট টিমের পক্ষ পক্ষ থেকে তোমাদের অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। আজকে তোমাদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি মাধ্যমিক বাংলা প্রবন্ধ ”বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান” থেকে MCQ MOCK TEST , SAQ , LAQ সাজেশন, যা ২০২৩ সালের পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি তোমরা ভালো করে প্রস্তুতি নিবে, তাহলে ফাইনাল পরীক্ষায় অবশ্যই কমন পাবে। আমাদের এই পেজে আরো অনেক সাজেশন দেওয়া হবে। ভালো লাগলে আমাদের এই WWW.PARIKSHAPRASTUTI .ORG ওয়েব পেজটিকে বন্ধুদের মাঝে অবশ্যই শেয়ার করবে। মাধ্যমিক বাংলা ”বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান” প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর। বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর। বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর
মাধ্যমিক বাংলা ”বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান”প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর
”বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান” প্রবন্ধ পরিচিতি
প্রবন্ধের নাম: বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান
প্রবন্ধের লেখক :রাজশেখর বসু
মূল কাব্য গ্রন্থের নাম : বিচিন্তা
”বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান” প্রবন্ধের MCQ- ১ নম্বরের
সঠিক উত্তর নির্বাচনধর্মী প্রশ্ন -MCQ (প্রশ্নমান – ১)বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান (রাজশেখর বসু ) কবিতা প্রশ্ন উত্তর – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৩ – Madhyamik Bengali Suggestion 2023
[এখানে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরের অপসন দেওয়া আছে ,আর মধ্যে প্রথমে নিজে নিজে একটি উত্তর মনে মনে ঠিক করে নাও এবং তার পরে Show Ans. এর উপর ক্লিক করে correct answer মিলিয়ে নাও ]
1)বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধটি কে লিখেছেন ?
2) পিতলের চেয়ে অ্যালুমিনিয়াম-
3)জলের মতো আর একটি উদ্বায়ী পদার্থ হল –
4)একটি নির্দিষ্ট সীমাবিশিষ্ট সরলরেখার ওপর কী অঙ্কন করতে হবে?
5)যাদের জন্য বিজ্ঞান বিষয়ক বাংলা গ্রন্থ বা প্রবন্ধ লেখা হয়, তাদের মোটামুটি ক-টি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়?
6)লাউ, কুমড়ো জাতীয় গাছে ফুল হয়-
7) আজন্ম ইজার পরা লোকের পক্ষে হঠাৎ অভ্যাস করা শক্ত
8) ‘প্যারাডাইক্লোরোবেনজিন’ একটি-
9)কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকলন খুব বড়ো নয়?
10)কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় পরিভাষা সমিতি নিযুক্ত করে-
11)কোন্ পরিভাষা লিখলে Sensitized Paper’-এর অনুবাদঠিকহবে?
12) “বাংলা প্রতিশব্দেরও ঠিক তাই হওয়া চাই।”—“ঠিক তাই’বলতে বোঝায়?
13)সাধারণে পপুলার বিজ্ঞান বুঝতে পারে-
14)বৈজ্ঞানিক সন্দর্ভ বোঝার জন্য অবশ্য প্রয়োজন-
15)‘International’ শব্দটি সমিতি নিযুক্ত করে-
16)“যেসব জন্তুর শিরদাঁড়া নেই,”—কথাটি যার বদলে লেখা যেতে পারে তা হল?
17)পরিভাষার একটি অন্যতম উদ্দেশ্য?
18)আমাদের আলংকারিকগণ শব্দের কত ধরনের কথা বলেছেন?
19)“হিমালয় যেন পৃথিবীর মানদণ্ড’–এই উক্তিটি কার?
20)অরণ্যে রোদন’কথাটির অর্থ-
21)কোন্ প্রবাদটি প্রমাণ হিসেবে আমাদের সাময়িক প্রশ্নাদিতে পাওয়া যায় ?
22)যাদের জন্য বিজ্ঞান – বিষয়ক বাংলা গ্রন্থ লেখা হয় তাদের বিভক্ত করা যায় –
23)ছেলেবেলায় লেখককে যে লেখকের বাংলা জ্যামিতি পড়তে হয়েছিল , তার নাম –
24)বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার একটি প্রধান বাধা হল –
25)অনেক বছর আগে যে – সকল বিদ্যোৎসাহী নানা বিষয়ের পরিভাষা রচনা করেছিলেন , তাঁরা যে – সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন , তা হল –
26)কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় পরিভাষা সমিতি নিযুক্ত করেছিল –
27)যেসকল মহাদেশে পপুলার সায়েন্স লেখা সুসাধ্য , সেগুলি হল –
28)পরিভাষার উদ্দেশ্য হল –
29)কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিভাষা সংকলন –
30)সরকার ক্রমে ক্রমে রাজকার্যে দেশি পরিভাষা চালাচ্ছেন , তাতে অনেকে মুশকিলে পড়েছেন , কারণ—
মাধ্যমিক বাংলা ‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান’ প্রবন্ধের SAQ-১ নম্বরের
‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান’ প্রবন্ধের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর – ‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান’ প্রবন্ধের SAQ অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর –Bangla Vashay bigan – SAQ -1 mark Question Answers
১)পরিভাষার উদ্দেশ্য কি ?
উত্তরঃ পরিভাষার উদ্দেশ্য হল , ভাষাকে সংক্ষিপ্ত করা এবং তার অর্থ সুনির্দিষ্ট করা । অনর্থক বর্ণনা পরিহার করে বিষয়কে সংক্ষিপ্তাকারে প্রকাশ করাই হল পরিভাষার কাজ ।
২)এই ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয় । কোন ধারণার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ অনেকের মতে বিজ্ঞান আলোচনায় পারিভাষিক শব্দ বাদ দিয়ে সাধারণ শব্দ ব্যবহার করলে রচনা সহজ ও বোধগম্য হয় । কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ঠিক নয় ।
৩)পারিভাষিক শব্দের অর্থ পাঠককে বোঝানোর জন্য কোন্ পদ্ধতি অবলম্বন করা উচিত ?
উত্তরঃ সাধারণ মানুষের জন্য লেখা বৈজ্ঞানিক রচনায় অল্পপরিচিত বা নতুন পরিভাষা প্রথমবার প্রয়োগের সময় তার ব্যাখ্যা দেওয়া প্রয়োজন । পরে শুধু শব্দটি দিলেই চলে ।
৪)’আমাদের আলংকারিকগণ শব্দের ত্রিবিধ কথা বলেছেন ‘ — কোন্ ‘ ত্রিবিধ কথা ” -র প্রসঙ্গ লেখক স্মরণ করেছেন ?
অথবা , ‘ আমাদের আলংকারিকগণ শব্দের ত্রিবিধ কথা বলেছেন— শব্দের ‘ ত্রিবিধ কথা কী ?
উত্তরঃ আমাদের আলংকারিকগণ শব্দের যে – ত্রিবিধ প্রসঙ্গের কথা উল্লেখ করেছেন , সেগুলি হল অভিধা , লক্ষণা ও ব্যঞ্ছনা ।
৫)অভিধা কাকে বলে ?
উত্তরঃ অভিধা হল শব্দের আভিধানিক অর্থ । যেমন , ‘ অরণ্য ‘ বলতে বোঝায় বন , জঙ্গল ইত্যাদি । এর চেয়ে বিশদ কোনো অর্থ বোঝায় না ।
৬)লক্ষণা বলতে কী বোঝায় ?
উত্তরঃ লক্ষণা হল শব্দের বৃত্তিবিশেষ । শব্দের মুখ্য অর্থের চেয়ে তার অন্য অর্থই যখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে , তখন তাকে বলে লক্ষণা । যেমন , ‘ অরণ্যের দিনরাত্রি ‘ – র অর্থ অরণ্যবাসীদের রোজনামচা ।
৭)‘ যাদের জন্য বিজ্ঞান বিষয়ক বাংলা গ্রন্থ বা প্রবন্ধ লেখা হয় তাদের মোটমটি দুই শ্রেণিতে ভাগ করা যেতে পারে । – শ্রেণি দুটি কী কী ?
উত্তরঃ বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান ‘ প্রবন্ধের লেখক রাজশেখর বসুর মতে , বিজ্ঞান বিষয়ক বাংলা গ্রন্থের পাঠকদের দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় ( ১ ) যারা ইংরেজি জানে বা অতি অল্প জানে এবং ( ২ ) যারা ইংরেজি জানে এবং ইংরেজি ভাষায় অক্ষাধিক বিজ্ঞান পড়েছে ।
৮)বিজ্ঞান বিষয়ক বাংলা গ্রন্থের পাঠকদের মধ্যে যারা লেখকের মতে প্রথম শ্রেণিভুক্ত , তাদের বিবরণ দাও ।
উত্তরঃ বিজ্ঞান বিষয়ক বাংলা গ্রন্থের পাঠকদের মধ্যে প্রথম শ্রেণিভুক্তরা হয় ইংরেজি জানেন না অথবা অতিঅল্প জানেন । সাধারণত কমবয়সি ছেলেমেয়ে এবং অল্পশিক্ষিত বয়স্ক লোকেরাই এই শ্রেণিতে পড়েন ।
৯)পাঠক ইংরেজি ভাষার প্রভাবমুক্ত হলে কী সুবিধা হয় ?
উত্তরঃ পাঠক ইংরেজি ভাষার প্রভাবমুক্ত হলে বাংলা পরিভাষা আয়ত্ত করে বাংলায় বিজ্ঞান শেখা সহজতর হয়ে যায় । কারণ তার বাংলা ভাষার বিরোধী সংস্কার থাকে না ।
১০)‘ তার মানেও স্পষ্ট হবে না । — কীসের মানে স্পষ্ট না – হওয়ার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ ইংরেজি জানা বা ইংরেজিতে পড়াশোনা করা পাঠকদের পক্ষে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান – সংক্রান্ত প্রবন্ধ পাঠ খুব সহজ নয় । কারণ , বিষয়টি তাঁদের কাছে অর্থগত দিক থেকে স্পষ্ট হবে না ।
১১)‘ আমাদের সরকার ক্রমে ক্রমে রাজকার্যে দেশি পরিভাষা চালাচ্ছেন , ‘ — তাতে অনেকে মুশকিলে পড়েছেন কেন ?
উত্তরঃ আমাদের সরকার রাজকার্যে যেভাবে দেশি পরিভাষা ক্রমশ ব্যবহার করাচ্ছেন তাতে অনেকে মুশকিলে পড়ছে , কেন – না তাদের নতুন করে সেগুলি শিখতে হচ্ছে ।
১২)’তাঁদের নূতন করে শিখতে হচ্ছে / — কী শেখার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ সরকারি কাজকর্মে বাংলা পারিভাষিক শব্দ ব্যবহার শুরু হওয়ায় অনেক ইংরেজি জানা ব্যক্তি মুশকিলে পড়েছেন । কারণ তাঁদের সেই পরিভাষা নতুন করে শিখতে হচ্ছে ।
১৩)কোন ধরনের পাঠকের পাশ্চাত্য পাঠকের তুলনায় বেশি চেষ্টা প্রয়োজন বলে লেখক মনে করেছেন ?
উত্তরঃ দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠক অর্থাৎ ইংরেজি জানা ও ইংরেজি ভাষায় বিজ্ঞান পাঠের অভিজ্ঞতা আছে যাদের , তাদের পাশ্চাত্য পাঠকদের তুলনায় বেশি চেষ্টা করতে হবে ।
১৪)’পারিভাষিক শব্দ ‘ বলতে কী বোঝ ?
উত্তরঃ ‘ পারিভাষিক শব্দে ‘ – র অর্থ হল পরিভাষা – সম্বন্ধীয় । পরিভাষা এক ধরনের সংজ্ঞাবিশেষ , যার কোনোরকম অর্থান্তর ঘটে না । ইংরেজিতে একে ‘ Glossary ‘ বা Technical term ‘ বলে ।
১৫)‘ অনেক বৎসর পূর্বে … অনেক বছর আগের কোন্ প্রসঙ্গ এখানে উত্থাপন করা হয়েছে ?
উত্তরঃ অনেক বছর আগে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তি বিভিন্ন বিষয়ের পরিভাষা রচনা করেছিলেন । এখানে সেই প্রসঙ্গের কথা বলা হয়েছে ।
১৬)বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের ত্রুটি কী ছিল ?
উত্তরঃ বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সঙ্গে যুক্ত বিদ্বান ব্যক্তিবর্গ পরিভাষা রচনায় উদ্যোগী হলেও তাঁরা একসঙ্গে কাজ না করে পৃথকভাবে কাজ করেছিলেন ।
১৭)কবে , কাদের পৃষ্ঠপোষকতায় দ্বিতীয়বার পরিভাষা সমিতি নিযুক্ত হয়েছিল ?
উত্তরঃ ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বিভিন্ন বিষয়ের দিপালদের নিয়ে যে – পরিভাষা সমিতি গঠন করা হয়েছিল , তাকেই দ্বিতীয় বারের পরিভাষা সমিতির নিযুক্তিকরণ বলা হয় ।
১৮)কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিভাষা সমিতিতে কারা ছিলেন ?
উত্তরঃ ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে নিযুক্ত পরিভাষা সমিতিতে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিজ্ঞানের অধ্যাপক , ভাষাতত্ত্ববিদ , সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত এবং কয়েকজন লেখককে নিযুক্ত করা হয়েছিল ।
১৯)কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিভাষা সংকলনটি কতখানি সাফল্যমণ্ডিত হয়েছিল ?
উত্তরঃ কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিভাষা সংকলনটি লেখক রাজশেখর বসুর মতে খুব বড়ো নয় । এতে আরও শব্দের প্রয়োজন আছে এবং তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন ।
২০)লেখক রাজশেখর বসু প্রয়োজন মতো বাংলা শব্দ পাওয়া না গেলে কী করা উচিত বলে জানিয়েছেন ?
উত্তরঃ রাজশেখর বসু জানিয়েছেন যে , প্রয়োজন মতো বাংলা শব্দ না – পাওয়া গেলে বৈজ্ঞানিক রচনায় ইংরেজি শব্দই বাংলা বানানে চালানো যেতে পারে ।
২১)’কোনও বৈজ্ঞানিক সম্পর্ক বোঝা কঠিন / – এ কথা বলার কারণ কী ?
উত্তরঃ রাজশেখর বসুর মতে পাশ্চাত্য দেশের তুলনায় ভারতবর্ষের সাধারণ মানুষের প্রাথমিক বিজ্ঞানের সঙ্গে যথেষ্ট পরিচয় না থাকায় বৈজ্ঞানিক সম্পর্ক বোঝা কঠিন ।
২২)তখন বৈজ্ঞানিক সাহিত্য রচনা সুসাধ্য হবে । কখন সুসাধ্য হবে বলে লেখকের ধারণা ?
উত্তরঃ ভারতবর্ষের সাধারণ মানুষের প্রাথমিক বিজ্ঞান সম্বন্ধে ধারণা অত্যন্ত কম । এই দেশে বিজ্ঞানশিক্ষা বিস্তৃত হলে বৈজ্ঞানিক সাহিত্য রচনা সুসাধ্য হবে বলে লেখকের মত ।
২৩)বিজ্ঞান আলোচনার রচনাপদ্ধতির মূল ত্রুটি কী ?
উত্তরঃ বিজ্ঞান আলোচনার রচনাপদ্ধতি এখনও বহু লেখকের আয়ত্তের বাইরে । অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের ভাষার আড়ষ্টতা ও ইংরেজির আক্ষরিক অনুবাদ রচনাকে দুর্বহ করে তোলে ।
২৪)‘ কিন্তু তাও কেউ কেউ লিখে থাকেন । —কী লেখার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ ইংরেজি থেকে আক্ষরিক অনুবাদের ত্রুটির কথা বলতে গিয়ে লেখক ‘ Sensitized Paper’- এর বাংলা অনুবাদের কথা বলেছেন । এই শব্দটির অনুবাদ স্পর্শকাতর কাগজ ‘ করলেও , হওয়া উচিত ‘ সুগ্ৰাহী কাগজ ‘ ।
২৫)’এতে রচনা উৎকট হয়” । — কী করলে রচনা উৎকট হয় ?
উত্তরঃ রাজশেখর বসুর মতানুসারে , অনেক লেখক তাঁদের বক্তবা ইংরেজিতে ভাবেন এবং যথার্থ বাংলা অনুবাদে তা প্রকাশ করার চেষ্টা করেন । এতে রচনা সাবলীলতা হারায় ।
২৬)এতে রচনা উৎকট হয় ।— ‘ উৎকট ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
উত্তরঃ আলোচ্য উদ্ধৃতিটিতে ভাষার আড়ষ্টতা ও দুর্বোধ্যতা বোঝাতে ‘ উৎকট ’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ।
২৭)’এ রকম বর্ণনা বাংলা ভাষায় প্রকৃতিবিরুদ্ধ । -প্রকৃতিবিরুদ্ধ বলার কারণ কী ?
উত্তরঃ ইংরেজি থেকে বাংলা ভাষায় হুবহু অনুবাদ অর্থাৎ আক্ষরিক অনুবাদ সম্পর্কে বিতৃয়া প্রকাশ করতে গিয়ে লেখক বলেছেন যে , এটি বাংলা ভাষার প্রকৃতিবিরুদ্ধ ।
২৮).” বাংলা ভাষা বজায় থাকে । — এ কথা বলার অর্থ কী ?
উত্তরঃ আলোচ্য উদ্ধৃতির অর্থ হল ইংরেজি থেকে বাংলা আক্ষরিক অনুবাদের পরিবর্তে ভাবানুবাদ বাংলা ভাষার স্বকীয়তা ও সাবলীলতা বজায় রাখে ।
‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান’ প্রবন্ধের বড়ো প্রশ্ন-উত্তর -LAQ- ৫ নম্বরের
১)‘ তাতে পাঠকের অসুবিধে হয় । — কীসে পাঠকের অসুবিধা হয় ? অসুবিধা দূর করার জন্য কী কী করা প্রয়োজন ?
উত্তরঃ প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসুর মতে , বাংলায় বৈজ্ঞানিক সাহিত্য রচনায় পরিভাষার ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ । যথার্থ পরিভাষা ভাষাকে সর্বাঙ্গসুন্দর করে । পরিভাষা ছাড়া কোনো রচনায় বিষয়ের পাঠকের অসুবিধা বর্ণনায় বারবার একই কথা লিখে আলোচনা দীর্ঘায়িত করতে হয় । অবান্তর বর্ণনা পাঠকমনে অসুবিধা ও বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে ।
অনেক লেখকের মতে , পারিভাষিক শব্দ কম ব্যবহার করে বা সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে রচনাকে সহজতর করা যায় । কিন্তু ব্যাপারটা তা নয় , পরিভাষা বর্জন কোনো কোনো ক্ষেত্রে সম্ভব হলেও সর্বত্র তা অনুচিত । কারণ , ‘ অমেরুদণ্ডী ’ বোঝাতে ‘ যেসব জন্তুর শিরদাঁড়া নেই ‘ লেখা গেলেও ‘ আলোকতরঙ্গ ‘ বোঝাতে ‘ আলোর কাঁপন বা নাচন ‘ লিখলে ব্যাপারটা কিছুমাত্র সহজ হয় না । তাই যথার্থ পরিভাষার ব্যবহারেই পাঠকের অসুবিধা দূর করা সম্ভব । পরিভাষা লেখার ভাষাকে যেমন সংক্ষিপ্ত করে , তেমনই অর্থকে সুনির্দিষ্ট করে । সুতরাং পরিভাষা সম্পূর্ণ বর্জনের পরিবর্তে , বৈজ্ঞানিক রচনাগুলিতে স্বল্প পরিচিত বা অপরিচিত পরিভাষার সঙ্গে তার ব্যাখ্যা ও ইংরেজি নাম দেওয়া চলতে পারে । পরবর্তীকালে বিষয়টি পরিচিত হয়ে যাওয়ার পর শুধু বাংলা পরিভাষাটি দিলেই কাজ চলবে ।
২) বিজ্ঞান – বিষয়ক বাংলা গ্রন্থের পাঠকদের যে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় , তাদের পরিচয় দাও ।
উত্তরঃ ‘ বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান ‘ প্রবন্ধের লেখক রাজশেখর বসু ইংরেজি জানেন না , অথবা অতিঅল্প জানেন বিজ্ঞান – বিষয়ক বাংলা গ্রন্থের পাঠকদের দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত করেছেন । প্রথম শ্রেণিভুক্ত পাঠকেরা হয় ইংরেজি জানেন না , অথবা অতিঅল্প ইংরেজি জানেন । এই দলে পড়েন অল্পবয়স্ক ছেলেমেয়েরা এবং অল্পশিক্ষিত বয়স্ক , লোকেরা । এঁদের বিজ্ঞানের সঙ্গে পূর্বপরিচয় থাকে না । কিছু ইংরেজি পারিভাষিক শব্দ তাঁরা জানেন , যেমন টাইফয়েড , মোটর , জেব্রা , আয়োডিন ইত্যাদি । অনেক স্থূল তথ্যও তাঁদের জানা থাকতে পারে । যেমন , জল আর কর্পূর উবে যায় , পিতলের চেয়ে অ্যালুমিনিয়াম হালকা ইত্যাদি । কিন্তু সুসংগঠিত বৈজ্ঞানিক জ্ঞান তাঁদের নেই । ইংরেজি ভাষার প্রভাবমুক্ত হওয়ায় এদের পক্ষে বাংলায় বিজ্ঞান পাঠ সহজতর হয় । দ্বিতীয় শ্রেণিভুক্ত পাঠক হলেন যাঁরা ইংরেজি জানেন এবং ইংরেজিতে কমবেশি বিজ্ঞানপাঠ করেছেন । এই ধরনের পাঠকের পক্ষে বাংলায় লেখা বিজ্ঞান পড়া ও আয়ত্ত করা একটু কঠিন ও সময়সাপেক্ষ । কারণ বাংলা ভাষায় লেখা বিজ্ঞান রচনা পড়ার সময় তাঁকে ইংরেজির প্রতি পক্ষপাতিত্ব বর্জন করে মাতৃভাষার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করতে হবে ।
৩)এর মানে বুঝতে বাধা হয়নি / —কীসের মানে বুঝতে বাধা হয়নি । বাধা হওয়ার সম্ভাব্য কারণ কী হতে পারে ? মানে বুঝতে বাধা হয়নি । ৩+২=৫
উত্তরঃ প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসু ছোটোবেলা থেকে বাংলায় লেখাপড়া করার কারণে ইংরেজির প্রভাবমুক্ত ছিলেন । লেখককে ছেলেবেলায় ব্রক্ষ্মমোহন মল্লিকের বাংলা জ্যামিতি পড়তে হয়েছিল । সেখানে নানান দুর্বোধ্য প্রতিজ্ঞাবাক্যের উল্লেখ ছিল , যেমন : ‘ এক নির্দিষ্ট সীমাবিশিষ্ট সরলরেখার ওপর এক সমবাহু ত্রিভুজ অঙ্কিত করিতে হইবে । ‘ এই জাতীয় দুর্বোধ্য প্রতিজ্ঞাবাক্য লেখকের বুঝতে অসুবিধা হয়নি , কারণ তাঁর মধ্যে ভাষাগত বিরোধী সংস্কার ছিল না । বাধা হওয়ার সম্ভাব্য কারণ পাঠকের কাছে পাঠ্য বিষয়বস্তুর অর্থ বুঝতে তখনই অসুবিধা হয় , যদি পাঠ্য বিষয়ের ভাষা পাঠকের স্পষ্টভাবে বোধগম্য না – হয় ।
যারা ছোটোবেলা থেকে ইংরেজি ভাষায় পঠনপাঠনে অভ্যস্ত , তাদের পক্ষে বাংলা ভাষায় রচিত বিজ্ঞান বিষয়ক সাহিত্যপাঠ একটু সমস্যাজনক হতে পারে । কারণ সেই সমস্ত পাঠকদের মস্তিষ্কের ভাষাগত বিরোধ তাদের অর্থ বোঝার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় । ভাষা একটি অভ্যাসের বিষয়বস্তু । এ বিষয়ে প্রাবন্ধিকের একটি উক্তি উদ্ধৃত করা যেতে পারে । উক্তিটি হল , ‘ যে লোক আজন্ম ইজার পরেছে তার পক্ষে হঠাৎ ধুতি পরা অভ্যাস করা একটু শক্ত ।
৪)“ যে লোক আজন্ম ইজার পরেছে তার পক্ষে হঠাৎ ধুতি পরা অভ্যাস করা একটু শক্ত ।— ‘ ইজার ’ ও ‘ ধুতি ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? অভ্যাস করা একটু শক্ত বলার কারণ কী ? ২+৩=৫
উত্তরঃ লেখক রাজশেখর বসু তাঁর ‘ বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান ‘ প্রবন্ধে ‘ ইজার ’ ও ‘ ধুতি ’ শব্দদুটি রূপকার্থে ব্যবহার করেছেন । ‘ ইজার ‘ হল পাজামা বা প্যান্ট যা বিদেশি বিশেষ করে ইংরেজদের পোশাক । সেই অনুষঙ্গ ধরেই লেখক ইজারের রূপকে ইংরেজি ভাষাকে ইজার ও ধুতি বুঝিয়েছেন । একইভাবে বাঙালি পোশাক ধুতির অনুষঙ্গে বাংলা ভাষাকে বুঝিয়েছেন । যারা ছোটোবেলা থেকে ইংরেজি ভাষায় পঠনপাঠনে অভ্যস্ত তাদের বাংলায় বিজ্ঞান পাঠ যে কঠিন তা বোঝানোর জন্য উপমাটি ব্যবহার করা হয়েছে ।
ভাষা যদি বোধগম্য না হয় তবে বিষয়বস্তুর অর্থ স্পষ্ট হয় না । ছোট্ট থেকে ইংরেজি ভাষায় পঠনপাঠনে অভ্যস্ত এমন মানুষদের পক্ষে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানভিত্তিক সাহিত্যপাঠ একটু সমস্যাজনক হতে পারে । কেন – ন এদের মস্তিষ্কের ভাষাগত বিরোধ পারিভাষিক অর্থ কারণ বোঝার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় । কারণ তাঁরা কোনো একটি বিষয়ে ইংরেজি পরিভাষার সঙ্গে পরিচিত , বাংলা ভাষায় সেসব বিষয়ের পরিভাষার সাঙ্গে অভ্যস্ত হতে তাঁদের একটা মানসিক বিরোধ উপস্থিত হয় । এই বিরোধকে কটাক্ষ করেই প্রাবন্ধিকের উপরোক্ত উক্তিটি ।
৫) ‘ বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান ‘ রচনায় প্রাবন্ধিক বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে যেসব অসুবিধার কথা বলেছেন তা আলোচনা করো । [ ৫]
উত্তরঃ বাংলায় বিজ্ঞানচর্চার পথে সম্ভাব্য বাধা সম্পর্কে রাজশেখর বসু তাঁর ‘ বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান ‘ প্রবন্ধে আলোচনা করেছেন । বাধাগুলি হল-
প্রথমত : ইংরেজি জানেন এবং ইংরেজিতে বিজ্ঞান পাঠ করেছেন এমন পাঠকের বাংলায় বিজ্ঞানচর্চা বেশ কঠিন ।
দ্বিতীয়ত : বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ ও কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও উপযুক্ত পারিভাষিক শব্দের অভাব এ পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
তৃতীয়ত : পাশ্চাত্য দেশগুলির তুলনায় আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের বিজ্ঞানবোধ খুবই কম । সামান্য বিজ্ঞানবোধ না থাকলে বিজ্ঞানভিত্তিক রচনা বোধগম্য হয় না । তাই বাংলায় বিজ্ঞান রচনার ক্ষেত্রে সমস্যা থেকে গেছে ।
চতুর্থত : অনেক লেখকের ভাষা আড়ষ্টতা ও ইংরেজির আক্ষরিক অনুবাদ দোষে দুষ্ট হয়ে রচনা তার সাবলীলতা হারায় ।
পঞ্চমত : অনেকে পারিভাষিক শব্দ বাদ দিয়ে রচনাকে সহজবোধ্য করার ভাবনা ভাবলেও তা বাস্তবতা পায়নি ।
ষষ্ঠত : উপমা ও রূপক ছাড়া অন্যান্য অলংকার বিজ্ঞানভিত্তিক রচনার গুরুত্বকে লঘু করে দেখায় ।
সপ্তমত : শেষ বাধাটি হল ভুল তথ্য পরিবেশন । অনেকে না – জেনে কিংবা সামান্য জেনে বাংলায় বিজ্ঞান রচনায় ভুল তথ্য পরিবেশন করেন । প্রাবন্ধিকের মতে , আলোচিত বাধাগুলি অতিক্রম না করতে পারলে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চা ত্রুটিহীন হওয়া সম্ভব নয় ।
৬)‘তাঁদের উদ্যোগের এই ত্রুটি ছিল যে”-কাদের ,কোন উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে? উক্ত ত্রুটির বিষয়টি পরিস্ফুট করো। ২+৩=৫
উত্তরঃ বহু বছর আগে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন বিদ্যোৎসাহী পণ্ডিত – লেখক বিভিন্ন বিষয়ের বাংলা পরিভাষা রচনা করেছিলেন । এঁদের উদ্যোগটি প্রশংসনীয় হওয়া সত্ত্বেও কাজটি ছিল ত্রুটিপূর্ণ । প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসু ‘ বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান ‘ প্রবন্ধে সেই প্রসঙ্গে আলোচনাকালে এরূপ মন্তব্য করেছেন । জুটির বিষয় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের পণ্ডিতবর্গ নানা বিষয়ে পরিভাষা রচনা করলেও তার মধ্যে ত্রুটি ছিল । এর একটা বড়ো কারণ ছিল এই যে , তাঁরা একসঙ্গে কাজ না – করে পৃথকভাবে কাজ করেছিলেন । ফলে সংকলিত পরিভাষার মধ্যে সমতা আসেনি , একই ইংরেজি সংজ্ঞার বিভিন্ন ধরনের প্রতিশব্দ রচিত হয়েছে । এই বিষয়টি পাঠকদের মধ্যে সংশয় সৃষ্টি করতে পারে । কারণ , একই বিষয়ে একটিই সর্বসম্মত ও গ্রহণযোগ্য পরিভাষা নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি । এই পণ্ডিতবর্গ একত্রে কাজ করলে পরিভাষা রচনার কাজটি আরও সুসংহত ও সুচারু হতে পারত ।
৭)কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিভাষা সমিতির সদস্য কারা ছিলেন । এঁদের প্রচেষ্টা সফল হয়েছিল কিনা , তা বুঝিয়ে দাও । ২+৩=৫
উত্তরঃ রাজশেখর বসু রচিত ‘ বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান ‘ নামক প্রবন্ধ থেকে জানা যায় , ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিভাষা রচনার উদ্দেশ্যে একটি সমিতি গঠিত হয়েছিল । এই সমিতির যাঁরা সদস্য ছিলেন , তাঁরা হলেন বিভিন্ন বিজ্ঞানের অধ্যাপক , ভাষাতত্ত্ববিদ , সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত এবং কয়েকজন লেখক । প্রচেষ্টার পরিণতি : কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে বিজ্ঞানের অধ্যাপক , ভাষাতত্ত্ববিদ , সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত ও লেখকদের নিয়ে যে পরিভাষা রচনা সমিতি গঠিত হয়েছিল , তাদের কাজ ইতিপূর্বে গঠিত বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের পরিভাষা সমিতির তুলনায় অনেক সুসংহত ও সফল হয়েছিল । কারণ , তাঁরা একযোগে কাজ করেছিলেন । পৃথকভাবে কাজ করার মধ্যে যে – বিচ্ছিন্নতা রয়েছে , তা কাজের সংহতিকে বিঘ্নিত করে । এঁদের ক্ষেত্রে সেই বিচ্ছিন্নতা অনুপস্থিত থাকায় তাঁদের সংকলনে সমতা এসেছে । তাতে পাঠকের পক্ষে অর্থ বোঝা সহজ হয়েছে । কিন্তু কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় – কৃত সংকলন খুব বড়ো নয় বলে আরও শব্দের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধ হয় । তাই প্রাবন্ধিক পারিভাষিক নির্মাণের দিকে জোর দিয়েছেন ।
৮)‘এ দেশে বিজ্ঞান শিক্ষার বিস্তার হলে এই অসুবিধা দূর হবে’-কোন্ অসুবিধার কথা বলা হয়েছে আলোচনা করে বুঝিয়ে দাও।[৫]
উত্তরঃ প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসু তাঁর ‘ বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান ‘ নামক প্রবন্ধে স্বল্প পরিসরে পাশ্চাত্য দেশগুলির সঙ্গে ভারতবর্ষের বিজ্ঞানশিক্ষার তুলনামূলক আলোচনা করেছেন । তিনি দেখেছেন যে , পাশ্চাত্য দেশগুলির তুলনায় ভারতবর্ষের সাধারণ মানুষের বিজ্ঞান বিষয়ক জ্ঞান সীমিত । বিজ্ঞান সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান না থাকলে কোনো উচ্চমানের বৈজ্ঞানিক রচনা বোঝা এক অর্থে অসম্ভব । পাশ্চাত্য দেশগুলিতে পপুলার সায়েন্স বা সাধারণের জন্য বিজ্ঞান রচনা সহজসাধ্য , কারণ তা বোঝার মতো প্রাথমিক জ্ঞান সাধারণ মানুষের আছে । কিন্তু ভারতবর্ষের পরিস্থিতি আলাদা । বয়স্কদের জন্য রচিত বিজ্ঞানভিত্তিক সাহিত্যও গোড়া থেকে না লিখলে বোধগম্য হয় না । তাই সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে যাঁরা বিজ্ঞান লেখেন , এই বিষয়টি তাঁদেরও মনে রাখা দরকার । পরবর্তীকালে ভারতবর্ষে বিজ্ঞানশিক্ষা বিস্তারলাভ করলে এই সমস্যা দূর হবে বলে প্রাবন্ধিক মতামত প্রকাশ করেছেন ।
৯)‘ এই দোষ থেকে মুক্ত না হলে বাংলা বৈজ্ঞানিক সাহিত্য সুপ্রতিষ্ঠিত হবে না ।— ‘ এই দোষ ‘ বলতে কোন দোষের কথা বলা হয়েছে ? লেখক এই দোষের যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন , তা আলোচনা করো । ২+৩=৫
উত্তরঃ প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসুর মতে , বাংলায় বৈজ্ঞানিক সাহিত্য লেখার জন্য যে – রীতি অবলম্বন করা উচিত তা বহু লেখকই রপ্ত করতে পারেননি । তাদের ভাষা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আড়ষ্টতা ‘ এই দোষ – এর পরিচয় এবং ইংরেজির আক্ষরিক অনুবাদের দোষে দুষ্ট । প্রশ্নে সে – দোষের কথাই উল্লেখ করা হয়েছে ।
বৈজ্ঞানিক সাহিত্য লেখার ক্ষেত্রে বহু লেখক ইংরেজি শব্দের অর্থব্যাপ্তি বা ‘ Connotation ‘ বাংলা প্রতিশব্দে হুবহু আনতে চান । এমনটি করতে গিয়ে তারা অদ্ভুত কিছু শব্দের প্রয়োগ করেন । যেমন , ইংরেজি ‘ sensitive ‘ শব্দটির বহু ইংরেজি অর্থ আছে । যেমন , sensitive person , balance ইত্যাদি । আবার এগুলির বাংলা অর্থ হতে পারে ব্যথাপ্রবণ , সুগ্রাহী ইত্যাদি । কিন্তু ‘ sensitized paper’- এর বাংলা অনুবাদ কেউ যদি ‘ স্পর্শকাতর কাগজ ’ বলে তবে তা শুনতে অদ্ভুত লাগবে । বরং ‘ সুগ্রাহী কাগজ ‘ লিখলে বিষয়টি স্পষ্ট হয় । ইংরেজি বাক্যের আক্ষরিক অনুবাদও শ্রুতিকটু হয় । যেমন , The atomic engine has not even reached the blue print stage’- এর আক্ষরিক অনুবাদ ‘ পরমাণু ইঞ্জিন নীলচিত্রের অবস্থাতেও পৌঁছোয়নি ‘ । এটি একটি উৎকট অনুবাদ । তবে অংশটির ভাবানুবাদ ( ‘ পরমাণু ইঞ্জিনের নকশা পর্যন্ত এখনও প্রস্তুত হয়নি ‘ ) অনেকাংশেই শ্রুতিমধুর । এ থেকে স্পষ্ট যে , লেখক সহজ – সাবলীল অনুবাদের মাধ্যমে ভাষার আড়ষ্টতা ও আক্ষরিক অনুবাদের দোষ – ত্রুটি থেকে মুক্ত হতে চেয়েছেন ।
১০) ‘ এই ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয় । কোন ধারণা ? লেখক কীভাবে প্রমাণ করেছেন যে , এই ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয় ? [৫]
উত্তরঃ অনেকে মনে করেন যে , বাংলা ভাষায় বৈজ্ঞানিক সাহিত্য লেখার সময় পারিভাষিক শব্দ বাদ দিয়ে বক্তব্য প্রকাশ করলে রচনা সহজ ধারণা হয় । লেখকের মতে , এই ধারণা বিভ্রান্তিকর ।
প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসু মনে করেন যে , কোথাও কোথাও পারিভাষিক শব্দ বাদ দিয়ে কাজ চললেও সর্বত্র তা সম্ভব নয় । যেমন , ‘ অমেরুদণ্ডী ‘ বোঝাতে লেখা যেতে পারে যেসব জন্তুর শিরদাঁড়া নেই । কিন্তু ‘ আলোকতরঙ্গ ’ – এর পরিবর্তে আলোর লেখকের প্রমাণ ধারণা পুরোপুরি ঠিক কাপন বা নাচন লেখা কখনোই বিজ্ঞানসম্মত নয় । এক্ষেত্রে কোনো বিষয় সম্পর্কে ভুল ধারণার সৃষ্টি হতে পারে । একইসঙ্গে বারবার কোনো বিষয়ের বর্ণনা ভাষার গতি যেমন শ্লথ করে , তেমনই তাকে স্থূল করে তোলে । তাই পরিভাষার ব্যবহার ভাষাকে সংক্ষিপ্ত ও সুনির্দিষ্ট অর্থবিশিষ্ট করে । সাধারণ মানুষের বোঝার জন্য বৈজ্ঞানিক সাহিত্যে প্রথমবার ব্যবহৃত কিংবা কম ব্যবহৃত পরিভাষার অর্থ ও প্রয়োগ দিয়ে দেওয়া উচিত । লেখার পরবর্তী অংশে কেবল পরিভাষাটি দিলেই চলে । এভাবেই প্রাবন্ধিক বিজ্ঞান বিষয়ক প্রবন্ধে যথার্থ পরিভাষা ব্যবহারের পক্ষে সওয়াল করেছেন ।
আরো পড়ুনঃ
অসুখী একজন কবিতার বড় প্রশ্ন-উত্তর -এর জন্য এখানে CLICK করুন।
মাধ্যমিক বাংলা ” আফ্রিকা ” কবিতার প্রশ্ন উত্তরের জন্য এখানে CLICK করুন।
মাধ্যমিক বাংলা ” অভিষেক ” কবিতার প্রশ্ন উত্তরের জন্য এখানে CLICK করুন।
মাধ্যমিক বাংলা ”প্রলয় উল্লাস ” কবিতার প্রশ্ন উত্তরের জন্য এখানে CLICK করুন।
মাধ্যমিক বাংলা ” সিন্ধুতীরে ” কবিতার প্রশ্ন উত্তরের জন্য এখানে CLICK করুন।
মাধ্যমিক বাংলা ” অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান ” কবিতার প্রশ্ন উত্তরের জন্য এখানে CLICK করুন।